একটি চিঠি ঃ আমেরিকার সকল নাগরীকই কি বিল গেটস এর মত জীবনযাপন করেন ?

(llbangla.org)

আমরা নিচের চিঠিটি পেয়েছি ঃ  (চিঠির ভাষ্য)

“ আমি লিডিং লাইটের অবস্থানের সাথে একমত নই ।

মার্কসের সময়ে ও এই উপমহাদেশে ব্রিটিশ উপনিবেশ ছিল। এছাড়া ও এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার বহুদেশে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের উপনিবেশ ছিল । কিন্তুু তখন ও প্রথম বিশ্বে যেমন, ব্রিটেন, ফ্রান্সও হল্যান্ড সহ অন্যান্য দেশে শোষণ চলছিল । মার্কস ইউরোপে বসবাসকারী শ্রমিক শ্রণী সহ ও অন্যান্য দেশের মানুষকে সাম্রাজ্যবাদ কর্তৃক  সেই শোষন প্রক্রিয়ার নিন্দাসহ শ্লোগন তুলেছিলেন “দুনিয়ার মজদুর এক হও!”

লেনিনের আমলে ও প্রথম ও তৃতীয় বিশ্ব বর্তমান ছিল । রাশিয়া ছিল অনুন্নত, অথচ অন্যদিকে জার্মানী, ব্রিটেন এবং আমেরিকা ছিল উন্নত পুঁজিবাদী দেশ । তবু ও লেনিন দুনিয়ার সকল শ্রমিক শ্রেণীর একতা চেয়েছিলেন ।

লেনিন ও ট্রটস্কি তৃতীয় কমিউনিষ্ট আর্ন্তজাতিক তথা কওমির্ন্টান গড়েছিলেন । যাতে সারা দুনিয়ার কমরেডগণ অংশগ্রহন করেছিলেন ।

আমরা যদি অগ্রসর দেশ সমূহের শ্রমিক শ্রেণীকে নিন্দাকরি, বিবেচনা করি পুজিঁবাদী ও সাম্রাজ্যবাদীদের মত, তবে তা হবে আমাদের জন্য তত্ত¡গত বিরাট ভূল ।

উন্নত পুঁিজবাদী পশ্চিমা দেশসমূহে বিশাল শ্রেণী বিভক্তি আছে । সেখানে যেমন আছে বিলিনিয়ার অন্যদিকে আছে দরিদ্র জনগৌষ্ঠী । অনেকেই চরম অর্তনৈতিক অবস্থায় জীবন যাপন করছেন ।

এই অবস্থা যেখানে বিরাজমান, যা পশ্চাৎপদ দেশেরে চেয়ে ও খারাপ সেখানে কেউ যদি বলেন যে, আমেরিকা, ব্রিটেন ,ফ্রান্সের মত দেশ সমূহে শ্রেণী বিভক্তি নেই, তবে তা গ্রহন যোগ্যনয় ।

আমেরিকার সকল জনগন কি বিলগেটস, ওয়ারেন বাফেট, অপরাহ উইনফ্রি এদেঁর মত জীবনযাপন করেন?  না । ”

লিডিং লাইটের জবাব ঃ

কতিপয় গুরুত্ব পূর্ণ বিষয় আমদেরে সামনে উত্থাপনের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ  ।  প্রকৃত বিপ্লবী বিজ্ঞানী, লিডিং লাইট কমিউনিষ্টগণ যে কোন প্রকার বির্তককে ভয় পায়না বরং উৎসাহিত করে । ।  প্রকৃত বিপ্লবী বিজ্ঞানী, লিডিং লাইট কমিউনিজম হলো এমন একটি শক্তিশালী অস্র যার মাধ্যমে পৃথিবীর মানব জাতির সকল সমস্যার সমাধান করা সম্ভব । আপনাকে আমরা আরো ধন্যবাদ জানাই এই জন্য যে, আপনি সৎ সাহস নিয়ে একটি বৈজ্ঞানিক কর্মকান্ডে যোগ দিয়েছেন । আমরা যদি সত্যিই বিজয় চাই তবে আমাদেরকে অবশ্যই সকল প্রকার অন্ধ অনুসরণ পরিত্যাগ করতে হবে । শোষক শ্রেণী ও তাদের পালিত বুদ্ধিজীবিরা তাদের শোষনের বিজ্ঞানকে দিনে দিনে শাণিত করছে । শোষক শ্রেণীকে পরাজিত করতে অবশ্যই আমাদের বিপ্লবী বিজ্ঞানকে আরো শক্তিশালী ও বিকশিত করতে হবে । আর এটাই হলো একটা বিরাট অগ্রগতি যে আমরা লিডিং লাইটের বক্তব্যকে জনগণের সামনে হাজির করতে পেরেছি ।

নিম্নে আমরা আমাদের জবাব ধারাবাহিক ভাবে পেশ করছি ঃ

১. এটা ঐতিহাসিক সত্য যে, মার্কস নিজে সাম্রাজ্যবাদের জন্মকাল দেখেছেন । মার্কস সাম্রাজ্যবাদের দুনিয়া জোড়া অপরাধ, বিশেষ করে ভারত ও আইয়্যারল্যান্ডে তাদের নিপিড়নের নিন্দা করেছেন তিব্র ভাবে। তাই মার্কস কমিউনিষ্ট ম্যনুফেষ্টোতে ‘দুনিয়ার মজদুর এক হও !’ শ্লোগান তুলেছেন । মার্কস এইরূপ শ্লোগান তুলেছেন বলেই এটা সত্য তা কিন্তু নয় ।  মার্কস,লেনিন ও মাও কোন পরিশোদ্ধ দেবতা বা যিশু নন । আর মার্কসবাদ কোন ধর্ম ও নয় । সত্যিকার মার্কবাদ বলতে কেবল মাত্র মার্কস যা যা বলেছেন তাকেই বুঝায় না । আজকের, লিডিং লাইট কমিউনিজম হলো একটি প্রাগ্রসর বিপ্লবী বিজ্ঞান, প্রকৃত মার্কসবাদ প্রয়োগ করে দুনিয়ার সকল মানুষের উপর থেকে সর্বপ্রকার শোষন নিপিড়ণ বন্ধ করার প্রত্যয়ে  লিডিং লাইট কমিউনিজম কাজ করছে । সত্যিকার মার্কসবাদের আবেদন খৃষ্টান ধর্মের বাইবেলের আবেদনের মত নয় মোটেই । মাকর্স কেবল মাত্র উর্পাজনকারীদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে আবেদন করেছিলেন আজ থেকে প্রায় দেড় শতাব্দী আগে, তবে এই আহবান সর্বাংশে আজ সত্য নয়। এক সময় এরূপ শ্লোগান সত্য হিসাবে পরিগনিত হলে ও এখন তা সত্যি নয় । ইহা কোন ভাববাদী পন্থায় নয় বরং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতীতে মূল্যায়ন করা দরকার ।

ভিন্নরকম এক বিশ্ব পরিস্থিতিতে মার্কস প্রায় দেড় শতাব্দী আগে এরূপ শ্লোগান তুলেছিলেন । মার্কস গভীর ভাবে দৃষ্টি দিয়েছিলেন পশ্চিম ইউরোপ তথা বিশেষ করে শিল্প সমৃদ্ধ ইংল্যান্ডের দিকে । তিনি দেখছিলেন কিভাবে দ্রুত তা শিল্পায়িত হচ্ছে এবং দুটি বিশাল শ্রেণীতে মানুষ ভাগ হয়ে যাচ্ছে ; এর একটি হলো পুজিঁবাদী শ্রেণী অন্যটি হলো মজুরশ্রেণী । পরবর্তীতে মার্কস একেই সেই সময়ের প্রলেটারিয়েট হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন । ম্যনুফেষ্টোতে মার্কস সমগ্র দুনিয়ায় এমনটিই ঘটবে বলে ভবিষ্যৎবানী করেছিলেন । কিন্তু পরবর্তীতে আমরা দেখলাম, বিশ্ব এত সরল প্রক্রিয়ায় নয় বরং আরো অনেক জটিল ভাবে বিকশিত হয়েছে । তাঁর সবচেয়ে বিজ্ঞান সম্মত কর্ম যেমন পুজিঁ গ্রন্থের ভলি: ৩য় খন্ডে লিখেছেন, সকল কর্মকান্ড উৎপাদন পদ্ধতীর সাথে একই রকম ভাবে সর্ম্পকযুক্ত নয় । এমনকি পুজিঁ গ্রন্থের ভলি: ১ম খন্ডে মার্কস বলেছেন,“কিভাবে শিল্প বিপ্লব উচ্চ হারে মজুরী প্রাপ্ত, অভিজাত ও শ্রমিক শ্রেণীকে বিপুলভাবে প্রভাবিত করবে” । এখানে উল্লেখ্য যে, এঙ্গেলস, তার জীবনের শেষ প্রন্তে এসে বলেছিলেন সাম্রাজ্যবাদ কিভাবে শ্রেণী কাঠামোকে প্রভাবিত ও বদলে দিতে পারে যা পরবর্তীতে প্রথম বিশ্ব হিসাবে দেখা দেয় । উদাহরণ, হিসাবে ১৮৫৮ সালের সূচনাতে লেনিন এঙ্গেলসকে উদৃত করেছিলেন এই ভাবে ।“ ব্রিটিশ প্রলেটারিয়েটরা দিনে দিনে বুর্জোয়া হয়ে উঠছেন, তাই এ ধরনের বুর্জোয়া জাতিগুলো নিজেদেরকে অভিজাত হিসাবে বিবেচনা করে থাকে, এবং সেই বুর্জোয়া মানসিকতার ধারক প্রলেতারিতেরা ও বুর্জোয়ায় রূপান্তরিত হচ্ছে । জাতি হিসাবে তারা সারা দুনিয়াকে শোষন করছে, আর তারা আইনি ভাবে তাতে নিজেদের কর্মের যুক্তিকতা ও খোঁজে নিয়েছে ”।

সামাজিক সাম্রাঝ্যবাদী ও শোধনবাদী কাঊৎতস্কির যুক্তির বিরুদ্ধে এঙ্গলস বলেছিলেন,

“তুমি আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলে উপনিবেশিক নীতি সর্ম্পকে ব্রিটিশ শ্রমিক শ্রেণী কি ভাবছে? প্রকৃত বিষয় হলো, সেখানকার চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির বাইরে তারা কিছুই ভাবছেনা । সেখানে কোন শ্রমিক দল নেই, সেখানে কেবলমাত্র রয়েছে কনজারভেটিভ ও লিবারেল রেডিক্যালস, এবং শ্রমিক গৌষ্ঠি আনন্দের সাথেই ব্রিটিশ বুর্জোয়াদের সাথে তাদের উপনিবেশ ও বিশ্ববাজার থেকে আহরিত (খাদ্যপণ্যে) ভোগ বিলাসে ভাগ বসিয়েছে ।”

লেনিন ও সাম্রাজ্যবাদের কারণে শ্রেণী কাঠামোতে যে পরিবর্তনের বিষয়টি এই ভাবেই লিখেছিলেন,

“সাম্রাজ্যবাদের একটা বিশেষ কাজই হলো, তাদের সুবিধার জন্য শ্রমিক শ্রেণীর মাঝে একটি সুবিধাভোগী দালাল শ্রেণী তৈরী করা, এবং তাদেরকে আলাদা করে তাদের মাধ্যমেই প্রলেতারিয়েত শ্রেণীর নিকট বিপ্লব সম্পর্কে বিরক্তিকর ও নিরুৎসাহ মূলক র্বাতা প্রদান করা” ।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় চিনের প্রখ্যাত মওবাদী সিপাহসালার লিন বিয়াও বিশ্ব ব্যবস্থার পরিবর্তনের বিষয়টি এভাবেই বর্ণনা করেছিলেন,

“সমগ্র বিশ্বটাকে সামনে রাখলে, উত্তর আমেরিকা ও পশ্চিম ইউরোপকে ‘বিশ্ব শহর’ বলা যায়। অন্যদিকে, এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকাকে নিয়ে গড়ে উঠেছে ‘বিশ্বগ্রাম’ । দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় থেকেই, উত্তর আমেরিকা ও পশ্চিম ইউরোপে প্রলেতারিয়ান বিপ্লবী আন্দোলন নানা কারনে সাময়িক ভাবে  ঝিমিয়ে পড়তে থাকে, অন্যদিকে এশিয়া, আফ্রিকায় এবং ল্যাটিন আমেরিকায় গণমানুষের  বিপ্লবী আন্দোলন ব্যাপক ভাবে এগিয়ে গিয়েছিল । এক অর্থে পরিবর্তিত বিশ্বে বিপ্লব এক ভিন্ন আঙ্গীক ধারণ করে, আর তা হলো গ্রাম দিয়ে শহর ঘিরে ফেলা । চূড়ান্ত বিশ্লেষনে ব্যাপারটা এমন দাঁড়ায় যে বিপ্লবের জন্য এশিয়া , আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার মানুষ বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায় বিপ্লবী লড়াই সংগ্রামে তাদেরকেই অগ্রণী হতে হবে ”।

অতীতের মহান মার্ক্সিষ্ট গন নানা সময়ে সময় উপযোগী বহু রকম বক্তব্যই রেখেছেন ।  তাঁরা ঊল্লেখ করেছিলেন সাম্রাজ্যবাদী প্রবনতা কিভাবে শ্রমিকদেরকে বুর্জোয়া মানসিকতায় রূপাান্তরিত করে দেয় । কোন কোন বিষয়ে তাঁদের নানা প্রকার বক্তব্য পরস্পর বিরোধী হিসাবে ও দেখা গেছে । অন্যান্য লিখকগণ ও প্রথমবিশ্বের শ্রেণী চরিত্রের পরিবর্তনের কথা বলেছেন । এ বিষয়ে লিডিং লাইটই প্রথম সংগঠন যা সর্বপ্রথম বিশ্বশ্রেণী চরিত্র বৈজ্ঞানিক পন্থায় বিশ্লেষন করতে এবং তা পূর্ণ ভাবে বুঝতে পেড়েছিল । তবে এটা ও সত্য কে আগে আর কে পরে বুঝেছে তার কোন তালিকা তৈরী করা কোন গুরূত্ব পূর্ণ বিষয় নয় । বরং বাস্তবতা হলো যে, মার্কস,এঙ্গেলস,লেনিন, মাও কে কি বলেছেন সেটা খুব গুরুত্ব পূর্ণ বিষয় নয় কিন্তু এটা বুঝা খুবই গুরুত্ব পূর্ণ বিষয় হলো মার্কস,এঙ্গেলস,লেনিন, মাও যে সময়ে লিখেছিলেন তখনও প্রথম বিশ্ব নিজেকে পূর্ণাঙ্গ ভাবে প্রথম বিশ্ব হিসাবে তৈরী করে নিতে পারেনি। তাঁদের সময়কার প্রতিটি গুরুত্ব পূর্ন প্রভাব তাদের কর্মকান্ডে ও কর্মকান্ডে  প্রতিফলিত হয়েছে। আজকের প্রথম বিশ্বে বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উল্লেখ যোগ্যভাবে প্রলেটারিয়েতের অনুপস্থিতি দেখা যাচ্ছে । সাম্রাজ্যবাদী, প্রায় সাম্রাজ্যবাদী, ও উদিয়মান সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোতে ১৯১৭ সালের রাশিয়ার মত আজও প্রলেতারিয়েত শ্রেণী বিরাজমান। মার্কসের সময়ে সেই শ্লোগান হয়তবা সঠিকই ছিল যেমন“দুনিয়ার মজদুর এক হও” । এমনকি সাম্রাজ্যবাদী দেশে ও । তাবে, আজ তা অচল । এটা প্রথম বিশ্বের জন্য কোন ভাবেই প্রয়োগযোগ্য নয় ।

২. মাকর্স যখন প্রলেতারিয়েত সর্ম্পকে বর্ণনা করছিলেন, তিনি তাদেরকে আধুনিক বিপ্লবের প্রতিনিধি হিসাবে দেখেছিলেন, তিনি তাঁর সময়কার উদিয়মান শিল্প শ্রমিকদের সর্ম্পকে বর্ণনা কেেছন। মাকর্স প্রলেতারিয়েত সম্পর্কে বলেছেন, তারা হলো প্রতিদিন কার উৎপাদক শ্রেণী, তারা কেবল মাত্র বেচেঁ থাকার মত মজুরী পেয়ে থাকে, জমাবার সুযোগ নেই । তিনি বলেছেন প্রলেতারিয়েতের শ্রম বিক্রি করা ছাড়া  ভিন্ন কোন আয়ের পথ নেই। মাকর্স তাদেরকে উৎপাদক ও শোষিত শ্রেণী হিসাবে উল্লেখ করেছেন । তারা মানবেতর পরিবেশে শ্রম বিক্রি করে থাকেন, তাই তাদের “শৃংখল মুক্তি ছাড়া হারাবার আর কিছুই নেই ।” মার্কসের বর্ণনানুসারে, প্রলেতারিয়েতগণই হলেন বিপ্লবী শ্রেণী । আমরা যদি হুবহু মাকর্সের বর্ণনা গ্রহন করি তবে আধুনিক সামাজিক ভিত্তিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষ করে প্রথম বিশ্বের সাথে এর মিল খোঁজে পাওয়া যাবেনা । বর্তমানে আমেরিকার শ্রমিকগণ এখন আর উৎপাদন করেন না । তাদের বেশীর ভাগই এখন ব্যবস্থাপনা, সেবা, এবং বন্ঠন প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিনিয়ত তারা তাদের উৎপাদন প্রক্রিয়া কমিয়ে আনছে এবং বেশ লম্বা সময় ধরেই তা চলছে । তাদের অর্থনীতিকে দেশের বাইরে উৎপাদিত পণ্যের মুনাফাই ব্যাপক হারে সমৃদ্ধ করছে। কেবল মাত্র গতানুগতিক বুর্জোয়রাই পরগাছা নয় বরং  শ্রমিক বুর্জোয়ারা ও তাদের শ্রম বিক্রি না করেই  তৃতীয় বিশ্বকে শোষন করে নিজেদের আয় রোজগারকে দিনে দিনে বিশাল করছে । অনেকেই ব্যাংক সুদ, সমাজিক নিরাপত্তা ভাতা, স্টক মাকের্ট থেকে আয়, অবসর ভাতা এবং নিজেদের ছোট খাট ব্যবসা বাণিজ্য থেকে ও বিপূল আয় করে থাকে । তারা এখন আর মাকর্সের বর্ণিত সাধারণ প্রলেতারিয়েত নেই । তৃতীয়তঃ তারা এখন আর আগের মত অন্য কারো দ্বারা উল্লেখ যোগ্য ভাবে শোষিত ও হচ্ছে না । বর্তমানে তারা যে পরিমান আয় করে, তা সমাজতান্ত্রিক সম আয়ের চেয়ে গড়ে অনেক বেশী । তাদের জীবন যাত্রা ও ভোগের মাত্রা কোনভাবেই ঠেকসই নয় । বস্তুগত ভাবে বিচেনা করলে তারা মূলত সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার বাইরে। চতুর্থতঃ তারা বর্তমানে যে অবস্থায় আছে তা মার্কসের বর্ণিত মানবেতর পরিস্থিতিতে শ্রম বিক্রি করছেনা । তারা সাধারণত খুবই আরামদায়ক পরিবেশে কাজ করে থাকেন। তারা ছুটির সময় পান । তাদের সাধারন জীবন যাত্রা ও জীবন মান তাদের মালিকদের প্রায় কাছা কাছি এবং তৃতীয় বিশ্বের মানুষের গড় জীবন মান থেকে অনেক উন্নত । পঞ্চমতঃ তাদের শৃংখল মুক্তি থেকে তারা এখন অনেক দূরে । ৬ষ্ঠতঃ সামগ্রীক ইতিহাস পর্যালোচনা করলে বুঝা যায় যে, প্রথম বিশ্বের শ্রমিক শ্রেণী তৃতীয় বিশ্বের প্রলেতারিয়েতের উপড় চেঁেপ বসেছে । প্রথম বিশ্বের শ্রমিক শ্রেণী এখন আর বিপ্লবী শক্তি নয় ।

৩. আপনি জিজ্ঞাসা করেছেন আমেরিকার প্রতিটি নাগরিক কি বিল গেটস এর মত জীবন যাপন করছে? আপনিকি বুঝাতে চেয়েছেন যিনি এক বিলয়ন ডলার (৮৩,২৭২,৮০০,০০০ টাকা ) আয় করেন আর যিনি এক মিলিয়ন ডলার (৮৩,২৭২,৮০০ টাকা) আয় করেন তাদের জীবন যাত্রা কি এক রকম হবে? আবার, যিনি এক বছরে এক মিলিয়ন ডলার (৮৩,২৭২,৮০০ টাকা ) আয় করেন আর যিনি ৬০,০০০ ডলার (৪,৯১০,০০০ টাকা) আয় করেন তাদের জীবন যাত্র ও কি এক রকম ? অবশ্যই নয় । এ সংক্রান্ত একটি বুঝা পড়া শোষক শ্রেণীর (শোষিত) মাঝে সর্বত্রই চলছে । ইহা প্রথম বিশ্বে সর্ববৈ সত্য । একজন বিলিয়নিয়ার সকল সময়ই একজন মিলিয়নিয়ারের তুলনায় বেশী সামাজিক উদ্বৃত্ত মূল্য অর্জন করে থাকে । এর অর্থ এই নয় যে, একজন মিলিয়নিয়ার শোষিত হয়েছেন । একজন মিলিয়নিয়ার তুলনা মূলক ভাবে বেশী সামাজিক উদ্বৃত্ত মূল্য অর্জন করে থাকেন যিনি বছরে মাত্র ১০০,০০০ (৮৩,৩২৭,২৮০ টাকা ) ডলার অর্জন করেন । এর অর্থ ও এই নয় যে, যিনি বছরে মাত্র ১০০,০০০ (৮৩,৩২৭,২৮০ টাকা ) ডলার অর্জন করেছেন তিনি শোষিত হয়েছেন । আবার , যিনি বছরে মাত্র ৩০,০০০ (২,৪৯৮,০০০টাকা ) ডলার অর্জন করেন । এর অর্থ ও এই নয় যে, তিনি শোষিত হয়েছেন । সাধারণ একজন মাকির্ন নাগরিক শোষিত নয় :

“ সাধারণ একজন মার্কীনির যার বয়স ২৫ বছরের উপরে, তার বাষির্ক আয় হলো ৩২,০০০ ডলার (২,৬৬৫,০০০ টাকা) । অন্যদিকে দুনিয়ার অধিকাংশ মানুষ বছরের মাত্র ১০০০ ডলার অর্থাৎ ৮৩,০০০ টাকার ও কম রোজগার করে জীবন চালায় । উদাহনর হিসাব বলা যায়, এক জন ভারতীয় দৈনিক এক ডলারের ও কম রোজগার করেন, অথচ একজন মার্কিন দেশীয় লোক তার চেয়ে অনেক বেশী আয় করেন । এই উচ্চ আয়ের মাধ্যমে, একজন মার্কিনী বিলাশ বহুল জীবন, সুন্দর গৃহ, গাড়ী, কম্পিউটার, টেলিভিশন, আধুনিক রন্দনশালা, সুইমিংপুল, বির্দ্যাজনের অবাধ সুযোগ, ছুটি কালিন ভ্রমন ইত্যাদী সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকে । একজন মার্কিনী তার শ্রমের মূল্যের তুলনায় অনেক বেশী আয় করে থাকে । একজন মার্কিনীর এই আয়ের পাশাপাশি আরো যে একটি বিশেষ সুবিধা পায় তা হলো, তৃতীয় বিশ্বের এক জন ধনীর চেয়ে ও বেশী পুজিঁ বা ঋৃন সুবিধা পেয়ে থাকে । মোদ্দাকথা হলা, একজন মার্কিনী বর্তমানে যে আয় করে, তা পৃথিবীর সম্পদের সমবন্ঠনে ব্যবস্থায় যা পাবে তার চেয়ে ও অনেক বেশী । অন্য কথায় বলতে হয়, সমাজতন্ত্র একজন মার্কিনীর আয়ের পরিমান অনেকাংশেই কমিয়ে দিবে । সমাজতান্ত্রিক বন্ঠন ও বিশ্ব ব্যবস্থাগত কারণেই একজন মার্কিনীর আয় কমবে ।  সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার আওতায় তার প্রচলিত মার্কিনী জীবনযাত্রা পরিবতির্ত হবে।   মার্কিনীরা সমাজতন্ত্রের চেয়ে সাম্রাজ্যবাদী ধনতন্ত্রের প্রতি অধীকতর আগ্রহী । তারা খুব ভালো করেই জানে যে, তাদের বুর্জোয়া শ্রেণী তৃতীয় বিশ্ব বিরোধী ।

প্রচলিত  একটি ধারনা আছে যে, মার্কিনীরা হলো অভিজাত শ্রমিক । কিন্তু বাস্তবতা হলো অন্যরকম । সাধারনত মার্কিনীরা আয়েসী কর্যক্রমের পদ গুলো ধারণ করে আছে । এই ধরণের কাজ মূলত কোন শারিরীক বা কায়িক নয় ; বরং তৃতীয় বিশ্বে এমন বহু কাজ আছে যে, যাকে জীবন বিনাশী বলে অভিহিত করা যায় ।  তুলনা মূলক ভাবে মার্কিনীদের বেতন ভাতা অনেক উঁচু, আরামদায়ক কাজের পরিবেশ এবং লম্বা ছুটির ব্যবস্থা রয়েছে । তৃতীয় বিশ্বের একজন শ্রমিক কাজ করেন একটি প্রলেটারিয়েত সংস্কৃতিক পরিবেশে, আর অন্যদিকে  প্রথম বিশ্বে মানুষেরা কাজ করে একটি বুর্জোয়া পরিবেশে । ফলে একজন মার্কিনী নিজেকে বিশ্ব প্রলেটারিয়েতের অর্ন্তভূক্ত মনে করে না । মাকর্সের বর্ণণানুসারে ‘তাদের শৃংখল মুক্তি ছাড়া হারাবার আর কিছুই নেই ’ । অথচ এখন এটা একটি সাধারন বিষয় যে, একজন মার্কিনী শ্রমিক নিজেকে অভিজাত শ্রেণী ভুক্ত  ও ধনী মনে করে থাকে”।

আমরা বিষয়টিকে অতি সরলিকরন ও করছিনা । এমনকি যারা গরীব শ্রমিক বলে আমেরিকায় পরিচিত তারা বিশ্বে র্শীষ ১৫% ধনী লোকদের অর্ন্তভুক্ত । প্রথম বিশ্বে সত্যিকার দরিদ্র ও শোষিত বলে যারা পরিচিত তারা হলো, বিশেষ করে গৃহহীন, অভিবাসী ও মাদকাসক্ত ইত্যাদী স¤প্রদায় । তবে তারা সংখ্যায় খুবই কম, বিচ্ছিন্ন এবং ঘন ঘন জায়গা বদলকারী মানুষ । তারা প্রথম বিশ্বে কোন সামাজিক ভিত্তিই তৈরী করতে পরবে না এবং বিপ্লব তো তাদের জন্য সুদূর পরাহত । এই স¤প্রদায়ের লোকেরাও শ্রেণী শত্র“দের দ্বারা পরিবেষ্টিত । অধিকন্ত, প্রথম বিশ্বে শ্রেনীগত সঞ্চালনের কারণে, আনেকের আর্থিক  অসামর্থ থাকা সত্তে ও তারা প্রচলিত ব্যবস্থার প্রতি যতটা না বিরোধী তার চেয়ে অনেক গুনে ঐ ব্যবস্থার প্রতি অনুরক্ত বা অনুগত । যখন একজন কে বিপ্লবের পথে আহবান করা হয় তখন তাকে ত্যাগ স্বীকারের ও আহবান করা হয় । এতে গৃহ ত্যাগ, পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া, এমন কি প্রাণ পর্যন্ত বির্ষজন করার কথা বলা হয় । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন অতি দরিদ্র মানুষ ও পুঁিজবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের বিরোদ্ধে যেতে বা কোন প্রকার ত্যাগ স্বীকার করতে রাজি নয় । বিপ্লব হলো আশাহীনদের আশার আলো । প্রথম বিশ্বের অতি গরীব মানুষটি ও তাদের সরকারে প্রতি বুক ভরা আশা ও অস্থা নিয়ে বসে আছে ।

পৃথীবিতে অফুরন্ত সম্ভাবনা ও সম্পদের সমাহার রয়েছে । প্রথম বিশ্বের বেশীর ভাগ মানুষেরা তাদের পরিশ্রমের মূল্যের চেয়ে বেশী আয় করে থাকে । তারা অন্যদের উর্পাজন সরাসরি অথবা ভিন্নভাবে নিজেদের জন্য কেড়ে নেয় । তারাই শোষক গৌষ্ঠিী ।  প্রথম বিশ্বের বেশীর ভাগ মানুষ তাদের চলমান উর্পাজন হারাবে, যদি পৃথিবীতে ঠেকসই সুসম সমাজতান্ত্রিক বন্ঠন ব্যবস্থা চালু করা হয় । এটা প্রথম বিশ্বের  গতানুগতিক বুর্জোয়া ও শ্রমিক বুর্জোয় উভয়ের জন্যই সমভাবে প্রযোজ্য । মোদ্দাকথা হলো, সমাজতন্ত্রের আওতায় বিশ্বের বুর্জোয়া শ্রেণী ও বিশেষ করে প্রথম বিশ্বের মানুষ শ্রেণী হিসাবে তেমন কোন আর্থিক উপকারিতা পাবেন না ।

সাধারণ ভাবে বলা হয়ে থাকে, প্রথম বিশ্বের অথর্নীতির ধরণ ও প্রকৃতি ফ্যাসিবাদ ও সমাজিক ফ্যাসিবাদের চরিত্র ধারন করে আছে, সত্যিকার অর্থে  তা মোটেই সমাজতান্ত্রিক ধরনের নয় । গতানুগতিক ফ্যাসিবাদ এবং সামাজিক ফ্যাসিবাদ সমাজিক শক্তি হিসাবে বিরাজমান আছে । যেখানে নিম্নের বুর্জোয়ারা উচুঁ শ্রেণীর বুর্জোয়াদেরকে চাপে রাখে এই বলে যে, তারা যেন তাদের স্বার্থ ঠিকঠাক মত বহাল তবিয়তে রাখতে পারে । উচুঁশ্রেণীর  বুর্জোয়ারা সকল সময়েই নিচের স্তরের বুর্জোয়াদের সাথে সু সম্পর্ক বজায় রেখে চলে যেন তৃতীয় বিশ্বের প্রলেতারিয়েত শ্রেণীকে এক সাথে মোকাবেলা করতে পারে ।

৪. তৃতীয় আর্ন্তজাতিক বা কমিউন্টার্নে সকল দেশের কমরেডদেরকেই স্বাগত জানানো হয়েছিল । সেটা সঠিকই ছিল । রাজনীতি হওয়া উচিৎ নির্দ্দেশনা, কেবল মাত্র পরিচিতি নয় ।  প্রথম বিশ্বে যেমন কমিউনিষ্ট আছেন, তেমনি তৃতীয় বিশ্বে ও কমিউনিষ্ট আছেন । যদি ও সামগ্রীক বিবেচনায় প্রথম বিশ্ব  হলো সর্ববৈ বুর্জোয়া কিন্তু এর মানে এই নয় যে, সেখানে কোন সত্যিকার কমিউনিষ্ট নেই ।  মহান এঙ্গলস সেই সময়কার একজন কমিউনিষ্ট লিডিং লাইট । তিনি এসেছিলেন একটি বুর্জোয়া পরিবার থেকে । মার্কস ও কোন গতানুগতিক প্রলেতারিয়েত ছিলেন না । তিনি এসেছিলেন একটি বুদ্ধিজীবি পরিবার থেকে । লেনিন ছিলেন একজন আইনজীবি । মাও ও এসেছিলেন ছিলেন একটি জোতদার ও সুবিধা ভোগী কৃষক পরিবার থেকে । চে গুয়েভারা ও ছিলেন এক জন ডাক্তার । এ ছাড়াও বহু বিপ্লবী নেতা বুর্জোয়া পরিবেশ থেকেই এসেছিলেন । তারা বিশ্বের প্রচলিত বিজ্ঞান চর্চা করেছেন এবং তারা পৃথিবীর সাধারণ মানুষের সাথে ও মিশে গিয়েছিলেন । তারা তার মাঝে একটি সেতুবন্ধন করেছিলেন । তারা সেই সময়কার প্রাগ্রসর বৈজ্ঞানিক  ধরণাকে জনগণের মাঝে স¤প্রসারণ করেছিলেন । তারা অনুশীলনের মাধ্যমে সেই সময়কার সকল ভূয়া মতাদর্শকে অসার প্রমান করেছিলেন । যেমন তৃতীয় বিশ্বে ও বহু প্রথম বিশ্ববাদী ও সংস্কারবাদী আছে, তেমন আছে প্রথম বিশ্বে ও অনেক সংস্কারবাদী  প্রথম বিশ্ববাদী গৌষ্ঠী । সেখানে আছেন লিডিং লাইট কমিউনিষ্ট । তারা তৃতীয় বিশ্বের কমিউনিষ্টেদের মতই  প্রথম বিশ্বের  সত্যিকার কমিউনিষ্ট ও লিডিং লাইট কমিউনিষ্ট । যথাযত মাপকাঠি অনুসারে যারাই কমিউনিষ্ট আন্দোলনে অংশগ্রহন করেন তারা ধনীই হোক বা গরীব, তৃতীয় বিশ্বের হোক বা প্রথম বিশ্বের তাদেরকেই আমরা লিডিং লাইট কমিউনিষ্ট বলতে পারি । আর সেই মাপকাঠি হলো প্রাগ্রসর বিপ্লবী বিজ্ঞানের চর্চাকারী ও অনুশীলন কারী, লিডিং লাইট কমিউনিজম । লিডিং লাইট কমিউনিজম বলতে আজ কি বুঝানো হয় ? উত্তর হলো, রাজনীতি হলো একটি কমান্ড, লিডিং লাইট কমিউনিজম হলো একটি কমান্ড ।

৫.প্রথম বিশ্বের বুর্জোয়া শ্রমিক শ্রেণী ও তৃতীয় বিশ্বের শ্রমিক শ্রেনী কোন ভাবেই এক শ্রেণী ভুক্ত নয়, তার কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি ও নেই । তাদের মাঝে এমন কোন সত্যিকার উপাদান ও আমরা দেখতে পাচ্ছিনা যা দ্বারা প্রমান করা যায় যে, সেই শ্রমিক স¤প্রদায় বিপ্লবের জন্য উদ্যোগী হবে ; এমন কোন ঘঠনা ও আমরা দেখছিনা যে তারা  তাদের বস্তুগত বিষয়াদী অন্যদের সাথে ভাগাভাগী করতে পরে । ঐতিহসিক ভাবে ও তারা যে তৃতীয় বিশ্বের শ্রমিকদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করছে তার নজির ও খুব কম । আবার বলছি, প্রথম বিশ্বের শ্রমিক বুর্জোয়রা তাদের দেশীয় গতানুগতিক বুর্জোয়াদের সাথে গাঁটছাড়া বেঁধে সাম্রাজ্যবাদ ও পুজিঁবাদের সেবায় মশগুল হয়ে আছে ।  তারা তৃতীয় বিশ্বের বিরোদ্ধে জোট বেঁধে কাজ করছে। প্রথম বিশ্বের শ্রমিক বুর্জোয়ারা তৃতীয় বিশ্বের মানুষের দন্য দশা লাগবের ও তাদের মানবিক প্রয়োজনে কোন প্রকার ভূমিকা রাখা থেকে বহু দূরে অবস্থান করছে । সত্যিকার বিজ্ঞান কোন অন্ধঅনুসরন বা ডগমা নয় । বিজ্ঞান হলো বিশ্বের ঘটনা প্রবাহের ব্যাখ্যা ও তার ভবিষ্যৎ বিশ্লেষন করা । প্রথম বিশ্ববাদ, প্রথম বিশ্বে বিপ্লবের ভব্যিষৎ বিশ্লেষন ও বিপ্লবের সম্ভাবনা সম্পর্কে অসত্য ও বেঠিক পথ নির্দ্দেশ করবে । ইহা আমাদেরকে  বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে নিয়ে যাবে । প্রথম বিশ্ব বাদ হলো একটি আকাশ কুসুম কল্পনা ও প্রহেলিকা। লিডিং লাইট কমিউনিজম সত্যিকার ভাবে ভবিষ্যৎ বিশ্লেষন করে জনগনকে দলবদ্ধ করার প্রয়াসে এগিয়ে যায় । বাস্তবতা হলো বিজ্ঞানের মৌলিক ভিত্তি ; মাকর্স কি বলেছন আর বলেননি তা কিন্তু নয় ।

আমরা মার্কসের সময় ও ম্যানুফেষ্টো লিখার সময়ের চেয়ে এখন এক ভিন্ন পৃথিবীতে বসবাস করছি । যারা এখন শ্রমের বিনিময় পায় তারা সকলেই মজুরী, বেতন ও সম্মানী পেয়ে থাকে । তাদের সকলের মাঝে বিপ্লবী উপাদান নেই । এমনকি একটি বড় কোম্পানীর একজন নির্বাহী কর্মকর্তা বেতন পেয়ে থাকেন, কিন্তু তা তাদেরকে বিপ্লবী বানায় না । পুলিশ ও বেতন পায় কিন্তু তারাই হলো প্রচলিত ব্যবস্থার জানবাজ পাহারাদার । একই কথা বলা যায় সেই লোকদের বেলায় যারা ব্যবস্থাপানার সথে জড়িত এবং বেতন পান। এই বিষয় গুলোকে সূদীর্ঘ কাল তেকে বিপ্লবীগন স্বীকৃতি দিয়ে এসেছেন ।  সেই পরিস্থিতিতে বিচার করলে প্রথম বিশ্বের প্রায় সকল মানুষের জন্য ই প্রযোজ্য হবে ।

সত্যিকার কমিউনিষ্টগন শোষিতদের জন্য লড়াই করেন; শোষকদের জন্য নয় । তাদের জন্যই কাজ করে যাদের জন্য সমাজতন্ত্রে বস্তুগত উপাদান রয়েছে ; তাদের জন্য নয় যারা সাম্রাজ্যবাদী ও পুজিঁবাদী । বিশ্বের সম্পদ অসীম নয় । তৃতীয় বিশ্বকে অবশ্যই সুসম পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে, আর অন্যদিকে প্রথম বিশ্বের জীবন মান অবশ্যই কমাতে হবে । সত্যিকার কমিউনিষ্ট অসমতার জন্য  লড়াই করে না ; তারা প্রথম বিশ্বের শোষন প্রক্রিয়াকে চলমান ও ঠিকিয়ে রাখার জন্য ও লড়াই করে না । সত্যিকার কমিউনিষ্ট বিশ্বের ঠেকসই ও সমতার জন্য কাজ করেন; প্রথম বিশ্বের চলমান সুবিধাবাদ ও পশুসুলব ভোগবাদের জন্য নয় । চলমান সাম্রাজ্যবাদ, ঠেকসই হীনতা, ভোগবাদ, প্রথম বিশ্ব তথা আমেরিকান জীবন পদ্ধতীর জন্য আমরা লড়াই করিনা । আমরা লড়াই করছি স্বাস্থ্যসম্মত, সাধারণ, পরিবেশসম্মত, আরো রঙিন, আরো বুদ্ধিবৃত্তিক, আরো নায়কোচিত জীবন যাত্রার জন্য । লিডিং লইট লড়ছে, তৃতীয় বশ্বের দরিদ্র ও সাধারণ মানুষের জন্য  । লিডিং লইট জনগণের সেবক ।

আপনি আপনার চিঠিতে মার্ক্সের কথা যে ভাবে উল্লেখ করেছেন বিষয়টি অতি সরলিকরণ করলে মাক্সের্র প্রকৃত উদ্দেশ্যটাই পরিস্কার হবে না । যদি আমরা সত্যি বিপ্লব চাই তবে আমাদেরকে বাস্তবতার মুখোমুখী দাঁড়িয়ে চিন্তা ভাবনা করতে হবে, অবশ্যই অন্ধঅনুসরণ বা ডগমার পথে নয় । আমরা একটি বৈজ্ঞানিক বিপ্লবী মঞ্চ বির্নিমান করছি । আমাদের পথ পরিস্কার, লিডিং লাইট কমিউনিজম হলো অনেক প্রাগ্রসর বিপ্লবী বিজ্ঞানের ধারক ও বাহক । লিডিং লাইট কমিউনিজম এর সাথে হাত মিলান । লিডিং লাইট এর দ্বারা পরিচালিত হোন । সাধারণ জনগনই এই বস্তাপচাঁ চলমান বিশ্বকে বদলে দিবে । প্রথম বিশ্ববাদী ও তাদের প্রতিনিধিদেরকে পরাজিত করে ছাড়বে ! তৃতীয় বিশ্বের দরিদ্র মানুষ জেগে উঠছে ! লিডিং লাইট এর বিশ্ব জনযুদ্ধের যাত্রা অব্যাহত আছে ! আমাদের দিন আসবেই ! আমরা বিজয়ী হবই !!
লাল সালাম !!!
লিডিং লাইট কমিউনিষ্ট অর্গানাইজেশন ।
ভাষান্তর ঃ একেএম শিহাব
জুন ২৮, ২০১২ ।

Leave a Reply