কমরেড প্রচন্ড নেপালের জন্য দেংগিষ্ট পন্থার প্রস্তাব করেছেন, এটা ভাবনার বিষয় ..

(llbangla.org)

দি ইউনিফাইড কমিউনিষ্ট পার্টি অব নেপাল (মাওবাদী) এটা এমন একটি দল যা সংস্কারবাদী চিন্তাভাবনা থেকে গড়ে উঠেছে যা রেভ্যুলিউশনারী ইন্টারন্যাশনালিষ্ট মুভম্যান্ট (রিম) নামে পরিচিত । দলটি সুদির্ঘ সময়ে বহু বছরে জনযুদ্ধের ভেতর দিয়ে নেপালের রাজনৈতিক কর্তৃত্ব দখল করেছে । অত্যন্ত নিধারুন ভাবে, নেতৃবৃ›দ্ব জনযুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘোষণার পাশাপাশি বুর্জোয়া শোধনবাদের দিকে এগোতে থাকেন । ২০০৭ সালেই দলটি বিজয়ের কাছকাছি চলে আসে । জনযুদ্ধের সময়কালে দলটি মাওবাদী সংগঠন হিসাবে নিজেদের ভাবমুর্তি জনগণের কাছে প্রকাশ করতে থাকে । তবে, কিছুকাল পরেই দলটির নেতৃবৃ›দ্ব জনযুদ্ধের পথ থেকে সড়ে যেতে থাকে, এবং ক্রমে তারা মাওবাদের আদর্শ সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করে । আদর্শিক ভাবে ঘুড়ে দাড়ানোর সাথে সাথে দেশব্যাপী গনপ্রতিষ্টান গুলোর আদর্শ ত্যাগ : ভূমি সংস্কারের কাজ থেমে যাওয়া, তাদের নানা প্রতিষ্টানে বিরাজিত ও বিকশিত দ্বৈত শক্তির বিনাশ ঘটে, তারা অস্র ত্যাগ করে তাদের গণবাহিনীকে কাগারের দিকে মার্চ করায়, যেখানে পাহারায় বা তত্বাবধায়নে  রয়েছে জাতিসংঘ। নেপালের মূলধারার শোধনবাদী দলের সাথে মিলিত হতে গিয়ে তারা মাওবাদের আদর্শকে পরিত্যাগ করেছে । এ বিষয়ে বিশ্বের শোধনবাদীদের মাঝে  উল্লেখযোগ্য প্রতিক্রিয়া হয়েছে, কেহ কেহ এই বিচ্যুতিতে নিরব থেকেছে, আবার কেহ কেহ আনন্দিত ও হয়েছে । অনেকেই নেপালের এই শোধনবাদী পন্থা গ্রহনের কারনে এখন ও উল্লশিত । কেবল মাত্র লিডিং লাইট আন্দোলনই আর্ন্তজাতিক কমিউনিষ্ট আন্দোলনে কাজ করছে নেপালী বিপ্লবে পরিত্যক্ত মাওবাদ কে ফিরিয়ে আনার জন্য ।

প্রচন্ড ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকবার ঘোষনা করেছেন যে, তিনি ও তার দল সাম্রাজ্যবাদের জন্য কোন সমস্যা নয় এবং বিপ্লবী ভঙ্গীতে তাদেরকে নিশ্চিত করেছেন তাদের আভ্যন্তরীণ ভোগ ও ব্যবহারে কোন পরিবর্তনই আসবে না । প্রচন্ড বিশ্ব ব্যাংক ও আই এম এফ এর সাথে মৈত্রী স্থাপন করেছেন এবং অন্যান্য সাম্রাজ্যবাদী গৌষ্ঠির সাথে ও সখ্যতা তৈরী করে ফেলেছেন । এটা দেখে আমরা অবাক হচ্ছিনা এই জন্য যে,  প্রচন্ড একজন সংশোধনবাদী হিসাবে নেপালে দেংগিষ্ট উন্নয়ন মডেল আমদানী ও প্রয়োগ করেছেন  তার জন্য এটাই স্বভাবিক।

Òআমরা চিনের মত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলব । বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল চিনের অর্থনীতিকে গতিশীল ও সমৃদ্ধ করেছে, আমরা চিনের কাছ থেকে শিখতে চাই, চিনের অভিজ্ঞতা আমাদের জন্য খুবই সহায়ক হবেÓ।

বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হলো এমন এলাকা যেখানে অর্থনৈতিক, পরিবেশ এবং শ্রম আইন ইত্যাদীকে উদারভাবে প্রয়োগ করা হয় । বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হলো এমন এলাকা যেখানে স্থানীয় মানুষের শ্রম শোষন  ও স্থানীয় সম্পদ লুন্ঠনের ব্যবস্থা করার জন্য বিদেশী পুজিঁ বিনিয়োগ করার সুযোগ দেয়া হয়, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হলো এমন এলাকা যা তৃতীয় বিশ্বের জন্য নয়া উদারবাদী বিশ্বায়ন প্রক্রিয়া এবং Ôশক থেরাপীÕ। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৃতীয় বিশ্বের বেশ কিছু দেশে ইতিমধ্যে স্থাপন করা হয়েছে যেমন চিন, ভারত, দি ফিলিপাইনস, কুরিয়া, কম্বডিয়া, পেরু এবং আরো কিছু দেশে । বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হলো ১৯৮০ সালে দেং জিয়াওপিং এর সমাজতান্ত্রিক সংস্কারবাদের একটি বিশেষ অংশ বা মডেল। এখানে অবাক হবার কিছু নেই, যে সকল মধ্যস্বত্ব ভোগীরা ভারতকে চালনা করছে,সেই শ্রেণী এবং স¤প্রতি প্রচন্ডের ডান হাত বলে পরিচিত দি ইউনিফাইড কমিউনিষ্ট পার্টি অব নেপাল (মাওবাদী) এর ভাইস চেয়ারম্যান বাবুরাম ভট্ররাজ যিনি বর্তমানে প্রধান মন্ত্রিহিসাবে আছেন তিনি স¤প্রতি প্রচন্ডকে সেই প্রস্তাব দিয়েছেন ।

দেং এর মতই প্রচন্ড ও উন্নয়ন চাচ্ছেন, শ্রেণী সংগ্রামের দৃষ্টিতে নয়, তার প্রধান উদ্দেশ্য হলো নেপালকে এগিয়ে নেয় । প্রচন্ডর মতে, নেপালে উৎপাদন শক্তির বিকাশের ও উন্নয়নের সমস্যা রয়েছে । এই সংস্কারবাদী দৃস্টি ভঙ্গি কমিউনিষ্ট আন্দোলনের দীর্ঘ ইতিহাসে একটি পরিত্যক্ত অধ্যায় হয়ে আছে । এই ধরনের উৎপাদন শক্তি সংক্রান্ত ত্বত্ত ইতিমধ্যেই বতিল করা হয়ে গেছে যেমন সংস্কারবাদী ট্রটস্কীর চিন্তা ধারা, লুই সুকী, এবং দেং জিয়াওপিং । এই ধারার ভাবনা চিন্তাকে মাওবাদী সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সময় সংস্কারবাদী ত্বত্ত হিসাবে বতিলের খাতায় লিখা হয়ে আছে । উন্নয়নের নামে এই দৃষ্টিভঙ্গিকে সকল সময়ই মাওবাদ বিরোধীতা করে এসেছে, মাওবাদ শ্রেণী সংগ্রামকে অগ্রাধিকার প্রদান করে থাকে এবং বিরোধীতা করে সকল প্রকার সাম্রাজ্যবাদ ও সংস্কারবাদের । দেংগিষ্ট মতবাদকে গ্রহন করতে গিয়ে সর্ম্পূভাবে মাওবাদকে ও সাংস্কৃতিক বিপ্লবকে বর্জন করেছেন কমরেড প্রচন্ড। মাওবাদের এই সাইনর্বোড কিছুই নয় । প্রচন্ডের দল সম্পূর্ণ ভাবেই মাওবাদ বিরোধীদের সাথে মিশে গেছে  । তাদের দলের নাম যাইহোক, তারা কোন ভাবেই আর মাওবাদী নয় । এইরূপ মাওবাদী হিসাবে মিথ্যা দাবী তো চরম সংস্কারবাদী দেং ও করে থাকেন। তবে এটা  সত্য যে তাদের মধ্য থেকে স্বল্প হলে ও কিছু মানূষ বেড়িয়ে এসে সংস্কারবাদীদের স্বরূপ উন্মোচন করবেন এবং যারা নিজেদেরকে মাওবাদী বলে প্রচার করছেন তাদের আদর্শিক দেওলিয়াত্ব প্রকাশ করে দিবেন । এটা শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র ।

কে আমাদের শত্র“ ? কে আমাদের বন্দু ? শ্রেণী সংক্রন্ত এই প্রশ্ন করেই মাও তারঁ মহান কর্মকান্ড শুরু    কিেছলেন । মহান মাওয়ের মতে এই গুলো হলো শ্রেণী বিশ্লেষনের প্রশ্ন এবং বিপ্লবের জন্য খূবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । এই শ্রেণী সংক্রান্ত  প্রশ্নের জবাব যদি আপনি সঠিক ভাবে না পান, তবে যে কোন কিছুই আপনার কাছে সঠিক মনে হতে পারে। এমন কি এখনও বহু প্রথম বিশ্ববাদী দল নিজেদেরকে মাওবাদী হিসাবে পরিচয় দেয় ও মাওবাদী হিসাবে দাবী করে । যেমন এখন কমরেড প্রচন্ড মহানন্দে সংস্কারবাদের পথে চলেছেন ।  চলমান এই বিষয় গুলো প্রমান করে যে, দুনিয়া জোড়া সংগঠন গুলো বিভ্রান্তিতে ভোগছে এবং বিশ্ব শ্রেণী  সংস্কারবাদ, শোধনবাদ ও আপোষকামীতার দ্বারা আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। তা থেকে উত্তরনের পথ হলো লিডিং লাইট কমিউনিষ্ট অর্গানাইজেশন ।
লাল সেলাম ! একেএম শিহাব

Leave a Reply