(llbangla.org)
একজন বাংগালী আমেরিকান ব্লগার অভিজিত রায় ২৬ শে ফেব্রুয়ারী,২০১৫ ঢাকায় খুন হয়েছেন। তিনি মুক্ত-মনা নামে একটি ব্লগওয়েভ পরিচালনা করতেন। তাঁর কাজ ছিলো ধর্ম নিরপেক্ষতা, অসাম্প্রদায়িকতা ও মানবতাবাদের পক্ষে লেখা লেখি করা । জানা গেছে তিনি এই জন্য বেশ কয়েকবার হত্যার হুমকী ও পেয়েছিলেন। কিন্তু সাহসীকতার সাথে তিনি তাঁর কাজ করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে উরা বাঁচতে দেয়নি। যারা তাকে হত্যা করেছে তারা তাদের হত্যার অপরাধের ন্যায্যতা প্রমানের জন্য ইসলাম ধর্মের আশ্রয় নিয়েছে। প্রশ্ন হলো যে প্রান আল্লাহ মানুষকে দিয়েছেন তা কি অন্য কোন মানুষের কেড়ে নেবার অধিকার আছে ? আমরা আল কোরানের দিকে থাকেলে দেখব যে, আল্লাহ বলেছেন,
“ আমরা কিছু জিন ও মানুষকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব। তারা শোনে কিন্তু বুঝতে চায় না; তাদের চোখ আছে কিন্তু দেখে না; তাদের কান আছে কিন্তু শোনতে পায় না । তারা সত্যিকার অর্থে পশুদের মত; না, তারা এর চেয়ে ও নিম্ন স্তরের। তারা মাথা হীন লোকের মত”। [ কোরান ৭;১৭৯]
“ আল্লাহর নিকট সব চেয়ে খারাপ সৃষ্টি তো সেই যে যুক্তিহীন ভাবে অন্দ্ব ও বধিরের মত জীবন যাপন করে”। [কুরান-৮;২২]
“ আল্লাহর অনুমোদন ছাড়া ইমান আনা সম্ভব নয়, যারা যুক্তিহীন তাদের হ্রদয়কে আল্লাহ কুলুষিত করে দেন”। [কুরান-১০;১০০]
“ তাদের ইতিহাসে বুদ্বিমান লোকদের জন্য শিক্ষা রয়েছে, ইহা কোন মিথ্যা রচনা নয়। যারা বিশ্বাস করবে এতে তাদের জন্য বিস্তারিত ও সাত্যায়িত পথ নির্দেশ রয়েছে”। [কুরান-১২;১১১]
নিরপরাধ মানুষকে খুন করা ইসলামে জগন্য অপরাধ। অথচ চরম পন্থীরা আজ সেই কাজই করছে। তাদের আল্লাহর প্রতি কোন আস্থা নেই। নিরিহ মানুষ যখন কাজে যায় তখন তাদেরকে আগুনে পুড়িয়ে মারছে। ইসলামের ভাষ্য হলো, আল্লাহ মানুষকে আগুনে জ্বালিয়ে নাফরমানির শাস্তি দিবেন, চরম পন্থীরা আজ আল্লাহর কাজ নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছে। তারা পেট্রোল বুমা মেরে মানুষকে হত্যা করছে। উরা খোদার উপর খোদ্গারী করতে শুরু করেছে। উরা ব্লগারদেরকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। ব্লগাররা যদি নাফরমান বান্দা হয়ে থাকে তবে,তাদের শাস্তি দেবার জন্য তো তিনিই যতেস্ট। সর্ব শক্তিমান আল্লাহকে উরা এত দুর্বল ভাবে কেন ? আল্লাহকে অবজ্ঞা করে তাঁর বান্দাদের রক্তে তাঁর জমিন রঞ্জিত করার অধিকার কে দিয়েছে তাদেরকে ? আল্লাহ বলেছেন, বিচার দিনের মালিক কেবল আল্লাহ! অন্য কেহ নয়। কোন মানুষ নয়। চরম পন্থীরা আল্লাহর বানীর প্রতি মোটেই শ্রদ্বাশীল নয়। আল্লাহর রহমত ও বিচারের প্রতি আস্তাশীল নয়। ইহা হলো উগ্রতা। ইহা ফ্যাসিবাদ। ইহা সামন্তবাদি বর্বরতা। ইহা ইসলাম নয়।
এখনো কেহ এই খুনের দায়ে গ্রেফতার হয়নি। এই ধরনের আক্রমন কেবল সভ্যতা ও মানবতার বিরুদ্বে নয়। এই ধরনের আক্রমন মহান আল্লাহর শানকে ও ম্লান করে দিতে চায়। ইহা আল্লাহর শানের উপর ও আক্রমন হিসাবে গন্য। জানিনা হয়ত আগের অনেক ঘটনার মত এর ও কোন বিচার হবে কি না ? কেউ হয়ত দাঁড়িয়ে বলবে না যে, “ তোমরা যতেস্ট করেছ !” আর নয় ! আমরা মধ্যযুগীয় বর্বরতা আর চাই না। আমরা ফ্যাসিবাদ আর চাই না। আমরা খুন হত্যার অবসান চাই। জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে মারা বন্দ্ব হোক! আমরা আমাদের ও আমাদের শিশুদের ভবিষ্যতকে হেফাজত করতে চাই।
আল্লাহর শানকে বুঝতে হলে ইসলামের নির্দেশানুসারে যুক্তি, মেধা ও বিজ্ঞানের ব্যবহার করতে হয়। প্রতিটি মানুষ নিরাপদে জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চা করতে পারবে এটা সকলেরই প্রত্যাশা। আমরা কোন প্রকারের পাগলামী চাই না। যারা সত্যিকার ভাবে আল্লাহকে ভালোবাসে তারা আল্লাহর সৃষ্টি, বিচার,শান্তি, দয়া, মায়া, ও যুক্তিকে গ্রহন করবেন আর বর্বরতা থেকে নিজেদেরকে মুক্ত রাখবেন। এটা ই ইসলামের শিক্ষা। যারা সত্যিকার মুসলিম তারা আল্লাহর আদেশের প্রতি সম্মান দেখান। আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা তাদের সকল কাজের প্রেরনা হয়ে থাকে। আলোকিত জীবন ও আলোকিত সাম্যবাদের পথে সমাজকে টেনে নিয়ে যান। খুন হত্যার পরিবর্তে মানব প্রেম, মানব কল্যান ও মানুষের সেবা করাই সত্যিকার কোরান সূন্নাহর শিক্ষা।