(llbangla.org)
যখন আপনি পুঁজিবাদের শিকর উপড়ে ফেলার কথা ভাবছেন, তখন চলমান পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটছে। ১৯৯৯ সালের সূচনায় কোকা–কোলা কোম্পানির লোকেরা একটি গবেষণা করেছিলেন কিভাবে লেজার রশ্মির মাধ্যমে চাদের উপর কোকা-কোলার লগোটির প্রতিফলন দেখানো যায়। উদ্দেশ্য ছিলো ব্যাপক বিজ্ঞাপনের ব্যবস্থা করা। এই ধরনা বা প্রকল্পটি কোম্পানীর নির্বাহী পরিচালক স্টিভ কনিন পরে বাদ দিয়েছিলেন। কারণ তারা অ্যামেরিকার ফেডারেল এভিয়েশনের অনুমতি পায়নি এবং তাদের প্রকৌশলগত সমস্যা ও ছিল । তবে, অন্যান্য কোম্পানীর বিজ্ঞাপনের পরিধি এখন পৃথিবীর বাইরে ও চলে গেছে এবং তার সীমা বেড়েই চলছে। কেন্টাকি ফ্রাইড চিকেন, অ্যামেরিকার অস্বাস্থ্যকর খাদ্যদ্রব্য বিক্রির জন্য আমাদের পৃথিবীর অনেক সূন্দর জিনিস চমৎকার লগো দিয়ে বানিজ্য করা শুরু করেছে। এপর্যন্ত প্রায় ২৬,৫১৮ বর্গমিটার এলাকা জোড়ে মার্কিনীরা আকাশের চাদ দখল করে নিয়েছে। নানা প্রকার লগো ও বিজ্ঞাপন ব্যবহার করছে। ২০০৬ সালেই এই পরিমান জায়গা তারা দখল করেছিলো। মার্কিনিদের পাশা পাশি অন্যান্য ধনী দেশ সমূহ ও এই কাজ করতে শুরু করেছে। ২০০৭ সালে লন্ডনের হিত্রো বিমান বন্দরের পার্শ্বে প্রায় ২০,০০০ বর্গ মিটার জায়গা মহা শূন্যে বিক্রি করা হয়েছে। এখন জাপানের প্রকল্পটি নিয়ে অনেকেই আলোচনা করছেন। তা হলো জাপান তার খেলার পানীয় টি মহা শূন্যে বিজ্ঞাপন হিসাবে প্রদর্শন করতে চাইছে। জাপানের বাণিজ্যিক কোম্পানি ওসাকা পরিকল্পনা করছেন যে, তারা ১ কিলোগ্রাম টাইটানিয়াম গুড়া আকারে পানীয় হিসাবে চাঁদের বুকে ঢালতে চাইছে। একটি বাজ পাখির মত রকেট দিয়ে আগামী অক্টোবর,২০১৫ সালে এই বিজ্ঞাপনটি পাঠাতে উদ্যোগ গ্রহন করেছে।
কার্ল মার্ক্স বহু আগেই পুঁজিবাদের একটি বিপ্লবী চরিত্রের ও প্রযুক্তিগত অর্জনের কথা লিখেছিলেন। প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে পুঁজিবাদ এখন মহা শূন্যে ভ্রমন করছে। তবে পুঁজিবাদ প্রযুক্তির এই উন্নয়নের মধ্যেও নিজেদের মুর্খতা প্রকাশ করছে। সমাজতান্ত্রিক সমাজে ভুবন ভিত্তিক ধ্যান ধারনার উন্মেষ ঘটেছিলো। আর তা ছিলো মানব জীবন সুন্দর ও দির্ঘ করার প্রয়াস ছিলো। স্ট্যালিন পরিকল্পনা করেছিলেন একটি সূরম্য সৌভিয়েত প্রসাদ নির্মান করতে চেয়েছিলেন। সে বিশালাকৃতি ভবনটির চাদের উপর ছিলো লেনিনের মুর্তির নক্সা। অবশ্য শেষ পর্যন্ত সেই ভবনটি নির্মান করা সম্ভব হয়নি। তা হয়ায় ভালো ই হলো। সেই ধরনের ভবন নির্মান করার উদ্যোগ ছিলো সমাজতন্ত্রের একটি খারপ দৃষ্টান্ত । ১৯৪১ সালের পর সমাজতন্ত্রের বিনির্মান কালে কিছু কাজ কে অবশ্য স্থগিত রাখতে হয়েছিলো। এছাড়া সাম্যবাদ ভিত্তিক কোন উল্লেখ যোগ্য শিল্প কলা নির্মান করতে পারেনি। তবে, চীনের কিছু বৃহৎ বিপ্লবী শিল্পের উদাহরন দেখা যায় । মাওবাদিরা চীনের উচু পাহাড় সৃঙ্গে “ জনগণকে সেবা করুণ” এই বানীটি লিখে দিয়েছিলো।
লিডিং লাইট দির্ঘ দিন ধরেই বলে আসছে যে, যদি ও বস্তুগত উন্নতি করছে তবে আমাদের উচিৎ তাঁকে একটি শিল্প সম্মত অবস্থায় দাড়করানো । পুঁজিবাদ অনেক ক্ষেত্রে প্রকৃতির সুন্দর্যকে বিনষ্ট করছে, ধ্বংস করছে পরিবেশের বৈচিত্রকে। তৈরী করছে মূর্খতা পূর্ন জীবন ও অস্বাস্থ্য কর পরিবেশ। তা সামগ্রীক বিবেচনায় কোন ভাবেই ভালো নয়। পুঁজিবাদ বলছে, “ বেশী বেশী কিনুন ! বেশী বেশী ভোগ করুন” ! সাম্যবাদ আমাদেরকে বলে আপনি আপনার সুবিধা মত আরাম দায়ক স্বস্থি পূর্ন জীবন যাপন করুন। একে অন্য কে সহায়তা করুন। এক জন অন্যজনের সাথে ভাগাভাগী করুন। একে অন্যের জন্য ত্যাগ করুন। অন্যকে সম্মান করুন। সত্যের পূজারী হোন। পুঁজিবাদ হলো ভোগবাদি আদর্শের এক জলন্ত উদাহরন। ইহা ভোগীদেরকে উলংগ করে দেয়। নোংরা সাংস্কৃকিত চর্চায় এগিয়ে নিয়ে যায়। ইহা কেবল বস্তুগত দিকের ই বিনাশ করে থামে না বরং ইহা নিজে সকল কিছুর নাশ ডেকে আনে। উলংগপনা ও নোংরামি এর উল্লেখযোগ্য দিক। আমাদের উচিৎ এটা ঠিক করা যে, আমরা কোন
জীবন ধারাটি গ্রহন করব ? যুদ্ব না শান্তি ? কুৎসিত নোংরামি নাকি সুন্দর্য্য ? মেধা না কি মূর্খতা ? পুঁজিবাদ নাকি আলোকিত সাম্যবাদ ?