(llbangla.org)
ইয়ামেন এখন সাম্রাজবাদের আগ্রাসনের লক্ষ্য। ইহা তাদের দির্ঘ সময় অস্থিরতার ফল। ইয়ামেনের দির্ঘদিন বিভক্ত থাকার ও তাদের নাগরীক জিবনে স্থবিরতার কারনেই আজ এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে বর্তমান আব্দুল্লাহ সালেহ এর ক্ষমতায় থাকা না থাকার বিষয়ে ঐক্যমত না হতে পারার কারনেই পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে বেশী। ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বি মানসূর হাদি জাতীয় ঐক্যের প্রচেস্টা চালিয়েছিলেন। কিন্তু নাশকতা এগিয়ে চলছিলো। নাশকতার কাজটি চলছিলো মূলত সানাহ’র হুতি শিয়াহ মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতৃত্বে। তারা রাজধানীর একটি অংশ ২০১৪ সালে দখল ও করে নেয়। হাদি সরকার নানা উপজাতিদেরকে নিয়ে একটি “জাতীয় ঐক্যের সরকার” ও ঘটন করে । কিন্তু সেই সরকার এখন মারাত্মক ঝুকির মূখে পড়ে গেছে। জানুয়ারী ২০১৫ তে হাদি পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু মহাম্মদ আলী আল হুত্তির নেতৃত্বে হুতিরা বিপ্লবী পরিষদের আওতায় নিজেদেরকে ক্ষমতাশীন বলে ঘোষণা করে দেয়। তবে হাদি পলায়ন করে দেশের দক্ষিন শহর এডেনে চলে গেছেন। সেখানে গিয়ে নিজেকে দেশের একমাত্র বৈধ্য নেতা দাবী করে সেনাবাহিনীকে তার পক্ষে কাজ করার আহবান জানায়। এই সুযোগে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি সেই ইয়ামেনকে দখল করার পায়তারা করছে।
এই প্রেক্ষিতে পরিস্তিতি বিশ্লেষণ করলে আমাদের বিবেচনায় যেসকল বিষয় আসে তা হলোঃ
১. এই সংঘর্সের ধরন হলো ইহা একটি আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব যা ইরানী শীয়া, আসাদের শাসন, হিজবুল্লাহ, ইরাকী মিলিষিয়াহ ও বাহরাইনের বিদ্রোহী ইত্যাদির মতই। পক্ষান্তরে, আরবী সুন্নি, ইসরায়েল, তার্কি, জর্ডানের ইত্যাদি। যা সাম্রাজ্যবাদ সুকৌশলে সৃজন করেছেন। শীয়াহ সম্প্রদায় হুতিদেরকে গোপনে সমর্থন করেছে। কিন্তু সাম্রাজ্যবাদ সমর্থন দিচ্ছে হাদি সরকারকে।
২. আলী আব্দুল্লাহ সাম্রাজ্যবাদের খুবিই প্রিয়বাজন ছিলেন। মার্কিনিরা তাকে সন্ত্রাসের বিরুদ্বে লড়াই করতে তাদের সহযোগী হিসাবে গন্য করতেন। সন্ত্রস দমনে ইয়ামেন একটি সফল অঞ্চল হিসাবে পরিগনিত হত। ইয়ামেনে মার্কিনিরা গোপনে ড্রোন হামলা করে বহু নিরিহ সাধারন মানুষকে হত্যা করেছে। মার্কিনীরা সরকারকে নানা ভাবে অস্ত্র, বিশেষজ্ঞ ও প্রশিক্ষন দিয়ে সহায়তা করেছে। এখন ও এডেন থেকে হাদি সরকার আগের মতই সকল প্রকার সাহায্য সহায়তা পেয়ে আসছে।
৩. ইরান হুতি বিদ্রোহীদেরকে কোন প্রকার সাহায্য করছেন কি না এখন পরিস্কার নয়। হুতিরা নিজেদেরকে শীয়াহ হিসাবে দাবী করলেও তারা ইরানী শিয়াদের মত নন। তবে ইরানীরা হুতিদেরকে যে টুকু সমর্থন দিচ্ছে কেবল ভূ-রাজনৈতিক কারনে। তা কিন্তু আদর্শিক বিষয় নয়। কেননা ইরানী ও হুতিরা উভয়ই মার্কিনীদের সাধারন শ্ত্রু।
৪. ইরাক এবং সিরিয়ার মতই সুন্নি জিহাদিদের সাথে সাম্রাজ্যবাদের লড়াই চলছে। সাম্রাজ্যবাদ একদিকে জিহাদিদেরকে সাহায্য করছে, অন্য দিকে তারা জিহাদিদেরকে খতম করা নীতি নিয়ে কাজ করছে। সাম্রাজ্যবাদ এদেরকে কোন কোন দেশের অস্থিরতা সৃজনের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করছে। সাম্রাজ্যবাদ এদেরকে আতঙ্কের দূত হিসাবে ও কাজে লাগাছে। সাম্রাজ্যবাদ এদেরকে দিয়ে তৃতীয় বিশ্বের রাজনীতিকে ঘোলাটে করতে চাইছে আবার ইরানীদের প্রভাব বলয়কে বিনষ্ট করতে উঠে পড়ে লেগেছে। জিহাদিদের বিরুদ্বে মানুষকে ক্ষেপিয়ে তুলতে চাইছে আর সাম্রাজ্যবাদ নিজেকে শান্তির নায়ক বা দূত হিসাবে দুনিয়াময় প্রতিস্টিত করতে চেষ্টা করে চলেছে। সাম্রাজ্যবাদ নিজে ক্ষমতা দখলের চাইতে নানা স্থানে গোলযোগ লাগিয়ে দিতে বেশী আগ্রহী।
৫. ইয়ামেন দেশ হিসাবে ঐক্যবদ্ব নয়, বরং তারা উপ জাতি, ধর্ম, ও ভৌগলিক ভাবে বিভক্ত হয়ে আছে। ইয়ামেনের যুদ্বটা সাম্প্রদায়িক প্রকৃতির। সেখানে ভৌগলক বিভক্তি একটি বড় কারন হিসাবে ও দেখা যায়। সৌদি আরব ও ইস্রায়েল হুতিওদের উপর এখন বোমা ফেলছে। এখন সৌদি আরবের লক্ষ্য হলো স্থল যুদ্বে হুতিদেরকে পরাজিত করে কর্তৃত্ব গ্রহন করা। তারা ১৫০,০০০ হাজার সৈন্য সেখানে পাঠাতে শুরু করেছে
। সৌদি আরাবিয়া পাকিস্তানের লোকদেরকে সেই যুদ্বে ব্যবহার করতে চাইছে। মিসরের নৌ সেনারা ইতিমধ্যে এগিয়ে গেছে। আমেরিকা, ফ্রান্স, ব্রিটেন, ও তুরস্ক ইতিমধ্যে ইয়ামেনের আক্রমনে যোগদান করেছে।
আমরা ইয়ামেনে সকল প্রকার বিদেশী আগ্রসনের বিরুদ্বে। বিশেষ করে সাম্রাজ্যবাদিরা যেন তা থেকে দূরে থাকে। আমরা নিন্দা করি আমেরিকা, সৌদি আরাবিয়া, ইস্রায়েল, ব্রিটেন, আই, এস, আল কায়দা সহ সাম্রাদায়িক শক্তির হস্তক্ষেপের। তারা গন হত্যা করে সাধারন তৃতীয় বিশ্বের গরীব মানুষকে বিনাশ করে দিবে। আমরা বিরুধিতা করছি তাদের যারা চাইছে ইয়ামেনকে একটি সাম্রাজ্যবাদ্র অনুগত ও আদা সামন্তবাদি বর্বরতার দিকে ঠেলে দিতে। জয় হোক ইয়ামেনের সাধারন মানুষের। একে এম শিহাব।