মহান লেনিনের নেতৃত্বে বলশেভিক বিপ্লব সম্পন্ন হয় যা একটি সম্জতান্ত্রিক বিপ্লব হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। আর এটাই ছিল সকল প্রকার শোষন নিপিড়নের পরিসমাপ্তির জন্য, সমাজতন্ত্র বিনির্মমানের প্রথম উদ্যোগ এবং সাম্যবাদে পৌছাঁনোর প্রচেষ্টা ।,সেই বিপ্লবী মাক্সীয় তত্তে¡র আলোকে রাষ্ট্র গঠনে মনোনিবেশ করে। তারাই বিপ্লবী প্রক্রিয়াকে বোঝার জন্য আমাদের চেতনাকে শাণিত করে। যাই হোক, বিপ্লবের অজ্ঞিতাকে কাজে লাগানোর জন্য লেনিনের সময়কার প্রচলিত চিন্তা ভাবনাকে ভালো ভাবে অধ্যয়ন করা প্রয়োজন । আজকের বহু চিন্তক, স্যোসিয়াল ডেমোক্রেট এবং উদারপন্থীগণ লেলিনের ধারনাকে পরিত্যাগ করেছেন । তারা ভিন্নভাবে রাষ্ট্র ও সামাজিক পরিবর্তনের ধারণা উপস্থাপন করেছেন । শোধনবাদীগণ মনে করেন প্রচলিকত রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রাকৃতি বা প্রায় প্রকৃতিক হওয়া প্রয়োজন । যার গঠন হবে পরস্পর বিপরীত বা প্রায় বিপরীত সামাজিক শক্তি দ্বারা । অন্য কথায় বিষয়টি হলো, কিছু কিছূ শোধনবাদী মনে করেন রাষ্ট্র হলো একটি প্রকৃতিক প্রকৃকিত প্রতিষ্ঠান । একে শ্রেণী সংগ্রামের বাহিরে উচিৎ । ইহা হত পারে বুর্জোয়া ও প্রলেতারিয়েতের মধ্যকার দ্বন্ধের মধ্যস্থতাকারী । এই শোধনবাদীরা আরো বিশ্বাস করেন পুরাতন রাষ্ট্রকাঠামো ছিল স্বাভাবিক ভাবে গড়ে উঠা একটি সংস্থা, এর সেই ঐতিয্য বজায় রাখা উচিৎ ।
সংশোধনবাদীরা সাম্রাজ্যবাদী জনগৌষ্ঠির সাথে সামাজিক সর্ম্পকের উন্নয়ন ঘটিয়েছে । এটা অতিব সত্যি কথা যে, সাম্রাজ্যবাদী কর্মীগণ এবং তাদের কর্মকর্তাদের মাঝে বোঝাপড়া আছে, তারা রাষ্ট্রের উপর নির্ভশীল, তাদের ও চলতে হয় রাষ্ট্রের নিভর্র করে । তবে ইহা কেবলমাত্র সাম্রাজ্যবাদী কর্মী ও তাদের কর্তাদের মাঝেই সম্ভব কারণ তাদের স্বার্থ এক ও অভিন্ন কিন্তু তা পরস্পর বিরোধী শ্রেণীর মাঝে সম্ভব নয় । সামাজিক শান্তি ও সৌর্হাদ তখনই বিরাজ করে যখন সাম্রাঝ্যবাদী কর্মী ও তাদের কর্তরা পরস্পরের জন্য ছাড় দেয় । এ বিষয়ে রাষ্ট্র এক গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে । মহান লেনিন বলেছেন পরস্পর বিরোধী শ্রেণীর মাঝে শান্তির আশা করা দূরাশা মাত্র । রাষ্ট্রের ভেতরেই হোক বা রাষ্ট্রের বাহিরেই হোক বিশ্ব বুর্জোয়া ও বিশ্ব শ্রমিকদের মাঝে ও ইহা আশা করা সমিচীন নয় । সংশোধনবাদীরা আজ প্রথমবিশ্ববাদী হিসাবে নিজদেশের কর্মীদের মাধ্যমে দুনিয়া জোড়া প্রলেতারিয়েত শ্রেণীর মাঝে তাদের ধারনার স¤প্রসারণ করেছে । তাদের সমাজতান্ত্রিক কর্মকান্ডের উদ্দেশ্য শোষন প্রক্রিয়ার পরিসমাপ্তি বা কমিউনিজম নয় । বরং তাদের কার্যক্রমের প্রধান উদ্দেশ্যই হলো জাতীয় ঐক্য স্থাপন করে বিশ্বব্যাপী সুনাম অর্জনের পাশাপাশি তাদের কর্মরত দেশীয শ্রমিকদের বস্তুগত উন্নয় আধন করা । এই ধরনের সুর্নিদিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি সংকির্ণ অর্থনীতিবাদের সাথে সম্পর্কযুক্ত । যা সমাজতন্ত্রকে প্রধানত জীবনমান উন্নয়নের মাধ্যম হিসাবে দেখে থাকে । যা মানুষকে নতুন জীবন প্রণালীর প্রতি পরিচালিত করে কমিউনিজমে পৌছঁতে বা বিশ্বব্যাপী সকল ধরনের নিপিড়নের পরিসমাপ্তি ঘটাতে এগিয়ে নেয় না । শোধনবাদীরা নিজদেশের শ্রমিকদেরকে কেবলমাত্র তাদের দেশের শ্রমিক হিসাবেই বিবেচনা করে থাকে, বিশ্ব শ্রমিক হিসাবে বিবেচনা করে না, বরং তাদের ভোটার হিসাবেই বিবেচনা করে থাকে । তারা তাদের দেশের শ্রমিকদেরকে হয়রানী করে থাকে বিশ্ব শ্রমজীবি মানুষের অংশ হিসাবেই । ইহা সামাজিক সাম্রাজ্যবাদ ও সামাজিক ফ্যাসিবাদের দিকে পরিচালিত করে থাকে । সাম্রাজ্যবাদ ও সামাজিক ফ্যাসিবাদ সমাজতন্ত্রকে আড়াল করতে রাখতে চায় । সংস্কারবাদীগন রাষ্ট্রের মাধ্যমে সাম্রাজ্যবাদী দেশের শ্রমিক ও বুর্জোয়াদের মধ্যে একটি সমন্বয় সাধন করে থাকে । সাম্যাজ্যবাদী দেশ গুলো অন্যান্য সাম্রাজ্যবাদী ও দরিদ্র দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার নানা উজর খোঁেজ । দ্বিতীয় আর্ন্তজাতিক আন্দোলনের শোধনবাদী চক্র প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের অনুকুলে ভোট প্রদান করছিল ফ্রান্সের সাম্যাজ্যবাদকে বিজয়ী করার জন্য, এর উদ্দেশ্য ছিল না ফ্রান্সের ধনীক শ্রেণীকে সহায়তা করা বরং উদ্দেশ্য ছিল শ্রমিক শ্রেণীকে সহযোগীতা করা । একইভাবে, র্জামানীর শোধনবাদীরা জার্মানকে বিজয়ী করেছিল সমগ্র জার্মান সমাজের স্বর্থে, বিশেষ করে শ্রমিক শ্রেণীর প্রয়োজনে । লেনিন এই সামাজিক সাম্যাজ্যবাদ ও সামাজিক ফ্যাসিজমের কঠোর সমালোচনা করেছিলেন । আজ প্রথম বিশ্ববাদ সামগ্রীকভাবে সামাজিক সাম্রাজ্যবাদ ও সামাজিক ফ্যাসিবাদের রূপ পরিগ্রহ করিয়ছে । এই শোধনবাদীদের প্রধান উদ্দেশ্যই হলো সংস্কার আধন করা । শোধনবাদীদের যুক্তি হলো যেহেতু রাষ্ট্র প্রাকৃতিক বা প্রায় প্রাকৃতিক তাই তাকে আইনানুগ ভাবে বা র্পালামেন্টারী পদ্ধতীতে ক্রমে দখল করা যেতে পারে । অন্যকথায়, তাদের ভাষ্যমতে প্রচলিত রাষ্ট্র কোন শোষন যন্ত্র নয় ; তারা বিশ্বাস করেন যে, রাষ্ট্রকে নিবার্চন এবং লবিং এর মাধ্যমে অর্জন করা যেতে পারে । এই মতানুসারে প্রচলিত রাষ্ট্র কাঠামোতে ক্রমসংস্কারের মাধ্যমে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব । লেনিন বলেছেন সংস্কার পন্থীদের ধারনায় যে সমাজতন্ত্রের কথা বলা হয় তা প্রকৃত অর্থে সমাজতন্ত্রই নয় । সংশোধনবাদীরা লাল পতাকা দিয়ে লাল পতাকা প্রতিরোধ করতে চায়, সমাজতন্ত্র সর্ম্পকে তাদের যে ধারণ, তাতে তারা প্রলেতারিয়েতের একনায়তন্ত্র কায়েমের পরিবর্তে, প্রলেতারিয়েত ও সাম্রাজ্যবাদীদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে চায় । ইহা সমাজতন্ত্রের পর কমিউনিজমের স্তরকে অস্বীকার করে। সংশোধনবাদীরা দুনিয়াজোড়া প্রলেটারিয়েট শ্রেণীর ভূমিকাকেও মানতে চায়না । তারা কমিউনিষ্ট রাজনীতির বিকাশ চায় না, বিপ্লবী বিজ্ঞান এবং পরিকল্পিত সমাজ ব্যবস্থা । এই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি ইতিমধ্যে বেশ কিছু সংস্কারবাদী ও সামাজিক গণতন্ত্রী ও উদারপন্থী প্রকাশ করেছেন ।
মহান উক্ত দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি পোষন করতেন । লেনিন কার্ল মার্কসের দর্শন প্রলেতারিয়েতের একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠার ধারনা পোষন করতেন । মার্কস এক সময় বলেছিলেন রাষ্ট্র হলো “সশস্র মানুষের একটি সংস্থা” অবশ্যই রাষ্ট্র এর চেয়ে ও বেশী কিছু, কিন্তু মার্কসের এই মন্তব্য রষ্ট্রের সন্ত্রাসী দিকটাই বেশী তুলে ধরেছে মূলতঃ, শ্রেণী নিপিড়ণ করা ও রাষ্ট্রের একটি গুরুত্ব পূর্ণ বিষয় হিসাবে বিবেচিত হয়ে থকে । রাষ্ট্রকে এসব থেকে পৃথক করা মুশকিল । মহান লেনিন ও তা ভালো ভাবেই বুঝতে পেড়েছিলেন । তিনি রাষ্ট্রকে একটি উৎপিড়ক যন্ত্র হিসাবে দেখতেন, যা একটি শ্রেণী অন্য আরেকটি শ্রেণীকে শোষন করতে একে ব্যবহার করে। প্রচলিত রাষ্ট্র সমূহকে প্রতিক্রিয়াশীল গৌষ্ঠী তাদের প্রয়োজনে ব্যবহার করে থাকে । পুরাতন পদ্ধতীর রাষ্ট্র সমূহ কোন প্রাকৃতিক সংস্থা নয় যেখানে পরস্পর বিরুধী শ্রেণী মিলিত হতে পারে, তাদের ভিন্নমতামত প্রদান করতে ও তা কার্যকরী করত পারেন । প্রচলিত রাষ্ট্র সমূহকে কোন ভাবেই মৌলিক ভাবে সংস্কার করে সমাজতন্ত্র কায়েমকরা সম্ভব নয় । লেনিন পরিস্কার ভাষায় ঘোষনা করেছেন যে, একটি রাষ্ট্র একই সময়ে প্রলেতারিয়েত ও প্রতিক্রিশীলদের জন্য হতে পারে না ; একটি রাষ্ট্র অবশ্যই হয় বন্ধু , নয় শত্র“ হিসাবে বিবেচিত হবে ।
মহান লেনিনের ধারণাটি বিপ্লবী কার্যক্রমের জন্য অতীব গুরুত্ব পূর্ণ বিষয় । একটি মজার গল্প চালু আছে, এক ব্যাক্তি একটি জাহাজ থেকে তার সোনা বর্ত্তি একটি থলে সমূদ্রে ফেলে দেয় এবং নিজেই আবার তার পিছু পিছু পানিতে লাফ দেয় এবং ঢোবদিয়ে সোনার থলে টি ধরে ফেলে । এখন প্রশ্ন হলো সেই লোকটি সোনা পেল নাকি সোনা তাকে পেয়েছে ? প্রতিক্রিয়শীল রাষ্ট্রের অবস্থা অনেকটা এইরূপই । এমনকি পুরাতন রাষ্ট্র কাঠামোতে কোন কোন সময় যদি কোন বিশেষ প্রগতিশীল শক্তি রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব অর্জনও করে তবু তারা রাষ্ট্রের প্রকৃত র্কতৃত্ব লাভ করতে পারেন না । বরং রাষ্ট্রই তাদেরকে বিনাশ করে ফেলে । তারা রাষ্ট্রকে দখল করেনা বরং রাষ্ট্রই তাদেরকে দখল করে ফেলে । পুরাতন রাষ্ট্র ব্যবস্থা তার নিজস্ব প্রক্রিয়াগত কারণেই প্রগতিশীল আদর্শকে রূপান্তরিত করে ফেলে এবং নিজ আদর্শে বিপরীত দিকে টেলে নিয়ে যায় । তারা আদর্শের বিকাশে তো কোন প্রকার ভূমিকা রাখতেই পারেন না বরং তারাই পুরাতন রাষ্ট্রের অংশে পরিনত হয়ে পড়েন । পুরাতন রাষ্ট্র কাঠামো কেবল মাত্র বিপ্লবীদের দ্বারা পরিচলিত হওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে এমনটি ও নয় । পুরাতন রাষ্ট্র কেবল মাত্র দখল করাই যথেষ্ট নয় বরং এটাকে ঘুড়িয়ে দিতে হবে । তাকে ধ্বংস করতেই হবে । পুরাতন শক্তিকে পালাতেই হবে ;আর সেই স্থান দখল করবে আমাদের নতুন শক্তি ।
মহান মার্কস লিখেছেন পুরাতন সমাজের গর্ভেই নতুন সমাজের জন্ম হয় । পুরাতন সমাজের মাঝেই নতুন শক্তি তারই অংশ হিসাবে নতুন মডেল স্থাপন করবে । স্বল্প সময়ের জন্য হলে ও সমাজে নতুন শক্তি ও পুরাতন শক্তি পাশা পাশি অবস্থান করবে । আর সে জন্যেই লেনিন এই ঘটনাকে দ্বৈত শক্তি হিসাবে অভিহিত করেছেন । এই নতুন শক্তি নিপিড়িত মানুষের স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসাবে তৈরী হবে । এই নতুন শক্তি সমাজের অন্যান্য গণ সংগঠন গুলোর সাথে সমন্বয় সাধন করবে, কমিউনিষ্ট পার্টি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হবে, এবং চূড়ান্তভাবে পুরাতন শক্তির বিনাশ সাধন করে সমাজে নতুন শক্তি গড়ে তুলার জন্য কাজ করবে । লেনিনের সময় কালে নতুন শক্তির প্রধান অঙ্গ ছিল সৌভিয়েত, বা শ্রমিক পরিষদ । লেনিনের নেতৃত্বাধিন বলশেভিকগণ পুরাতন রাষ্ট্র কাঠামোর আওতায় যৌথ সরকার গঠনের আহবানকে প্রত্যাখান করে তার পরিবর্তে সকল নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব সৌভিয়েতের নিকট হস্থান্তরের দাবী জানিয়েছিলেন ।
নোতুন শক্তির ধারণার বিকাশ ঘটে সৌভিয়েত কর্মকান্ডের অভিজ্ঞতা থেকে এবং তা প্রয়োগ করা হয় পরবর্তী মহান বিপ্লবের সময় কালে আর তা ছিল মহান মাও সেতুং এর নের্তৃত্বে চিনের বিপ্লবের সময় । মাও এর বিপ্লবের পথ লেনিন এর পথ থেকে কিছুটা ভিন্নতর । মার্কসের সময়কাল থেকেই সাম্রাজ্যবাদী দেশ থেকে বিপ্লব উপনিবেশিক দেশ গুলোর দিকে পরিচালিত হয়ে আসছে । বলশেভিক বিপ্লব সংগঠিত হয়েছে তুলনামূলকভাবে কম শক্তিশালী সাম্রাজ্যবাদী দেশে । এই জারতন্ত্রী রাশিয়ার প্রভাব প্রতিপত্তি ও তেমন ছিলনা । এমন কি লেনিনের সময় কালে ও বিপ্লব সম্রসারিত হচ্ছিল উপনিবেশ দেশের দিকে । চিনের জনগন মাও এর নের্তৃত্বে মহান বিপ্লব সফল করেন । যদিও চিনের আর্থসামাজিক অবস্থা ছিল অনেকটাই ভিন্নতর । মাও সময় উপযোগী কাজ করেন এবং বিপ্লবের বিজ্ঞান প্রয়োগ করেন এবং চলমান অবস্থায় নতুন শক্তির প্রয়েগ করে পরিস্থিতির উত্তরন ঘটান । চিনে দেশের কর্তৃত্ব ও নেতৃত্ব দলখলের পথছিল জনযুদ্ধেও পথ । যা গ্রাম থেকে নগর পানে অগ্রসর হয়েছিল । উদ্দেশ্য ছিল দ্বৈত নেতৃত্ব প্রতিষ্টা করা । লাল ফৌজ বিভিন্ন এলাকা দখল করে এবং পুরাতর শক্তির বিনাশ ঘটিয়ে নতুন শক্তির প্রতিষ্ঠা করেন । সেখান থেকে ক্রমান্নয়ে তারা ভৌগলিক ভাবে নতুন শত্তির বিস্তার ঘটাতে থাকে । তখন পুরাতন শক্তি গুলো শেষ উপায় হিসাবে শহর গুলো বেছে নেয় তাদের আশ্রয়ের জন্য । ফলে বিপ্লবীগণ শহরের সকল যোগাযোগ বন্ধকরে দেয় তাদের চুড়ান্ত পরাজয় নিশ্চিত করার জন্য । ভৌগলিকভাবে নতুনশক্তি প্রতিষ্টার এলাকাগুলোকে মাওবাদের পরিভাষায় বলাহয় “ভিত্তি এলাকা ” অথবা “রেড জোন” ।
এই রেড জোনে নতুন শক্তির বিকাশ ঘটানো হবে । নিপিড়িত মানুষের জন্য মুক্ত স্বাধীন প্রতিষ্টান গড়ে তুলা হবে । একটি রাষ্ট্রের নতুন মডেল তৈরী করা হবে । ইহার হেফাজতে থাকবে গণবাহিনীর সদস্যরা, একটি শক্তিশালী গণ লালফৌজ । জনগনের জন্য বিদ্যালয়, বিদ্যা অর্জনের সহজ পথ, আমরা নতুন সংস্কৃতি গড়ে তুলব । আমরা নতুন সমাজের নতুন মডেল প্রর্দশন করব । আমরা সাধারণ জনগণের বিদ্যা র্অজনের জন্য বিদ্যালয় গড়ে তুলব । আমরা বিপ্লবী সংস্কৃতি তৈরী করব । নতুন শিল্প, নতুন সংগীত, নতুন নৃত্য চালু করব । আমরা গণ আদালত তৈরী করব । আমরা গণ কমিিট গড়ে তুলব । আমরা নতুন ও যৌথ র্অথনীতি চালু করব । আমরা আমাদের পরিবেশ ও প্িরতবেশের সাথে নতুন সর্ম্পক সৃষ্টি করব । আমরা জনগনের সেবক হব । আমরা আমাদের সকল সমস্যার সমাধান করব । আমরা বিপ্লব বাচঁব । আমাদের গড়ে তুলা লাল এলাকা গুলো বিশ্বের নিপিড়িত ও শোষতি মানুষগুলোর আশার প্রথকি হয়ে উঠবে । আমরা প্রথমে কোন এলাকা, এর পর দেশ এবং এর পর সমগ্র দুনয়িায় বিপ্লব সাধনের জন্য এগিয়ে যাব ।
কমরেড লিন বিয়ও হান মাওয়ের বিপ্লবী ধরণাকে আরো প্রসারিত ও উন্নত করেছেন। লিন বিয়ওি বলেছেন, একন ব্যাক্তির মুক্তির লড়াই সমগ্র দুনিয়ার বৃহত্তর লড়াইয়েরই অংশ । মাওয়ের যনযুদ্ধ গ্রাম থেকে নগর পানে এগিয়ে গিয়েছিল । সেই ভাবে বিশ্ব জনযুদ্ধ ও গ্রাম সমূহের লড়াই বিশ্ব নগর সমূহ দখলের জন্য এগিয়ে যাবে । এবং বিশ্ব ব্যাপী সমাজতান্ত্রিক দেশ সমূহকে রেড জোন হিসাবে বিবেচনা করা হবে এবং যেদেশের যে অংশটুকু মুক্ত হবে তাও সেই ভাবেই বিবেচিত হবে । লিন বিয়াও বিপ্লবী প্রক্রিয়াকে দেখেছেন ভৌগলিকভাবে নতুন শক্তির স¤প্রসারণ হিসাবে, একরে পর এক সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে রেড তৈরী করে দুনিয়া জোড়া সমাজতান্ত্রিক বিশ্ব বিনির্মাণ করার পটভূমি তৈরী করা । যার ফল স্বরূপ সমগ্র প্রথম বিশ্ব বাধ্যহবে এই বিপ্লবী রেড জোনের কাছে আত্ম সমর্পণ করতে। জন যুদ্ধের মাধ্যমে প্রথমে প্রথমবিশ্বকে অবরোদ্ধ করা হবে এবং চূড়ান্তভাবে তাকে পরাজিত করা হবে ।
আসছে বছর গুলোতে, আমরা পরবর্তী বিপ্লবের তরঙ্গ তৈরীর জন্য কাজ করছি। এই বিপ্লবী ধারণাটি ইতিমধ্যে স্বীকৃত ও সমাদৃত হয়ে এগিয়ে চলছে । বিশ্ব পল্লীর বিকাশের সাথে সাথে বিশ্ব বস্তির স¤প্রসারণ হচ্ছে, এবং স্বভাবতই নতুন শক্তির ও ধরণ প্রকৃতি পরিবর্তিত হচ্ছে । অতীতের রেড জোনের থেকে অবশ্যই আগামী দিনের রেড জোনের পার্থক্য সহজেই দৃশ্যমান হবে । তারা রাষ্ট্র যন্ত্রের প্রতিটি স্তরে প্রযুক্তির প্রয়োগ করবেন । অধিকন্ত, বিপ্লবীগণ নতুন শক্তির প্রয়োগ যথাযতভাবে সম্পাদনের জন্য তথ্যপ্রযুক্তির বিষয়টি অতি গুরুত্বের সাথে কাজে লাগাবেন । আগামী দিনের নতুন শক্তি কেবল মাত্র ভূমিতে বা ভৌগলিকভাবে প্রয়োগ করা হবেনা বরং তা মহাকাশে ও বিরাজ করবে ।
এই গুরুত্বপূর্ণ মহান অভিজ্ঞতা ইতিহাসের ধাপে ধাপে আমরা অর্জন করেছি। সামনে এগোনোর জন্যই আমাদেরকে অতীত থেকে জ্ঞান আহরন করতে হবে । পদে পদে প্রতি পদে,লিডিং লাইট বিজ্ঞান ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োগ করবে । বিশ্বের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কেবল মাত্র লিডিং লাইটের কাছেই প্রতি পদে, প্রতি স্তরে বিপ্লবের জন্য বিজ্ঞান প্রয়োগের প্রযুক্তি রয়েছে । লিডিং লাইট কমিউনিজমই আজ বিপ্লবের উচ্ছতর চিন্তাভানা ধারণ করছে । আর এটা হলো একটি যুগান্তকারী উদ্দোগ । সত্যিকার কমিউনিজমের জন্য আমরা লিডিং লাইটকে অনুসরণ করব । আমরা বিজয়ী হলেই বিপ্লবী বিজ্ঞানকে যথাযথ ভাবে প্রয়োগ করব একটি নিদ্দের্শিকা হসাবে । মেহেনতী মানুষের জয় হোক ! অনুবাদ ঃ একেএম শিহাব ।
Occasionally, some of your visitors may see an advertisement here.