পুঁজিবাদ পরিবেশ গত সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে সম্পুর্ন অক্ষম। পুঁজিবাদ তো বৃদ্বি পায় কেবল মুনাফা অর্জনের মাধ্যমে। ইহার মূল মন্ত্র মানুষকে সেবা করা নয়। পুঁজিবাদের নিকট মানুষ এবং পরিবেশ কোন বিবেচনার বিষয় নয়। পুঁজিবাদের ভিত্তিটাই হলো বাজের চাহিদা পুরন করা। মানুষের চাহিদার কাছে বিবেচ্য বিষয় নয়। পুঁজিবাদের উৎপাদন প্রক্রিয়ায় চলে একটি নৈরাজ্যিক অবস্থা, মানুষের দুঃখ মোচন করা তাঁর কাজ নয়। বিলিয়ন বিলিয়ন মানুষ দাবী জানাচ্ছে একটি আমূল পরিবর্তনের জন্য। কেবল মাত্র সামাজতন্ত্র ও সাম্যবাদই একটি সূ সম উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে যাতে মানুষে ও পুরিবেশের অনিষ্ট কমবে – সকলের জন্য হবে কল্যাণকর। যখন সাধারন মানুষ তাঁদের জীবনের নিয়ন্ত্রন গ্রহন করবেন, তখন তাঁরা সকল কিছু যুক্তির আদলে বিচার বিশ্লেষণ করে গ্রহন করবেন। পরিবেশ গত সমস্যার সত্যকার সমাধান তাঁরাই দিতে পারবেন। আর সেই সময় থেকেই শুরু হবে প্রথিবীর নতুন যাত্রা। বিশ্ব গনযুদ্বের পথে এর শুভ সুচনা হতে পারে। অন্যতায় আমাদের সামনে একটি মৃত পৃথিবী অপেক্ষা করছে। আমরা কি তা চাই ? অবশ্য না । #শিহাব
প্রথম বিশ্বের কর্মকান্ডের কারনে তৃতীয় বিশ্বের হিমবাহ কমে যাচ্ছে !
(llbangla.org)
সম্প্রতি বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে নেদারল্যান্ডের গবেষক দল অভিমত প্রকাশ করে বলেছেন যে, ৬০ মিলিয়ন লোক হিমালয় পর্বতের আসে পাশে বসবাস করে থেকেন। তাঁরা আগামী দশকেই খাদ্য ও পানীয় জলের সংকটে পরবেন। হিমবাহের সঙ্কুচনের কারনে পানি প্রবাহ কমে যাবে – পানির অভাবে ফসল ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। ২০৫০ সালের মধ্যে গঙ্গা ও ব্রহাম্মপুত্র নদের দক্ষিন এশীয় উপত্যাকায় পানির পরিমান ১৯.৬ % কমে আসবে। অধিকন্ত জলবায়ুর পরিবর্তনের কারনে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, বাংলাদেশ, ভূটান ও চীনের পরিবেশ গত ব্যাপক পরিবর্তন আসবে।
বৈজ্ঞানিকগন এ বিষয়ে একমত যে, হিমবাহের সঙ্কোচন বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্বির ক্ষেত্রে উল্লেখ যোগ্য ভূমিকা রাখবে। অধিকাংশ বিশেজ্ঞ এই মত ব্যাক্ত করেছেন যে, ভূ-ভাগ উত্তপ্ত হওয়ায় গ্রীন হাঊজ ক্ষতিগ্রস্থ হতে – কার্বনডাই অক্সাইড বৃদ্বি পাওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। বর্তমান বিশ্বে ৯০% এর ও বেশী হিমবাহ কমে গেছে। এর অধিকাংশ কমেছে আলাস্কায়, আল্পসে, আন্দ্রিজে এবং অন্যান্য পর্বত মালায়।
কিছু সামালোচক যেমন জংকিন লি, পরিচালক, তানশীয়ান হিমবাহ ষ্টেশন চীন। তিনি বলেন, আমাদের গবেষনা বলছে – মধ্য এশীয়া ও চীনের উত্তর পশ্চিমের বেশ কিছু হিমবাহ ইতিমধ্যেই বিলিন হয়ে গেছে। তাঁর মতে, হিমবাহের সঙ্কোচন পরিবেশে তেমন কোন প্রভাব ফেলবে না। এই ধরনের গবেষনা মুলত প্রকৃত সমস্যাকে আড়াল করার অপ প্রয়াস মাত্র। আরো একজন বিজ্ঞানী বলেছেন আগামীতে কি হবে তা এখন ই বলে দেয়া সম্ভব নয়। তা আমাদের সকলেরই অজ্ঞাত। তবে, প্রকৃত সত্য হলো নিরপেক্ষ গবেশনা বলছে, অত্র অঞ্চলের মানুষ খাদ্য ও পানীয় জলের সঙ্কটে নিপতিত হতে যাচ্ছে। এশিয়ায় জল বায়ুর পরিবর্তন জনিত সমস্যাটি দারিদ্র, পরিবেশ দুষন, অধিক জন সংখ্যা, বৃস্টিপাত কমে যাওয়া ইত্যাদী ওতপ্রোত ভাবে জড়িত।
ডাচ গবেষক দল লিখেছেন যে, “ আমরা ধারনা করছি কেবল মাত্র পানির অভাব জনিত কারনে অত্র এলাকার মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা ৪.৫ % কমে যাবে এবং আরো ঝুঁকি বৃদ্বি পাবে।
বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক মানুষ এখন পানির সঙ্কটের মুখোমুখী। প্রায় ১.১ বিলিয়ন মানুষ কেবল উন্নয়ন শীল দেশেই পানির অভাবের সম্মোখীন। ২.৬ বিলিয়ন মানুষ মৌলিক স্যানিটেশনের ওভাবে ভোগছে। প্রথীবীর প্রায় ৩ জনে ২ জন মানুষ নিরাপদ পানীয় জলের অভাবে আক্রান্ত যারা প্রতিদিন ২ ডলারের ও কম আয় করেন। আর ৩ জনের মধ্যে ১ জন মানুষ মাত্র ১ ডলার দিয়ে দিন গোজরান করেন। ৬৬০ মিলিয়ন মানুষ স্যানিটেশন ছাড়া জীবন যাপন করেন যাদের দৈনিক আয় মাত্র ২ ডলার। ৩৮৫ মিলিয়নের ও বেশী মানুষ মাত্র ১ ডলার দিয়ে দিনাতিপাত করেন। এরা সকলেই তৃতীয় বিশ্ব তথা দরিদ্র দেশে বসবাস করেন। বিশ্বের ২০% ধনী লোকদের মধ্যে ৮৫ % বাড়ীতে পাইপের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হয়। পক্ষান্তরে, ২৫% দরিদ্র মানষের মাঝে মাত্র ২০ % মানুষ পাইপের মাধ্যমে পানি পেয়ে থাকে। কেবল মাত্র ডায়রীয়া জনিত রোগে প্রতি বছর প্রায় ১.৮ মিলিয়ন শিশু মারা যায় । দরিদ্র দেশ গুলোর মোট লোক সংখ্যার প্রায় অর্ধেক লোক স্যানিটেশন ও পানিয় জলের অভাবে নানা প্রকার স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছে। মিলিয়ন মিলিয়ন নারী তাঁদের বহু মূল্যবান সময় কেবল পানি সংগ্রহের জন্য ব্যয় করছেন। ধনি দেশ গুলোর কারনে প্রতিদিন পানি দুষিত হচ্ছে। দরিদ্র দেশ গুলোতে এখন পানি একটি মূল্যবান পন্যে পরিণত হয়েছে।
একটি সাধারণ বিষয় হলো প্রথম বিশ্বে প্রতিদিন বিপুল পরিমান গ্রীন হাউজ গ্যাস উৎপাদন হচ্ছে । অথচ এর কু- প্রভাব জনিত পরিবেশ দুষনের শিকার হচ্ছেন তৃতীয় বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ। ইহা দিনে দিনে অধিক থেকে অধিকতর খারাপ অবস্থার দিকে যাচ্ছে। ৮০% মানুষ প্রতিদিন ১০ ডলারের ও কম আয় করে জীবন ধারন করেন। প্রথিবীর অর্ধেকের ও মানুষ ২.৫০ ডলার মাত্র আয় করে থাকেন। ২৪,০০০ হাজার শিশু প্রতিদিন কেবল দরিদ্রতা জনিত কারনে মারা যায়। তাঁদের প্রায় সকলেই দরিদ্র দেশের অধিবাসী। ২৭-২৮ % শিশু উন্নয়ন শীল দেশে সঠিক মানের চেয়ে কম ওজন নিয়ে বেড়ে উঠে। যা তাঁদের প্রতিভা বিকাশের ক্ষেত্রে অন্তরায়। এখন বিশ্বের ১ বিলিয়ন মানুষ পড়া লিখা জানেন না। বিপদ জনক ভাবে পৃথিবীতে প্রথম বিশ্ব ও তৃতীয় বিশ্বের মাঝে ব্যবধান বেড়েই চলছে। তাঁদের মাঝে ব্যবধান পরস্পরকে এক সর্বনাশা বিরুধের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তাঁদের মাঝে দ্বন্দ্ব প্রখর হচ্ছে। কেবল প্রথম বিশ্বকে বিলিন করে দিয়েই তৃতীয় বিশ্বের মুক্তির মিলতে পারে।
প্রথম বিশ্বের মানুষ বেশী খায় বেশী ভোগ করে। তাঁরা পুজিবাদকে ব্যবহার করে সংখ্যা গরিস্ট মানুষের মুখের গ্রাস কেড়ে নেয়। তাঁরা পুঁজিবাদের উপকার ভোগী। তাঁদের সীমাহীন ভোগ, বিলাসিতা, গাড়ী সংস্কৃতি তৃতীয় বিশ্বের মানুষের জীবনকে ঝুকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। প্রথম বিশ্বের বিলাসিতা আক্ষরিক অর্থেই দরিদ্র মানুষের মরন দশা ডেকে আনছে। হিমবাহ সঙ্কুচিত হবার সমস্যার চাইতে ও অধিক বিপদজনক সমস্যা হলো প্রথম বিশ্বের মানুষের বুর্জোয়া জীবন যাপনের ফলে বিলিয়ন বিলিয়ন মানুষের জীবন আজ নানা ভাবে আক্রান্ত।