প্রাকৃতিক বির্পযয় পুজিঁবাদের সৃষ্টি .. র্দুভোগ পোহাচ্ছে বাংলাদেশের মানুষ..

(llbangla.org)বাংলাদেশ হলো  দুনিয়ার দরিদ্রতম দেশের একটি । শত শত বছর এই দেশটি উপনিবেশবাদী শোষণ, অপউন্নয়ন, সাম্রাজ্যবাদ ও  সামন্তবাদ ইত্যাদীর দ্বারা এবং প্রতিবেশী দেশ গুলোর মাধ্যমে নিপিড়িত হয়ে এসেছে । সা¤প্রতিক ঘটনা প্রবাহ আবার প্রমান করেছে যে, পুঁজিবাদ এদেশের মানুষের কোন উপকারই করতে পারেনি । প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন, বণ্যা, তার সাথে মানুষের নানাহ প্রকার অসুস্থতা, কলেরা, ডেংগু, ম্যালেরিয়া অপুষ্টি এই দেশের মানুষের নিত্য সঙ্গী হয়ে আচ্ছে । সা¤প্রতিক এক তথ্যে জানা যায় কেবল মাত্র সোলকীয় গ্রামের প্রায় ৬০০ পরিবার বন্দও নগরী চট্রগ্রামে বাসস্থানের আশায় স্থানান্তরিত হয়েছে । একটি প্রতিবেদনে একে একটি মানবিক ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় হিসাবে উপস্থাপন করা হয়েছে ।

আবহাওয়াগত পরিবর্তন বহুমানুষকে স্থানচ্যুত করেছে এবং বন্দর নগরী চট্রগ্রামের পতেংগা ও হালি শহরের বিভিন্ন বাধেঁ বসবাস করতে বাধ্য করচ্ছে । মারাত্মক সামূদ্রিক জলোচ্ছাস এবং ভূমির ধ্বস তাদেরকে ভিটামাটি ছাড়া করেছে।

প্রতিবেদন আরো বলছে..

চরম দরিদ্র প্রায় ৫০টি পরিবার বিগত ৬ মাসে হালি শহর বেঁড়ী বাধেঁ আশ্রয় গ্রহন করেছে । এই প্রতিবেদক স¤প্রতি যখন ঐ এলাকা পরিদর্শনে যান তখন নাহিদা আক্তার (৩০) তাকে জানান যে, তাদের এক সময় একটি সুখি পরিবার ছিল, আর তাদের নিবাস ছিল হাতিয়া দ্বীপের চরভরতে । এখন তারা হালি শহর বাধেঁ মানবেতর জীবন যাপন করচ্ছেন ।সে আরো জানায় যে, ‘আমরা নদী ভাঙ্গনে বিগত ২ বছর আগে বাড়ী ঘর সব কিছু হারিয়েছি, এবং বাধ্য হয়েছি আশ্রয়ের আশায় চট্রগ্রামে চলে আসতে’।

নাহিদা বলছিল চট্রগ্রামে তাদেও কোন আত্মীয় স্বজন নেই ,বিগত ২ বৎসর যাবত সে এবং তার স্বামী ও তিন সন্তান এই বেড়ী বাধেঁ চরম দরিদ্র অবস্থায় দিনাতিপাত করছে ।

মুহাম্মদ শাহেদ আলী (৩০) তিনি মাত্র কয়েক দিন হলো চট্রগ্রাম শহরে এসেছে । তার প্রকৃত নিবাস ছিল নোয়াখালী জেলার হাতিয় দ্বীপে । নদীর করাল গ্রাসে তিনি ও তার বাড়ী ঘর সবকিছু হাড়িয়ে নিঃশ্ব হয়েছেন । তার গ্রামের নামছিল সোলাকিয়া, এটা চর কিং ইউনিয়নের অর্ন্তগত । এই গ্রামটি সম্পূর্ণরূপে নদীর ভাঙ্গনে হারিয়ে গেছে এবং প্রায় ৬০০ পরিবার তাদের আশ্রয়ের সন্ধানে চট্রগ্রামে চলে এসেছে।

এই দুর্যোগ ও উদ্বাস্থতার ধরন বলে দেয় যে, ইহা পজিঁবাদেরই ফলাফল ঃ

বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ বিরূপ পরিস্থিতির মোকবেলা করছে । যেমন- সাইকোন, জলোচ্ছাস,নদী ভাঙ্গন, বিপুল পরিমান বৃষ্টির কারনে ভয়াবহ বন্যা । ফলে গ্রাম থেকে মানুষ শহরে এসে দিনে দিনে ভীড় করছে বিপুল ভাবে ।  বেশীর ভাগ মানুষ আসছে চর ও দ্বীপ এলাকা থেকে ।সুনিল চন্দ্র, আজ থেকে ৩০ বছর আগে বাড়ীঘর হারিয়ে পতেঙ্গার হালি শহরে এসে বেড়ী বাদে বসবাস শুরু করেছিল, সে জানায় যখন সে চট্রগ্রামে এসে বসবাস শুরু করে তখন মাত্র কয়েকটি পরিবার সেখানে বাস করত কিন্তু এখ সেখানে পরিবারের সংখ্যা বৃদ্বি পেয়ে কয়েক হাজারে এসে দাড়িয়েছে । তারা সকলেই নিজেদের বাড়ী ভিট সহ ফসলের জমি সব কিছু হারিয়ে এখন বাধেঁর উদ্বাস্থ হিসাবে মানবেতর জীবন যাপন করছে ।

একজন স্থানীয় অধিবাসী জানান যে চট্রগামের উপকুলিয় বাধেঁ প্রায় ১০০০ পরিবারের ৪০০০ লোক বসবাস করছে । যা সেখানকার অর্থনীতির উপর বিশেষ চাপ তৈরী করেছে। তাদের জীবন যাপনের জন্য, আয়রোজগারের ও তেমন কোন ব্যবস্থা নেই । তারা চরম দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করছে ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশ প্রতিনিয়তই বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন, সাইকোন, ঘুর্নিঝড়, বন্যা ও নানা প্রকার মৌসুমী ঝড় দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকে । এছাড়া সমূদ্র পৃষ্ঠের উচ্ছতা বাড়ছে, ফলে উক্ত সাইকোন, ঘুর্নিঝড়, বন্যা ও নানা প্রকার মৌসুমী ঝড় ইত্যাদীর মাত্রা বেড়েই চলছে। স্বভাবতই, এই ব-দ্বীপটির মানুষ আগামীতে আরো বেশী মাত্রায় উদ্বাস্থ হবে, হারাবে তাদের গৃহ ও ফসলী জমি এবং গ্রাম ছেড়ে ভীর করবে শহর আর নগরে । বাড়বে দারিদ্রের হার ও ।

আই,পি,সিসি র মতে, বিশ্ব জলবায়ু উত্তপ্ত হওয়ার কারনে, যদি আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে সমূদ্র পৃষ্টের উচ্ছতা মাত্র ১ মিটার বাড়ে তবে বাংলাদেশের এক তৃতীয়াংশ ভূমি সাগর  জলে তলিয়ে যাবে।

এম. জহিরুল হক, নগর ব্যবস্থাপক, চট্রগ্রাম। তাঁর মতে, বিশ্ব জলবায়ু উত্তপ্ত হওয়ার কারনে বিপুল সংখ্যক জন সংখ্যা সমূদ্র উপকুলীয় এলাকা থেকে ভূমিচ্যুত হয়ে শহর ও নগর এলাকায় চলে আসতে বাধ্য হবে । যা শহরের দরিদ্র মানুষের হার বাড়িয়ে দিবে । আগামীতে বাড়বে দারিদ্রেও মাত্র ও । তাই সরকারের উচিৎ সময় পরিস্থিতি বিবেচনা করে অভ্যন্তরীন উদ্বাস্তদের যথাযত ব্যবস্থাপনার জন্য উপযোগী পরিকল্পনা ও কর্মসুচি গ্রহন করা ।

এই দুঃখজনক পরিস্থিতি নতুন কোন বিষয় নয় ; কিন্তু তা এড়ানো অসাধ্য নয় । প্রকৃতি বিশ্ব দারিদ্রতার জন্য এবং বাংলাদেশের দুর্যোগের জন্য  একমাত্র কারণ নয় । এখানে বহু লোক বিলামবহুল জীবন যাপন করছেন আবার কিছু মানুষ মানবেতর ভাবে কোন রকম বেচেঁ আছেন। আর এর প্রধান কারণই হলো এখানকার সম্পদ ও নেতৃত্ব পুজিঁবাদী ব্যবস্থায় সংগঠিত ও পরিচালিত হচ্ছে ।

তৃতীয় বিশ্বের ও বাংলাদেশের গরীব মানুষ পজিঁবাদের কাছে মানুষ্য হিসাবেই গন্য হন না । বরং তারা তাদেরকে আয় রোজগার ও মুনাফা অর্জনের যন্ত্র হিসাবেই বিবেচনা করে থাকে । দারিদ্রতা পুজিঁবাদেরই অনিবার্য ফল । পুজিঁবাদী ব্যবস্থাটাই গড়ে উঠে সীমাহীন মুনাফার উপর ভর করে । পুজিঁবাদ গড়ে উঠেনি মানুষের সেবা করতে বা পৃথিবীকে বাচাঁনোর জন্য । পুজিঁবাদ প্রাকৃতিক প্রয়োজন ও মানুষের চাহিদার বিষয়টি কে যৌক্তিক ভাবে বিবেচনা করে না । বরং সমাজ সামাজিক স¤প্রীতি বজায় রাখা, প্রকতিকে বাচিঁয়ে রাখা এবং দারিদ্রদেরকে দুর্যোগ তেকে বাচঁনোর পরিকল্পনা করে থাকে । এই পরস্থিতিকে কার্ল র্মাক্স পুজিঁবাদী উৎপাদন ব্যবস্থার একটি নৈরাজ্যিক অবস্থা হিসাবে বণর্ণা করেছেন । কারন এই ব্যবস্থায় গরীব জনগণ তাদের প্রান হারান নানা প্রকার দুর্যোগ দর্বিপাকে কেননা পুজিবাদীরা এই পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তারা গড়ে তুলেন না । বাস্তবতা হলো এই ধরনের বিপর্যয়  হলো হাজার বছর ধরে ধনীলোকদের দ্বারা অবিরত অবহেলার ফল । আর তারাই হলো সামন্তবাদী, পুঁজিপতি, ও প্রথম বিশ্ববাদী । সর্বদাই তারা প্রলেটারিয়েট, গরীব মানুষ ও তৃতীয় বিশ্বের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব ধারণ ও প্রকাশ করেছেন । আরো বাস্তবতা হলো যে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ যতটা না প্রাকৃতিক কারণে  তার চেয়ে ও বেশী হলো মানব সৃষ্ট কারণ । আর এই ধরনের  বিপর্যয় সৃষ্টি গরীবদের প্রতি ধনীক শ্রেণী গুরুতর অপরাধ । সংশোধনবাদী, আর্ন্তজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো, প্রতিক্রিয়াশীল রাষ্ট্র, এবং পুঁিজপতিরা তাদের সৃষ্ট ব্যবস্থাকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য দায়ী করতে রাজী নয় । বরং তারা মিথ্যা তথ্য প্রচার করে এবং বলে এটাই নাকি স্বাভাবিক ব্যবস্থা । তারা পরিবেশ কে বাচঁনোর জন্য কোন প্রকার বাস্তব সম্মত ব্যকস্তাই গড়ে তুলেনি  । পুঁজিবাদ তার প্রকৃতিগত ভাবেই ধনীক শ্রেনীকে সেবা করে থাকে ; অন্যদিকে শোষণ কওে গরীব মানুষকে। পুজিঁবাদী দৃষ্টিভঙ্গিই হলো তারা সবসময়ই ভালো কাজ কওে থাকে এমন কি গরীব মানুষকে জবাই করলে ও ।

বিপবই হলো প্রকৃত সমাধান । গরবি মানুষদেরকে ধনীক শ্রেনরি পরিবর্তে নেতৃত্বে আসীন করা, তৃতীয় বিশ্বকে প্রথম বিশ্বের বিপরীতে শক্তিশালী করা, আমরা কেবল আশা করতে পারি একটি নতুন সমাজ গড়ে তুলে, যা হাজার হাজার বছর ধরে চলে আসা ভূল ত্র“টিগুলো সংশোধন করে অবহেলিত জাতি গুলোকে প্রকৃতিক বির্পযয় থেকে বাচাঁবে। আর রহিত করবে অপউন্নয়ন ব্যবস্থার । প্রাগ্রসর বিপবী বিজ্ঞানের ধারক লিডিং লাইট কমিউনিজম প্রতিষ্টার মাধ্যমে বিশ্বে ন্যায় পরায়নতা, ন্যায় বিচার এবং ঠেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করে গণমানুষের আশাকে জাগিয়ে তুলতে পারে। সকল মতা ও শক্তি তৃতীয় বিশ্বের গরীব মানুষের জন্য এবং তাদেরই হাতে ন্যাস্ত হোক  | একেএম শিহাব ।

Leave a Reply