(llbangla.org)
দুর্নীতির ধানব আজ আমাদের দেশটিকে ক্রমে গ্রাস করছে। ইহা প্রতিদিন বেড়েই চলেছে। ২০০০ সালের সূচনা থেকেই বাংলাদেশ পর পর পাঁচ বার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পীয়ন হয়েছে। এখন ও এই দেশটি দুনিয়ার সব চেয়ে বেশী দুর্নীটি গ্রস্থ দেশ গুলোর মধ্যে একটি। বাংলাদেশের ৬৬% মানুষ মনে করেন বিগত দুই বছরে দুর্নীতি আরো বেড়েছে। ৯৩% মানুষ মনে করেন দেশের রাজনৈতিক দল গুলো দুর্নীতি গ্রস্থ। একই সংখ্যক মানুষ মনে করেন দেশের পুলিশ, বিচার বিভাগ, আমলা, সাংসদ, স্বাস্থ্য বিভাগ, শিক্ষা, সংবাদ মাধ্যম, এন জি ও এরা সকলেই কোন না কোন ভাবে দুর্নীতিতে নিমজ্জিত।
“৫৫% উত্তর দাতা বলেছেন সরকারী বিভাগ গুলোই বেশী দুর্নীতি আক্রান্ত, এদের মধ্যে ৬৪% বলেছেন পুলিশ বিভাগ বেশী খারাপ অবস্থায় আছে। ৯০% মানুষ মনে করেন সরকার সমাজের বিশেষ একটি শ্রেণীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে দেশ চালায়। গবেষনা প্রতিস্টান তথ্য দিচ্ছে যে, ৭২% মানুষের মতামত হলো দেশের নীতি নির্ধারকগন এবং ৬৩% বলেছেন বিচার বিভাগ, ৪৪% মানুষের মত হল যারা লাইচেন্স, পারমিট দেয় উরা সকলেই দুর্নীতি দ্বারা আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। এছাড়া, স্বাস্থ্য বিভাগ, শিক্ষা বিভাগ, সেবা খাত ও কর বিভাগ দুর্নীতি থেকে মক্ত নয়”।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশী দৃশ্য মান যে বিয়োগান্তক ঘটনাটি ঘটেছে তা হলো আমাদের গরীব অসহায় ভাই বোনদের সাথে। যারা প্রথম বিশ্বের মানুষের জন্য পোশাক তৈরী করত। যারা দাসের মত খেঁটে জীবন যাপন করত। ২০০৫ সালের ভবন ধসে ৬৪ জন মারা গিয়েছিলেন। সেই ভবনের মালিকের কোন শাস্তি হয়নি। এর পর ২০১২ সালে তাজরিন ফ্যাসন গার্মেন্টসে মারা গেলেন ১১৭ জন, ২০১৩ সালে সাভারে রানা প্লাজায় মারা গেলেন ১,১০০ জন।এই দুর্ঘটনার জন্য ও দুর্নীতিকে দায়ী করা হয়। রানা প্লাযার মালিক এক জন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা নাম তাঁর সোহেল রানা। তাঁকে ভবন নির্মানের জন্য মাত্র তৃতীয় তলা পর্যন্ত অনুমোদন দেয়া হলে ও তাঁর প্রভাব খাটিয়ে তিনি এক বিশাল ভবন নির্মান করে ফেলেন। তাঁকে এই ভবনে শ্রমিকদেরকে কাজ না করানোর জন্য সাবধান করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি তা মানেন নাই। ফলে আস্ত ভবনটি ধসে পড়ে। পরিনামে আমাদের শ্রমিক ভাই বোনেরা প্রান দেয় । তারা শিকার হন একজন দুর্নীতিবাজ পুজিপতির লালসার। শ্রমিকরা প্রান দিল একজন দুর্নীতি বাজ নেতাকে টাকা ওয়ালা বানাতে। যার সাথে যুক্ত আছেন দুর্নীতি গ্রস্ত পুলিশ, দুর্নীতি গ্রস্থ আমলা প্রশাসন, আদালত, কতিপয় এনজিও, ইসলাম পন্থীরা ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তির প্রতিনিধি চক্র।
এই অবস্থা চলছে আমাদের পল্লী অঞ্চলে ও। আমাদের ফসলের জমি কেড়ে নিচ্ছে। আমাদের লোকদেরকে মারছে, লাঞ্ছলা ও নির্যাতন করছে। আমাদের সকল কিছু লোটে নিচ্ছে। কোন বিচার নেই । বর্তময়ান ব্যবস্থায় নেই কোন নিরাপত্তা। এক সেচ্ছা চারিতার জগদ্দল পাথর আজ আমাদেকে চেপে ধরেছে। আমাদের গবেষনা বিভাগ বলছে – পশ্চিম বঙ্গ সহ সমগ্র ভারতে আমাদের শ্রমিক, ক্ষুদ্র কৃষক, ও দরিদ্র জনগণ সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। আর এই নিপিড়নের মুল হোতা হলো পুজিবাদি রাষ্ট্র কাঠামো ও সাম্রাজ্যবাদী তোষনের নীতি। প্রকৃত গণতন্ত্রের অনুপস্থিতি।
এই দেশে প্রচলিত প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দল আ,লীগ, বিএনপি, জামাত এরা সকলেই সেই ভয়ংকর ধানবের এক একটি চাহেরা মাত্র। তারা সাম্রাজ্যবাদের ও প্রতিনিধিত্ব করে। আমরা সূ বিচার চাই কিন্তু ধানব শুনে না রাখতে চায়। এই ব্যবস্থা বজায় রেখে আমাদের সত্যিকার কোন পরিবর্তনই আসবেনা। তাই আমাদের দরকার হলো নতুন ব্যবস্থা আনয়ন করা, বিপ্লবী শক্তির বিকাশ ঘটানো, লিডিং লাইট শক্তির প্রয়োগ করা। আমরা আমাদের সমাজের মাঝেই আমাদের বিকশিত করা ও পরিচালনা করার জন্য সকল কিছু করতে পারি। আমরা জন আদালতের সৃজন করতে চাই – যেখানে আমাদের কথা শোনা হবে। যেখানে সত্যিকার সুবিচার হবে। আমরা সত্যিকার বিচার পদ্বতীও চাই। কোন প্রকার ঘুষ নয়, আতাত নয়, কোন বিনাবিচারে খুন বা গুম নয়। আর অমানবিক মারপিট নয়– চাই আইনের শাসন। আমরা আময়াদের গনবাহিনীকে শক্তি শালী করতে চাই। তারা ভুমি উদ্দার করবে। সাধারণ মানুষের জীবনে সুখ শান্তি ফিরিয়ে দেবে। একা একা আমরা শক্তিহীন, আমরা মিলিত হব, ঐক্য গড়ব, সংঘটিত হব তা আমাদেরকে শক্তিশালী করবে। লিডিং লাইট হলো ন্যায় বিচারের তরবারী। ইহা আমাদের ধারালো তরবারী যা অন্যায়কে কেটে টুকরো টুকরো করে দেবে।
হাতে নাও সেই ন্যায়ের তরবারী- আমাদের সন্তানদের জন্য, তাদের সন্তানদের জন্য-আমাদের সকল মানুষের জন্য। আমারা ই আমাদের ভবিষ্যৎ গড়তে পারি। আর কেউ নয়।#শিহাব