(llbangla.org)
বাংলায় সামন্তবাদ,পুজিবাদ এবং সাম্রাজ্যবাদ একাকার হয়ে এক বিচিত্র বর্বরতার ব্যবস্থা সৃষ্টি করেছে। এখানে কি চলছে ? আধুনিকতার নামে সামন্তবাদি শোষনের মচ্চব ও নিয়ন্ত্রনের খড়গ চলছে বাংলার জনপদে। বহু জাতিক কোম্পানি, নয়া উদারতাবাদি গুষ্টি, কমিশন ভোগী রাষ্ট্র, এন জি ও দের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নেট ওয়ার্ক এরা সকলেই সাম্রাজ্যবাদের পক্ষে এই অঞ্চলের মানুষকে শোষণের জন্য তাদের সম্পদ লুন্ঠনের জন্য সদা কাজ করে যাচ্ছে। এই সকল প্রতিস্টান গুলো আদতে সাম্রাজ্যবাদের সংস্থা হিসাবে ভুমিকা পালন করে চলেছে। তাদের কার্যক্রম ভৌগলিক সাম্রাজ্যবাদিদের সাথে মিশে উৎপাদন পদ্বতী ও প্রতিস্টান গুলোকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়। তারা কখনও কখনও আধুনিক পদ্বতি অনুসরন করে থাকে সাম্রাজ্যবাদিদের স্বার্থেই। নয়া উদারতাবাদি পুঁজিবাদের সাথে সাথে ধর্ম ও সামন্তবাদ পাশাপাশি অবস্থান করে। এরা মুলত একই মুদ্রার এপিট ওপিট। তাদের এই ভুমিকার কারনেই বাংলার মানুষ অসহনীয় ও অমানবিক জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন।
বাংলা অঞ্চলটি আসলেই দুনিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশী ঘন বসতি পুর্ন এলাকা। এখনকার জিএনপি মাত্র ৫২০ ডলার/৪০,২২২ টাকা (প্রতিজন)। ক্রয় ক্ষমতা মাত্র ১,৪৪০ ডলার। বাংলার বেশীর ভাগ শ্রমিক অনানুস্টানিক কাজে নিয়োজিত আছেন। কম আয়ের চাকুরীতে নিয়োজিত আছেন। তাদের উৎপাদন দক্ষতাও তুলনামূলক ভাবে কম। শতকরা ২৬ ভাগ মানুষ অর্থাৎ ১৫০ মিলিয়ন মানুষ প্রতিদিন মাত্র ২ডলার/১৫৫ টাকায় জীবন ধারন করেন। প্রায় আশি ভাগ মানুষ পল্লী এলাকায় বসবাস করে থাকেন। খামার ভিত্তিক কার্যক্রমের সাথে জড়িত আছেন প্রায় ২০% মানুষ আর ৪৪% মানুষ জড়িত আছেন কৃষি কাজে। এখন এখানে ব্যাপক হারে ভূমিহীনতা বাড়ছে। দরিদ্র জনগণের মাঝে প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে মাত্র চার জনই আধা একর জমির মালিকানা নিয়ে কোন মতে ঠিকে আছেন। এই জন পদের বহু মানুষ আছেন যাদের এক ইঞ্চি জমি ও নেই। ভুমিহীন, ক্ষুদ্র চাষিদের অনেকেই এখন পরিবার চালাতে পারছেন না । যে সকল ক্ষুদ্র কৃষক আছেন তাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খামার গুলো ও তেমন উতপাদনশীল নয়। পল্লী এলাকার বহু মানুষ এখন ও শিক্ষা, স্বাস্থ্য, রাস্তা ঘাটের অভাব, বিদ্যুৎ, বিশুদ্ব পানীয় জলের অভাব এবং পয়ঃপ্রনালীর অভাবে জর্জরিত। অসংখ্য মানুষ খাদ্য নিরাপত্তা ও সুষম খাবারের অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
সামন্তবাদি ব্যবস্থার কারনে বিশেষ করে মাহিলারা বেশী কষ্টে আছেন। শহরের ও বেশীর ভাগ মানুষ মারাত্মক দারিদ্রতার শিকার, এ ছাড়া আরো অনেকেই নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে আছেন। পল্লী অঞ্চলের উল্লেখ যোগ্য সংখ্যক মানুষ ভাল অবকাঠামোগত সুবিধা না থাকায় নানা প্রকৃতিক দুর্যোগে ভোগছেন। পল্লীর মানুষেরা তাদের জীবন যাত্রার নির্বাহে ঝুকিতে আছেন, তাদের বাড়ী ঘর, ফসলের জমি, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কোন নিশ্চয়তা নেই। খরা, বন্য, অতি বৃস্টি ও অনাবৃস্টি তাদের জীবন যাত্রাকে মারাত্মক ভাবে প্রভাবিত করে। অতি জন সংখ্যা, মাটির ক্ষয় পল্লীর মানুষের জীবন যাত্রা ও স্বাস্থ্যকে ব্যাপক ভাবে প্রভাবিত করে থেকে। কলেরা, ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, পল্লীতে ও শহরের বস্তি গুলোতে বিরাট এক ঝুকির কারন হয়ে দাড়ায়। পল্লীর অধিকাংশের বেশী শিশু অপুষ্টিতে ভোগে থাকে। এদের ছাড়াও আরো ১৪% শিশু নানা মৌসুমে অপুস্টির শিকার হয়। খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি এখন ও বাংলাদেশে নিশ্চিত করা যায় নি। শিক্ষার হার মাত্র ৫৭% । বাংলাদেশ আজও শিশু মৃত্যুর দিক থেকে উচ্চে যে সকল দেশ আছে তাদের মধ্যে একটি। এটাই এখানকার বাস্তবতা।
সাম্রাজ্যবাদী দেশ সমুহের বাস্তবতা ভিন্ন। প্রথম বিশ্বের কেন্দ্রে আছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এখানে যাদের বয়স ২৫ বছরের বেশী তাদের গড়ে মাথা পিছু আয় ৩২,০০০ ডলার / ২,৪৭৫,২০০ টাকা। প্রথম বিশ্বের সকল দেশের মানুষই নানা ভাবে আরাম দায়ক বিজন যাপনের গ্যারান্টি পাচ্ছেন। প্রথম বিশ্বের অনেক শ্রমিকই এমন আছেন যারা তৃতীয় বিশ্বের অনেক পুজিপতির চেয়ে ও ধনবান। প্রথম বিশ্ব বুর্জোয়া দুষমনদের ই অংশ কেন না এরা সর্বদাই বিপ্লবের, ন্যায় বিচারের ও সমতার বিরুধিতা করে থাকে। এরা তৃতীয় বিশ্বকে সাম্রাজ্যবাদিদের মতই তৃতীয় বিশ্বের রক্ত মজ্জা কুড়ে কুড়ে খেতে পছন্দ করে। দরিদ্র ও ধনিদের পার্থক্য বেড়েই চলেছে। প্রথম বিশ্বের মানুষেরা সামগ্রীক ভাবেই ব্যবধান সৃষ্টি করে চলেছে। এটা শুরু হয়েছিলো ৩ জনের মধ্যে ১ জন করে। এখন তা দড়িয়েছে ৭২ জনের মধ্যে ১ জনে। আমরা কাজ করি, আমরাই উপুষ করি আর ঊরা খায় আর বিলাসিতা করে। তারা নিরাপধ পরিবেশে থাকে আর আমরা থাকি একটি নুংরা দুষিত পরিবেশে। যেখানে দরকার ছিলো আমাদের পরিবেশ ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সহ সকল বিষয়ের জন্য অর্থ খরচ করার সেখানে উরা লাগিয়ে রাখে যুদ্ব। তাদের মতলব একটা তা হলো আমাদেরকে শোষণ করা দুনিয়ার সম্পদ লুন্ঠন করা । তাদের উদরে তলা নেই । উরা রাক্ষসের মত। এরা আরও আরও চায় তাদের পেট ভরে না কিছুতেই। এরা আমাদের খেয়েই আনন্দ পায়। আমদেরকে কষ্ট দিয়ে খুশি হয়।
বাংলাদেশ এখন একটি অন্তবর্তী কালিন সময় অতিক্রম করছে। মার্ক্স অনেক আগেই বলেছিলেন যে, আধুনিক উৎপাদন ব্যবস্থায় কৃষকদেরকে তাদের বাস্তু ভিটা থেকে উতখাত করা হবে । তাদেরকে শহরে যেথে বাধ্য করা হবে। তারা তাদের বাড়ী ভিটা জমি সব হাড়িয়ে সর্বহারায় পরিণত হবে। ব্যক্তিগত কৃষি খামার কৃষি ব্যবসায়ে রূপান্তর হবে । উৎপাদন ব্যবস্থার এই রূপান্তর মানুষের জিবনে নিয়ে আসবে এক বিয়োগান্তক বিশাদের ছায়া। মানুষ হয়ে পড়বে শহর নির্ভর। তবে, সাম্রাজ্যবাদ কোন ভাবেই মানুষের বেঁচে থাকার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিবে না। যে সকল কৃষকরা শহরে ভীর করবে তারা তাদের উপযুক্ত কাজ পাবে না । তাদেরকে বাধ্য করা হবে বস্তি থাকার জন্য। দিনে দিনে বস্তির পরিমান ও আকার বেড়েই চলবে। তাদেরকে শিল্প মালিকেরা স্থায়ী বাসিন্দাদেরকে উচ্চেদ করে আইনী জটিলতা ফেলে অবৈধ করে দিবে। আর ওরা হয়ে উঠবে বৈধ মালিক ।
সাম্রাজ্য ব্যবস্থা নিজেদেরকে আধুনিক করে তুলবে, আধুনিক পদ্বতি তাদের শোষণের পথকে সুগম করবে। আজ বাংলাদেশে তাই ঘটছে। তারা যদি ও মধ্য যুগীয় ব্যবস্থা ও মুল্যবোধ মেনে চলেন কিন্তু নিজেদের শোষণ প্রক্রিয়াকে জোরধার করতে নানা আধুনিক কৌশল ব্যবহার করে থাকেন। এই মুহুর্তে ইসলামপন্থী ও উদারপন্থী পুজিবাদিবের মধ্যে একটি দ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে উঠছে। তাদের মধ্যে আবার প্রতিযোগীতা চলছে কারা বিদেশী প্রভুদের প্রীয়ভাজন হবেন। তারা ভেতরে ও বাইরে এই প্রতিযোগীতায় লিপ্ত হয়েছে। তাদের আসল মতলব হলো নিজেদের স্বার্থ হাসিল করা আর সাম্রাজবাদের সেবা করা । কে জিতলো আর কে হারলো তাতে সাধারণ মানুষের কিছু যায় আসে না । আমাদেরকে পুরাতন পদ্বতীতে মুক্তি খুজলে চলবে না । আমরা পুরাতন ক্ষমতা খাঠামোয় মুক্তি খুজিনা । সকল প্রশ্নের জবাব আমাদেকেই দিতে হবে। আমারাই আমদের পথ খুজে নেব। একটি নতুন শক্তির উত্থান হচ্ছে। সকল সর্বহারা জেগে উঠছে। তারা সংঘটিত হচ্ছে। প্রতিটি পল্লীতে, প্রতিটি বস্তিতে, কৃষকের মাঝে, শ্রমিকের মাঝে, কর্মীদের মাঝে বেকারদের মাঝে । নারীদের মাঝে, পরুষের মাঝে, প্রবীন ও তরুণদের মাঝে। বুদ্বিজীবী ও ছাত্রদের মাঝে সৃজন হচ্ছে এক নতুন স্বপ্নের। তারা তাদের কষ্টের অবসান চায়। আমরাই পরিবর্তনের মুল নায়ক। আমরাই আমাদের দেশের, এলাকার অঞ্চলের মালিক। সাম্রাজ্যবাদ আমাদের জমি, সম্পদ, আমাদের সুযোগ সুবিধা, আমাদের স্বাধিনতা, আমাদের মর্যাদা সব চুরি করে নিচ্ছে। এরা এখন ও আমাদের ভবিষ্যতকে চুরি করতে পারেনি। আমাদের ভবিষ্যত আমাদেরই আছে। আমাদেরকে লড়াইয়ে ফিরতে হবে। আমাদের জীবন আমাদেরই, আমাদের ভবিষ্যত আমাদেরই। প্রাগ্রসর যন্ত্র পাতি ব্যবহার করে আলোকিত সাম্যবাদের পথে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। আমারাদেরকে সামগ্রীক বিপ্লবের পথে কাজ করতেই হবে। আমরা আমাদের সন্তান ও তাদের সন্তানদের ভবিষ্যত কে কন্ঠক মুক্ত করতেই হবে । # শিহাব