১. ডেম্যুক্রেটিক পার্টির প্রার্থী ও রিপাবলিকান পার্র্টির প্রার্তীদের বক্তব্যে নানা অলংকার ও সাজ শয্যায় কিছুটা পার্থক্য থাকলে ও আর্ন্তজাতিক সর্বহারা শ্রেনীর বিরোদ্ধে তাদের মৌলিক আদর্শ ও অবস্থান অভিন্ন। তাদের ঢংঢাং ও কথা বার্তায় ভিন্নতা থাকলে ও তারা উভয়েই ধনিক শ্রেনীর দল । ড্যামোক্রেট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে যে দ্বন্ধ চলছে, তা মুলতঃ ধনিক শ্রেনীর আভ্যন্তরিন নানা প্রকার আত্মস্বার্থ সংক্রান্ত ও আর্ন্তকলহেরই বহিপ্রকাশ । আর্š—জাতিক পরিস্থিতিতে ডেম্যুক্রেটিক পার্টির প্রার্থী বারাক ওবামা ও রিপাবলিকান পার্র্টির মিট রমনী যে একই রকম আচরন করবে এতে কোন প্রকার সন্দেহ নেই। তারা উভয়ই কেবল সাম্রাজ্যবাদীই নয় বরং তারা সাম্রাজ্যবাদকে ঠিকিয়ে রাখা ও বিশ্বকে নিয়ন্ত্রন করার ব্যাপারে একই পন্থার অনুসারী । দুনিয়া জুঁেড় মার্কিন ধনিক শ্রেণীর স্বার্থ বজায় রাখার বিষয়ে এরা উভয়ই একই পথের পথিক। তাদের মাঝে কোন ভিন্নতা নেই। এমনকি র্জজ ডব্লিউ বুশ প্রশাসনকে পুনরায় প্রতিষ্টা করতে ও তাদের তেমন কোন আপত্তি নেই। তারা উভয়ই ইরাকে, আফগানিস্তানে, সিরিয়ায়, লিবিয়ায়, এবং পাকিস্তানে চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধ চালিয়ে যেতে ও সেই দেশ গুলোতে আধিপত্য অব্যাহত রাখতে চায়। ওবামা ও রমনি উভয়েই ইজরায়েলের খাটিঁ সমর্থক নির্যাতিত ফিলিস্তন ও অন্যান্যদের বিরোদ্ধে ইজরায়েল আক্রমন করলে তাদের সমথর্নে কোন প্রকার কমতি হবে না। এরা উভয়ই ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ধামামা বাজাতে পারঙ্গম। তারা দু’ জনই ভেনিজ্যুয়েলা, কিউবা, উত্তর কুরিয়া ইত্যাদী দেশের জন্য হুমকী। ঘৃণ্য গোপন যুদ্ধ, ড্রোন হামলা, আগ্রসন, বিনা বিচারে আটক করা ইত্যাদী কোন ধনিক শ্রেণীর দলের জন্য কোন ঘটনাই নয়। ডেম্যুক্রেটিক পার্টির ও রিপাবলিকান পার্র্টির মুলধারার অঙ্গীকার হলো তথাকথিত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া, যেন তাদের সাম্রাজ্যবাদী কর্মকান্ড চীরস্থায়ী রূপ লাভ করে। নিপিড়িত দুনিয়ার মানুষের কাছে এটা মোটেই কোন বিবেচনার বিষয় নয় যে, সাম্রাজ্যবাদী পশুদের রাজ্যে কে প্রধান হলেন। আর কেই বা হলেন প্রেসিডেন্ট।
২. ডেম্যুক্রেটিক পার্টি ও রিপাবলিকান পার্র্টি উভয়ই দুনিয়া জুড়েঁ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা জোরদার করতে তৎপর। ডেম্যুক্রেটিক পার্টির ও রিপাবলিকান পার্র্টির মুলধারার অঙ্গীকার হলো তথা কথিত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে মানুষের নাগরিক অধিকার হরণ করা। বিনা বিচারে আটক, নিরিহ জাতি গৌষ্ঠি ও দুর্বল দেশ গুলোকে পৃথিবী থেকে বিলিন করা অব্যাহত রাখা । মানুষের ব্যাক্তিগত গোপনীয়তায় আঁড়িপাতা, মুক্ত চিন্তায় বাধাঁ প্রদান করা, বিশেষ করে অনলাইনে মানুষের মৌলিক মানবাধিকার গুলোতে বাধাঁ প্রদান করা উভয় দলেরই কাজ। আমরা যে কোন প্রসাশনের আওতায় মানুষের ব্যাক্তিগত অধিকার ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার বিষয়টি বিশেষ ভাবে বিবেচনায় রাখব। যে প্রশাসনই নেতৃত্বে আসুক না কেন, আমাদের অঙ্গীকার হলো, তাদের কর্মকান্ডের প্রতি আমরা বিশেষভাবে নজর রাখব।
৩. প্রথম বিশ্ববাদীদের যুক্তি হলো যে, ওবামা ও ডেম্যুক্রেটগন তুলনামূলক ভাবে ছোট শয়তান, তাই রমনী ও রিপাবলিকানদের সমর্থন না করে ডেম্যুক্রেটিকদেরকেই সমর্থন করা উচিৎ। উদাহরণ হিসাবে প্রথমবিশ্ববাদীগণ বলেন, আমেরিকায় নারী ও শ্রমিকদের কল্যানের জন্য রিপাবলিকান ও রমনীর তুলনায় ডেম্যুক্রেটগণ ভালো। বিষয়টি দৃশ্যত সত্য হলে ও বিশ্ব র্সবহারা শ্রেণীর স্বার্থে বিষয়টি গভীর ভাবে চিন্তা করার দাবী রাখে। সাধারণ ভাবে মার্কিণ জনগন ধনিক শ্রেণীভুক্ত। সামগ্রীকভাবে ধনিক শ্রেণীকে আরো ধনী হওয়ার জন্য এবং শ্রেণী শত্র“কে সুবিধাদেয়ার জন্য কোন প্রকার সহযোগীতা করা উচিৎ কি না তা ও বিপ্লবীদেরকে ভেবে দেখতে হবে। ধনিক শ্রেণীকে সহযোগীতা করা বা সাম্রাজ্যবাদকে সুদৃঢ় করা কোন বিপ্লবীর কাজ হতে পারে না। প্রথম বিশ্বের ধনিক শ্রেণীর অন্তর দ্বন্ধ হলো, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের দ্বন্ধ এবং প্রথম বিশ্বের নারী ও পুরুষের দ্বন্ধ কোন ভাবেই আগ্রাসী নয়। এই দ্বন্ধ গুলো হলো শত্র“ ও শত্র“র মধ্যে সংঘাত। এই সংঘাতের উদ্দেশ্যই হলো কিভাবে বিশ্ব সর্বহারা বা প্রলেটারিয়েট শ্রেণীকে ব্যাপক ভাবে শোষণ করা যায়। এমন কি শোষকদের এরূপ দ্বন্ধ ডেম্যুক্রেটদের সাথে মিশেগিয়ে বিপ্লবী হয়ে উঠবে এমটি ভাবার কোন কারণ নেই। এই কথা প্রথম বিশ্বের শ্রমিক ও নারীদের জন্য ও সমভাবে প্রযোজ্য। এরূপ দ্বন্ধের অর্থ এ ও নয় যে, সমাজের মাধ্যম স্তর ও নিম্ন স্তর ঐক্যবদ্ধ হয়ে তৃতীয় বিশ্বের সর্বহারা শ্রেণীর আন্দোলন সংগ্রামকে এগিয়ে নেবে। প্রকৃত সত্য হলো প্রথম বিশ্বের জনগণ সামগ্রীক ভাবে পরস্পরের প্রতি ফ্যাসিবাদী মনোভাবই পোষণ করে থাকে। প্রথম বিশ্বের প্রায় সকল জনগণই এমনকি সেখানকার শ্রমিক এবং নারীরা ও বিশ্ব সর্বহারা শ্রেণীর শত্র“। আমাদের কর্তব্য হলো, বিশ্ব সর্বহারা শ্রেণীর জন্য কাজ করা, যেখানে রয়েছেন, দুনিয়ার সংখ্যা গরিষ্ঠ জনগৌষ্ঠি, তৃতীয় বিশ্বের মেহেনতী মানুষ, শ্রমিক, দরিদ্র কৃষক, ভবঘুরে, নারী , যুবক এবং তরুণরা।
৪. এক অর্থে,নির্বাচনে বারাক ওবামার বিজয় বিশ্ব সর্বহারা শ্রেণীর জন্য খারাপ খবর। ওবামা সাম্রাজ্যবাদের এক কালো ও কুৎসিত চেহারা প্রদশর্ন করেছে। ওবামার অবয়ব ও কথাবার্তা সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ও কমিউনিষ্ট আন্দোলনের এক মারাত্মক র্টাগেটে পরিণত করেছে। তার রাজনৈতিক পরিচয় তাকে অনেকাংশে বিরোপ সমালোচনা থেকে বাচিঁয়েছে। এছাড়া ও তার সম্মোহনী শক্তি, চাতুরীপূর্ণ আর্ন্তজাতিকতাবাদী বক্তব্য তার জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। বুশ ও রমনীর তুলনায় ওবামার জন্য এটা আরো সহজ হয়েছে । এমন কি ওবামার নেতৃত্বেই বুশ প্রশাসনের সাম্রাজ্যবাদী কাজ কর্ম ও তথাকথিত নিরাপত্তা রাজনীতি দিন দিন আরো আরো স¤প্রসারিত হচ্ছে।
৫. বারাক ওবামার নির্বাচন বিজয় কলো বর্ণের জাতি গুলোর জন্য ও খারাপ সংবাদ। আমেরিকায় সাদা বর্ণের মানুষ ও কলো বর্ণের মানুষের দ্বন্ধ আজ অনেকাংশেই স্তিমিত হয়ে আসছে। ১৯৭০ সালের পর থেকেই কলো বর্ণের জাতি গুলোর স্বাধিকার আন্দোলন স্থবির হয়ে পড়েছে। এই স্থবিরতার প্রধান কারণই হলো মার্কিন সমাজে সোস্যাল ডেম্যুক্রেটিক মনোভাবের প্রাধান্য লাভ। অথচ সমাজে সাদা বর্ণের মানুষের সামাজিক প্রভূত্ব কোন ভাবেই কম নয়; বরং তা অপমান ও বৈষম্যের একটি উল্লেখ যোগ্য কারণ হিসাবে এখন ও বিরাজ করছে । তার পর ও দিনে দিনে কালো বর্ণের মানুষেরা সুযোগ সুবিধা ও নেতৃত্বের আশায় এবং প্রথম বিশ্বের সাম্রাজ্যবাদী কর্মকান্ডে সাদা মানুষের দলে যোগ দিচ্ছে। যদি ও কালো বর্ণের মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন সংগ্রাম স্থবির হয়ে আছে কিন্তু তাদের মাঝে ব্যবস্থাপনাগত র্দুনীতি, ও প্রচলিত সমাজ কাঠামোর বিরোদ্ধে তাদের মাঝে আজো বিদ্রোহের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে। কালোদের আন্দোলন আজো প্রতিরোধের ভাষা। যদি ও তাকে বিগত এক দশেকের ও বেশী সময় ধরে দমিয়ে রাখা হয়েছে। ওবামার বিজয় কালো মানুষের প্রতিরোধ আন্দোলন ও মুক্তির সংগ্রামকে মারাত্মকভাবে পিছিয়ে দিবে। কালো বর্ণের মানুষকে ওবামার বিজয় আমেরিকা কালোদের ও দেশ এই বার্তা দেবে। ইহা তাদেরকে আইনগত অধিকারদেবে যে, কলো মানুষের ও মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের জন্য নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করা উচিৎ ; তার বিরোধিতা করা নয় । কালোদের ও সাদাদের সাথে মিশে যাওয়া উচিৎ। তৃতীয় বিশ্বের বিরোদ্ধে মার্কিনী হিসাবে সাম্রাজ্যবাদের প্রযোজনে একতাবদ্ধ হওয়া উচিৎ।
ভোট সংক্রান্ত কাজ কর্ম এবং এতে অংশ গ্রহন নিবার্চন কেন্দ্রীক রাজনীতিকে একটি ইতিবাচক বার্তা দিবে, যার র্অথ দাড়াবে পদ্ধতী হিসাবে এটাকে সমর্থণ করা যায়। লিডিং লাইট, বিশ্ববিপ্লবের নেতা হিসাবে, আমরা খুবই স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই । তা হলো : এই পদ্ধতী সর্ববৈ ও সামগ্রীকভাবেই ব্যার্থ হয়েছে। তাকে আর পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নয় । তার একটি মাত্র সমাধান হলো প্রথম বিশ্বকে ধ্বংস করা, বিশ্ব সমতা স্থাপন করা, সকল শোষণ নিপিড়ণ বন্ধ করা। বিনাশ করতে হবে ধনিক শ্রেণী ও সাম্রাজ্যবাদকে। এক মাত্র সমাধান লিডিং লাইট কমিউনিজম। ভোট দিবেন না! সহায়তা করবেন না! বিশ্ব জনযুদ্ধ। একেএম শিহাব ।