মার্কিন বিদ্যালয়ে গুলি এবং অস্র নিয়ন্ত্রণ আইন প্রসঙ্গে..

(llcobangla.org)
মার্কিন মুল্লুকে বিদ্যালয়ে আবার গুলির ঘটনা ঘটল । এ্যাডাম লেন্জা কানিকটিকাটের একটি বিদ্যালয়ে ২৬ জনকে গুলি করে মেরে ফেলেছে। লেন্জা একটি এই পাওর্য়াড রাইফেল দিয়ে কয়েকবার গুলি করে। যারা নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে ৬ জন মহিলা এবং ২০ শিশু রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৮জন বালক ও ১২ জন বালিকা ছিল । সকল শিশুর বয়সই ছিল মাত্র ৬ থেকে ৭ এর মধ্যে । পরে লেন্জা নিজেই নিজেকে হত্যা করে। মার্কিনদেশের অনেক গুলো গুলির ঘটনার মধ্যে এটি একটি । সবচেয়ে বড় ঘটনাটি ঘটেছিল কলরোডার কলম্বিয়ান হাই স্কুলে। সেই ঘটনাটি মার্কিন সভ্যতাকে লজ্জা আর র্ব্যাথতায় ঢেকে দিয়ে ছিল । সহিংসতা মার্কিণ জনগনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে আছে। আজ আমেরিকা এমন একটি সমাজ ধারণ করছে যারা দুনিয়ার দরিদ্র মানুষের বিরোদ্ধে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। বহু শিশু ও নর নারীকে হত্যা করছে।  অবাক হবার কিছু নেই যে, রাজ রাজাদের মাঝে ও মাঝে মধ্যে লড়াই সংঘাত বেঁেধ যায় । যদিও মার্কিন সমাজ বা প্রথম বিশ্ব আজ বিপুল ভাবেই সম্পদশালী কিন্তু সেই সমাজ আজ  অসুস্থ্য, হিংস্র ও সহিংস। ঘটে যাওয় ঘটনাটি ওবামা প্রশাসনকে বিশেষ ভাবে নাড়া দিয়েছে এবং দাবী উঠেছে, অস্র নিয়ন্ত্রণের আইন পাশ করার এটাই উপযুক্ত সময় ।

মার্কিনীদের অনেকেই মনে করেন যে, জনগনের কাছ থেকে অস্র নিয়ে নেয়া মানেই হলো জনগনকে দাসে পরিণত করার পহেলা কাজ। এই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে থাকে রাষ্ট্রের সুবিধা ভোগী, বর্ণবাদী এবং ফ্যাসিবাদী লোকেরাই । ইহাকে সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রের নাগরিক মনন মানসিকতা ও বলা যায় । এছাড়া তারা দুনিয়ায় সবচেয়ে বড় লুন্ঠনকারী ধনী জাতি হিসাবে নিজেদেরকে গরিব বিদ্রোহী জাতির মানুষের দ্বারা পরিবেষ্টিত বলে মনে করে, এবং তাদের মাঝে আক্রান্ত হওয়ার ভয় ও কাজ করছে। কথায় বলে, চোরের মনে পুলিশ পুলিশ । অপরাধীর পিঠ কখনও জঙ্গলে ঢাকে না।  প্রথম বিশ্বের নাগরিক হিসাবে যেমন সুবিধা পাচ্ছে আবার ভয় ও তাদের নিত্য সঙ্গী । তারা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে  প্রতিনিয়ত মুসলিম  তথা সেমেটিকদের বিরোদ্ধে প্রচারণায় ও মত্ত রয়েছে , ভাঙ্গা ঢোল পিটিয়ে সস্ত্রসী সন্ত্রসী.. বলে চিৎকার করছে , নানা প্রকার ষড়যন্ত্রের গন্ধ খোজেঁ বেড়াচ্ছে। এই দৃষ্টিভঙ্গিটি সাম্প্রতিক সময়ে দিনে দিনে বাড়ছে । সাম্প্রতিক দশকগুলোতে চরম ডান পন্থার ও সামাজিক ন্যায়বিচার পন্থীরা যুদ্ধ বিরুধী প্রচারণা চালাচ্ছে । এর সাথে যুক্ত হয়েছে ফ্যাসিষ্ট ও বামপন্থার সামাজিক ফ্যাসিস্ট শক্তির ধারক ও বাহকরা । চরম ডান ও চরম বামরা মূলত একই মূদ্রার এপিট ওপিট । তারা উভয়ই প্রথমবিশ্ববাদী সম্প্রদায়। চরম ডান ও চরম বাম  তারা উভয়ই প্রথম বিশ্বের মানুষের কল্যাণে সমাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চায় । তারা উভয়ই প্রথম বিশ্বকে বাচাঁতে, উন্নয়ন ঘটাতে এবং তাদের নিকট থেকে হালোয়া রুটির ভাগ নিতে কাজ করছে। এর বিপরীতে কোন প্রকার হুমকী দেখতে চায় না। তাই এ বিষয়ে অবাক হবার কিছু নেই যে, চরম ডান ও চরমবামরা একে অন্যের পরিপুরক।

যদি ও সাদা চোখে দেখলে মনে হবে প্রথম বিশ্বে তো নানা প্রকার মতভেদ ও বিরোধ রয়েছে । কিন্তু সত্যিকার অর্থে তাদের মাঝে কোন প্রকার শ্রেণী গত ও স্বার্থগত চূড়ান্ত দ্বন্ধ নেই। প্রথম বিশ্ব হলো গরীব দুনিয়ায় তৃতীয় বিশ্ব জোড়ে ধনিকশ্রেণীর প্রভূত্ব কায়েম কারী ও হেফাজত কারী একটি সুসংঘঠিত শক্তি। প্রথম বিশ্ব কখনও তাদের জণগৌষ্ঠিকে সত্যিকারভাবে তাদের অভিজাত শ্রেণীর দাসত্ব থেকে মুক্তি দেবে না। যদি ও প্রক্রিয়াগত ভাবে অভিজাত শ্রেণরি লোকেদের নিকট থেকে সাধারণ জনগন নানা প্রকার সুবিধা পেয়ে থাকে। তার পর ও অভিজাত শ্রেণী তাদের রাষ্ট্রকে বিশ্বের শ্রেণী কাঠামোতে শির্ষ শক্তিধর ও মোড়ল হিসাবে দেখতে চায় । দুনিয়ার অন্য লোকদেরকে তাদের দাস হিসাবে ভাবতে দেখতে ভালবাসে । আমেরিকা সহ প্রথম বিশ্বে সত্যিকার সর্বহারা শ্রেণীর লোক খুব কমই আছে। প্রথম বিশ্বের রাষ্ট্রীয় আমলা ও সাধারণ মানুষ তৃতীয় বিশ্বের বিপরীতে সর্বহারা শ্রেণীর বিরুদ্ধে তাদের শত্র“দের সাথে হাত মিলিয়ে সমান তালে শোষন প্রক্রিয় অংশ নিচ্ছে এবং তারা এর উপকার ভোগীতে পরিনত হয়েছে । তাদের ভূমিকা হলো চোরে চোরে মাসতুত ভাই। এখন এরা সাম্রাজ্যবাদেও দুসর।

তাই, সর্বেপরি প্রথম বিশ্বের জনগণ সহ সকল শত্র“ মানুষের কাছ থেকে অস্র কেড়ে নেয়া উচিৎ। তাদেরদেরকে নিরস্র করা এখন সময়ের দাবী । নতুন সামাজিক শক্তির বিকাশের জন্য ও নতুন রাজনীতির জন্য প্রতিক্রিয়শীল জনগৌষ্টির মানুষকে নিরস্র করা দরকার। তবে, সর্বহারা শ্রেণী তাদেরকে নিরস্র করবেই । আগামীতে প্রলেটারিয়েট বা সর্বহারা শ্রেণীর শক্তি বৃদ্ধি ঘটলেই তা করা হবে। আবার আমরা তো দেখছি যে, শোষক রাষ্ট্র গুলো সামাজিক শান্তির নামে, অপরাধ দমনের নামে, বিপ্লবীদেরকে র্দুবল করার জন্য এমনকি নির্যাতনের প্রতিরোধ আন্দোলনকে বিনাশ করার জন্য ও নিরস্রীকরন করা হচ্ছে। অন্য কথায় বললে বলতে হয় যে, শোষক রাষ্ট্র মানুষকে নিরস্র করে প্রথম বিশ্বকে তথা শোষণ প্রক্রিয়াকে ঠিকিয়ে রাখার জন্যই । শোষন বন্ধ করা বা প্রথম বিশ্বের খবরদারীকে খতম করার জন্য নয় ।

আমেরিকককা হলো দুনিয়া সবচেয়ে বড় অস্র চালান কারী ও বিক্রেতা দেশ। আর এ সকল বেশীর ভাগ অস্রই যায় স্বৈরাচারী সরকার গুলোর হাতে। যা তৃতীয় বিশ্বের মানুষ মারার হাতিয়ার। এখানকার সরকার গুলো জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলন দমনে মার্কিণ অস্র ব্যাপক হারে ব্যবহার করে থাকে। তাবে, মার্কিনিদের অস্র ব্যাক্তিগতভাবে ব্যবহার হবে কি না তার উপর আইন প্রণয়নের দাবী উঠেছে। আর এই আইন প্রয়োগ হবে কেবল মাত্র ব্যাক্তিগত ক্রয় বিক্রয় বিষয়ে, তা রাষ্ট্রেীয় পর্যায়ে নয় ।

লিডিং লাইট ব্যাক্তিগত অস্রপাচার রোধের জন্য মার্কিনিরা যে আইন প্রণয়ন করতে চাইছে তার বিরোধীতা করছে। এতে বিভিন্ন জায়গায় নির্যাতনের বিরেুদ্ধে প্রতিরোধ আন্দোলন, বিপ্লবী কর্মকান্ড বাঁধাগ্রস্থ হবে। খোলা বাজারে অস্র না পেলে তৃতীয় বিশ্বের প্রলেটারিয়েট বা সর্বহারা শ্রেণী বাচাঁর লড়াইয়ে অস্রের সমস্যায় পড়বে। নিজেদেরকে বাচাঁনোর জন্য, সম্পদ বাচাঁনোর জন্য, এমনকি ইজ্জত আবরুর বাচাঁনোর জন্য ও খোলাবাজারে আপাততঃ অস্র ক্রয় বিক্রয়ের ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। নিজেকে বাচঁবার অধিকার দিয়েছে ধর্ম, মানবাধিকার, সংবিধান ও দন্ডবিধি। এটা ন্যায় সঙ্গত। একেএম শিহাব

Leave a Reply