১ লা মে, মে দিবস,দুনিয়ার সব মানুষ সব জায়গায় এখন আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসাবে পালন করে। এটা সত্য যে এই দিনটি আমেরিকায় তেমন গুরুত্ত্ব সহকারে পালন করা হয় না। অথচ এর জন্মস্থান হোল এই আমেরিকা। ১৮৮৬ সালে শিকাগুর হে মার্কেটে শ্রমিকদের প্রান দানের বেতর দিয়েই এই দিবসের সূচনা হয়। ৮ ঘন্টা কাজের দাবিতে শ্রমিকদের একটি সাধারন ধর্মঘট চলছিল আচমকা একজন অজ্ঞাত ব্যাক্তি একটি বোমা ছুড়ে মারে এবং পলিশ তখন গুলি করলে বহু শ্রমিক মারা যায় ।
তখন বেশ কিছু পুলিশ ও মারা গিয়েছিল। ১৮৮৯ সালের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিকের প্রথম অধিবেশনে রেম্নদ লিভিং, ১৮৯০ সালে শিকাগু দিবসের প্রতিবাদে মে দিবস পালনের আহবান জানায়। ১৮৯১ সালের দ্বিতীয় আধিবেশনে সারা দুনিয়ায় আনুস্টানিক ভাবে শ্রমিক দিবস হিসাবে ১ লা মে পালনের সিদ্বান্ত গ্রহন করা হয়। মে দিবস এখন ও বহু দেশে পালন করা হয়। সমাজতান্ত্রিক যুগে পৃথিবির সর্ব্বৃহত্তর অফিসিয়াল ছুটির দিন হিসাবে পালিত হত।
আমেরিকা মে দিবস টিকে ভিন্নখতে প্রভাহিত করার চেষ্টা করছে। তারা দিনটি পাল্টে ১ লা মে র পরির্বতে সেপ্টেম্বর মাসের ১ম সোমবার মজুর দিবস পালন করে। তারা বিপ্লবী শ্রমিক দিবসের পরির্বতে বিকল্প মজুর দিবস চালু করেছে। তাদের এই মজুর দিবসটি আমেরিকার প্রধান প্রধান রিভিশনিস্ট শ্রমিক সংগঠন গুলো ও গ্রহন করেছে। তারা এটাকে উপাধি ও পুরস্কার প্রাপ্তির দিবসে পরিণত করেছে। ১৮৮৭ সালে সালেই সংস্কারবাদি ক্লিল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট গ্রুভার মে দিবসকে মজুর দিবসে পরিণত করেছিল। এছাড়া ও পৃথিবীর বহুদেশের ফ্যাসিস্ট ও প্রতিক্রিয়াশীল রাস্ট্র প্রধানগণ মে দিবস পালন করতেই দেয়নি উপরন্ত তাদের কুকুরদেরকে শ্রমিকদের উপর লেলিয়ে দিয়েছে। এমনকি মে দিবসের চেতনা যেন সম্প্রসারিত না হয় তাঁর জন্য তারা শ্রমিকদের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রভাহিত করতে প্রচেস্টা করেছে। বিশেষ করে আমেরিকা বিশ্ব শ্রমিক আন্দোলনের বিনাশ সাধনে প্রানান্তকর চেষ্টা করেছে।
মার্কিন মুল্লুকে সাম্রাজ্যবাদের বিকাশের সাথে সাথে সেখান কার শ্রমিকদের ও জীবন যাত্রার মান ও বাড়তে থাকে। এবং তাদের মন মানসিকতায় ও আসে ব্যাপক পরিবর্তন। তারা বিপ্লবী হওয়ার পরিবর্তে সংস্কারবাদি হয়ে উঠে। সকল প্রকার অর্থনৈতিক ভার খাটা খটুনির দায় ছপিয়ে দেয় তৃতীয় বিশ্বের মানুষের উপর। প্রথম বিশ্বের সামাজিক শান্তি ও নিরাপত্তা নির্ভর করছে তৃতীয় বিশ্বের উপর, তাদের শোষণ ও নিপিড়নের মাত্রার উপর । তাই আমেরিকার শ্রমিকদের নিকট আজ আর মে দিবস পালনের তেমন কোন গুরুত্ব বহন করেনা। কেন না তারা ও এখন ধনিকিকরন প্রক্রিয়ার অংশ। মে দিবস এখন তাদের কাছে স্রফ একটি ছুটির দিন, আর বাম সংস্কারবাদিদের কাছে এটা একটা অতীতের রোমাঞ্চকর দিন। তবে, বিগত কয়েক বছর ধরে অভিবাসিরা মে দিবসটি বেশ ঘটা করেই পালন করছে। মে দিবসকে যদি ও ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা হয়েছে তবু আমরা দেখছি যে, ২০১১ সালে ওকুপাই আন্দোলনের মাধ্যমে মে দিবস আবার তাঁর মুল চেতনায় ফিরে এসেছিল। তাঁর পথ ধরে ইউরূপের কিছু দেশে শ্রমিক আন্দোলন বিকশিত হচ্ছে। যদিও এই ধরনের আন্দোলনকে লিডিং লাইট কেবল মাত্রকর্মী সংগ্রহ, সংঘটিত করন, ও আদর্শ প্রচারের কাজে ব্যবহার করে থাকে। তা কখনও বিপ্লবী আন্দোলনে রূপ নিতে পারে না। প্রকৃত সত্য হলো মার্কিনিরা সমাজতান্ত্রিক বা কমিউনিস্ট বিপ্লব চায় না। এখন প্রথম বিশ্বে বিপ্লবী পরিস্থিতি বিরাজ করছেনা। বিশেষ করে অ্যামেরিকায়।
আমেরিকার শ্রমিক শ্রেনি এখন আর তৃতিয়বিশ্বের প্রলেতারিয়েত শ্রেনির সাথে ঐক্যব্দদ্ব হতে চায় না। তাদের মাঝে এখন শ্রেনি চেতনা কাজ করে না। প্রথম বিশ্বের শ্রমিকরা এখন তৃতিয়বিশ্বের শ্রমিকদের তুলনায় আর্থিক ও মর্যাদায় বহু দূরে অবস্থান করছে। তৃতিয়বিশ্ব থেকে আসা কিছু কৃষক, শ্রমিক ও কতিপয় লুম্পেন ওকুপাই আন্দোলন করেল ও তা বিপ্লবী শক্তি হিসাবে খুবই দুর্বল। আমরা আসছে ১ লা মে ২০১৩ কে স্বাগত জানাই। আশাকরি এবার ও বাংলাদেশ সহ সারা দুনিয়ার বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বের শ্রমিকগন তাদের রাজ কায়েমের আন্দোলন কে এগিয়ে নিবে। এবং তৃতিয়বিশ্ব প্রথম বিশ্বের সাথে বুঝা পরা করতে প্রস্তুত হবে। সাম্রাজ্যবাদের ও উপনিবেশবাদের বিরুদ্বে রুখে দাঁড়াবে। সাম্রাজ্যবাদের দোষর সকল মৌলবাদী শক্তিকে নির্মুল করার জন্য জোড় কদমে এগিয়ে যাবে। এ কে এম শিহাব।