(llcobangla.org)
ভিয়েতনামের প্রতিরক্ষা বিভাগের ২০০৯ সালের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ভিয়েতনামে মার্কিনীদের হামলার ৩৫ বছর পর ও ভুমি মাইন ও অবিস্ফুরিত গুলাবারুদ এখন ও ভিয়েতনামের মাটিতে বিদ্যমান আছে । দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয় বলেছে, তাঁদের ভূমির ছয় ভাগের এক ভাগ এখন ও ঝুঁকি পূর্ন অবস্থায় আছে। তাঁদের মতে ৬.৬ মিলিয়ন হেক্টর ভুমি এখন ও দুষিত ।
১৯৭৫ সালের যুদ্বে ৪২,০০০ মানুষ মারা যায় কেবল মাত্র ভুমি মাইনের কারনে। কোয়াং ট্রাই এবং কোয়াং বিনাহ এই দুইটি প্রদেশে প্রচুর লোক মারা গেছেন। যুদ্ব চলাকালিন সময়ে ৭০০০ হাজার আর এর পর্বর্তী সময়ে আরো ৬০০০ হাজার লোক মারা গেছেন। এ সকল মৃত্যুর পেছনেই সাম্রাজ্যবাদের হাত ছিলো।
অধিকন্তু, ভিয়েতনামের মানুষ এখন ও মার্কিনীদের রাশায়নিক দ্রব্যের কারনে নানা প্রকার স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন। তাঁদের পরিবেশ এখন ও দুষনমুক্ত হতে পারেনি। মিলিয়ন মিলিয়ন গ্যালন রাষায়নিক তরল ভিয়েতনামের গ্রামে গঞ্জে আমেরিকানরা নিক্ষেপ করেছিলো। তাঁদের নিক্ষিপ্ত TCCD মানবতার জন্য একটি মারাত্মক বিষাক্ত দ্রব্য হিসাবে পরিগনিত হয়। ২০০৩ সালে ভীয়েতনামের মাটি পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে, তা সাধারণ মাটির তুলনায় ১৮০ গুন বেশী দুষিত ।
প্রায় ১৫০,০০০ শিশুকে চিনহ্নিত করা হয়েছে যারা তাঁদের মা বাবার শরীরে অরেঞ্জ এজেন্টের দুষন জনিত কারনে কোন না কোন ত্রুটি নিয়ে জন্মগ্রহন করেছে। কেবল মাত্র অরেঞ্জ এজেন্টের কারনে প্রায় ৩ মিলিয়ন মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন। ফলে তাঁদের শরীরে নানা প্রকার স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়। যারা টক্সিন দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন তাঁদের জন্য মার্কিনীরা প্রতিমাসে ১,৫০০ পর্যন্ত অনুদান প্রদান করেছে। মার্কিনীরা সর্বদা ই মনে করেন যে, তাঁদের জীবনের মূল্য পৃথিবীর যে কোন দেশের নাগরিকদের থেকে বেশী।
ভিয়েতনামে মার্কিনীরা যেভাবে যা করেছিল আজ ইরাক এবং আফগানিস্থানে ও তাঁরা তাই করছেন। ইরাকের ভুমিতে ও ভিয়েতনামের মতই তাঁরা যুদ্বাস্ত্র ব্যবহার করে চলেছে। ইরাকের মাটিতে এখন কেবল অবিস্ফোরিত বোমা ই নয়, সেখানে মার্কিনীরা তাঁদের অস্ত্রের সাথে ইউরেনিয়াম ও ব্যবহার করছে। ভিয়েতনামের যুদ্বের পর তাঁরা কয়েক দশক ধরে নানা সমস্যায় ভোগছেন তেমনি ইরাক ও আফগানিস্থানের মানুষ ইউরেনিয়ামের সমস্যায় করেক মিলিয়ন বছর ভোগবে বলে বিশেষজ্ঞগন অভিমত প্রকাশ করেছেন। ভিয়েতনামের মতই ইরাকে ও ইতিমধ্যেই নানা সমস্যা নিয়ে শিশুদের জন্ম হচ্ছে। মার্কিনীরা মনে করেন যে পরিমান ইউরেনিয়াম ইরাকে নিক্ষেপ করা হয়েছে তাতে সেই দেশের জনগণকে দির্ঘ সময় তাঁর পরিনাম ফল ভোগ করতে হবে। মার্কিনীদের ট্রেনিং ম্যানুয়ালে বলা হয়েছে যে, ইউরেনিয়ামের ২৫ মিটারের মধ্যে আসতে হলে শ্বাসযন্ত্র ও চামড়ার সুরক্ষার জন্য মাস্ক ব্যবহার করা উচিৎ। কিন্তু ইরাকের মাটিতে সর্বত্র আজ এই বিপদজনক দ্রব্য ছড়িয়ে আছে। যার স্পর্শে শিশু সহ সাধারণ জনগণ প্রতিদিন আসছেন আর আক্রান্ত হয়ে চলেছেন। ক্যান্সার এবং কিডনি ফেইলিয়র ব্যপক আকারে দেখা দিচ্ছে। তবে, তাঁদের বক্তব্য হলো যে, তাঁরা জনগণের মাঝে এই উপাদানের বিপদের বিষয়ে জ্ঞান দান করছেন।
এই ধরেন ভন্ডামির কথা বহু অ্যামেরিকান ই জানেন না। ইরাকে তাঁদের সাম্রাজ্যবাদী প্রভূত্ব বজায় রাখার জন্য তাঁরা উল্টো ইরাকিদের উপর এর দুষ চাপাতে চায়। মার্কিনীরা প্রচার করে ইরাকে বিশাল রাষায়নিক দ্রব্য মজুদ আছে। যা বিদ্রোহীরা সময়ে সময়ে ব্যবহার করে থাকে। মার্কিনীদের দখল বজায় রাখার জন্য তাঁরা কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা ব্যবহার করে বলে প্রচার করে থাকে। ভিয়েতনামের রেড ক্রসের প্রেসিডেন্ট বলেন, “ মার্কিনীরা যুদ্বের কৌশল হিসাবে যা করে তা সম্পুর্ণরূপে মানবতার বিরুদ্বে আপরাধের সামিল। তাঁরা সাধারণ নাগরিকদের বিরুদ্বে গন হত্যার নির্ম আস্ত্র সস্ত্র ব্যবহার করে থাকে”। তাঁরা পরিবেশ দুষিত করে এবং সারাদেশে বিস্ফোরক ব্যবহার করে থাকে। যার পরিনাম ভোগ করেন সাধারণ জনগণ যার ফলে জনতার মৃত্যু গনহত্যার রূপ ধারন করে। তাঁদের সেই সমস্ত কার্যাবলী দেশের সমগ্র জনগণকে আক্রান্ত করে থাকে। তা এমন কি আগামী প্রজন্মকে ও প্রভাবিত করে থাকে। এটা সাম্রাজ্যবাদের এমন এক নৃশংস কাজ যা তাঁদের পরাজয় হলে ও গন হত্যা চলতেই থাকবে। ভিয়েতনামে উরা হেরেছে কিন্তু বহু লোককে এখন ও প্রান দিতে হচ্ছে। তাঁদের মাইন পুতার জাল মানব হত্যা চালিয়েই যায়। সাম্রাজ্যবাদ হত্যা করে এবং তা অব্যাহত থাকে । তাই দুনিয়ার শান্তি কামী মানুষ সাম্রাজ্যবাদের পতন কামনা করে। #শিহাব