সিরিযা হলো এমন একটি দল যেখানে মিশেছেন সোসাল ডেমোক্রেট, মাওবাদী, ট্রটস্কিবাদি, “বামপন্থী সাম্যবাদি”, চরম ও উগ্র পরিবেশবাদী এবং অন্যান্য কিছু মানবতাবাদি গৌস্টী। তাই তাদেরকে একটি রেডিক্যাল বামপন্থী জোট হিসাবে ও পরিচয় দিতে পছন্দ করে থাকেন। যদিও ঘটনা চক্রে সিরিজা গ্রীসের পার্লামেন্টে সাধারন সংখ্যা গরিস্টতা নিয়ে বিজয় লাভ করেছে এবং তারা সরকার ঘটনের সুযোগ পেলেও অন্যান্য দলের দ্বারা সমস্যায় পরতে পারে। সম্ভাব্য বাঁধা দান কারী সেই দল গুলো অনেক ক্ষেত্রেই বর্নবাদ দ্বারা আক্রান্ত । তারা উগ্র ডানপন্থী ও বিদেশীদের বিতারনের পক্ষে কাজ করে। তাদের এমন কিছু দল আছে যাদেরকে ব্রিটেনের স্বাধীনতা পার্টির সাথে তুলনা করা যায়। এই বর্নবাদি চক্র এখন দাবী করছে গ্রীস নাকি চক্রান্তের শিকার হয়েছে। গ্রীস নাকি “পশু পরীক্ষা কেন্দ্রে” পরিণত হয়েছে। আর সেই কাজ নাকি করে দিয়েছে “ অস্থিরতা ও আন্তর্জাতিক অর্থ তহবীল”। তারা বিদেশীদের ও অন্যদের সংস্কৃতিকে দেখতে পারেনা । তারা মনে করে তাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে প্রচীন গ্রীক ভাব ধারায় সাজাতে। চার্চের শিক্ষাকে গ্রহন করতে হবে। তাদের নেতা পেনুস কাম্মেনুস নির্বাচনে বিজয়ী গ্রীস নেতৃত্বকে সমালোচনা করেছেন।
আমরা আগেই বলেছিলাম যে আমাদেরকে অবশ্যই সিরিজার প্রতি নজর রাখতে হবে- কেননা এরা বিজয়ী হয়েছেন ঘটনা চক্রে। এরা মূলত “ আধাবাম” প্রথম বিশ্ববাদি – বাম সামাজিক গণতন্ত্রী, মাওবাদি, টট্রস্কিবাদি ও চরম পরিবেশবাদি মানুষ জোট বেধে ক্ষমতার অসনে চলে এসেছেন। আমরা আগাম বলে দিয়েছিলাম যে, তারা যে ধরনের আদর্শের মোড়কে সিরিজাকে গড়ে তুলেছেন, গ্রীক সমাজে এই পরিস্থিতিতে গ্রহন যোগ্যতা পেতে ও পারে। তবে যদি তারা সাম্রাজ্যবাদকে রুখতে চায় বা সোসাল ডেমোক্রেসিকে অনুসরন করতে চায় তবে বাস্তবতার সাথে তা নাও মিলতে পারে। দেখা দিতে পারে পরস্পরের মধ্যে সংঘাত। যদি সিরিজা আমাদের আগাম বার্তাকে মিথ্যা প্রমান করে দিয়ে তাদের আদর্শ বাস্তবায়নে দ্রুত এগিয়ে যায় তবে – তা ও সোসাল ডেমোক্রেট ও সামাজিক সাম্রাজ্যবাদের রূপ নেবে।
আমেরিকা সহ অনেক দেশের মার্ক্সবাদি-লেনিনবাদি ও মাওবাদিরা প্রস্তাব করছেন এবং আশাবাদি হয়েছেন সিরিজার বিজয়ে “ বামপন্থার পুনর্গঠনে” ভূমিকা রাখতে পারে। তারা তাদের মতই ইতিহাসের সকল মতপার্থক্য ভূলে মাওবাদি, টট্রস্কিবাদি, চরম পরিবেশবাদি ও সোসিয়াল ডেমোক্রেট সহ মানবতাবাদিরা একতা গড়ে তুলতে পারেন। এদের মধ্যে অনেকেই এমন কথা ও বলছেন যে, সিরিযার পথ সারা বামপন্থী দুনিয়া অনুসরন করতে পারে। করা উচিৎ। এটাকে তারা বামপন্থার পুনর্গঠন হিসাবে বিবেচনা করলেও তারা যে তাতে প্রথম বিশ্ববাদের টনক নড়াতে পারবেন তা মনে করছেন না । এমন কি আরো কয়েকটি দেশে বিজয় লাভ করলে ও তা সম্ভব হবে না। বিজ্ঞান মনষ্ক বিপ্লবীরা সহজেই বুঝতে পারেন যে, কৌশলগত কারনেই এখন প্রথম বিশ্বে বিপ্লব করা সম্ভব নয়। যেখানে সর্বহারা নেই সেখানে সর্বহারা বিপ্লব হবে কেমন করে। বিষয়টি বিপ্লবীদের ভাবার দাবী রাখে। বস্তুগত বিষয়কে তো অস্বীকার করার উপায় নেই। বিজ্ঞান মনষ্ক বিপ্লবীরা যথাযত ভাবেই এটা বুঝেন যে, সত্যিকার বিপ্লবে বিশ্বাসী লোকেদের প্রথম বিশ্ববাদের অন্দ্ব বিশ্বাসের চোরাগলি থেকে বেড়িয়ে আসা উচিৎ। প্রথম বিশ্বে
বিপ্লব করার অর্থই হলো ‘এখানকার জনগণের জীবন যাত্রার মান নিচের দিকে নামিয়ে আনা’ আর ‘সাম্রাজ্যবাদের বিনাশ সাধন করা’ । এই ধরনের কাজ কেবল তখনই করা সম্ভব যদি সেখানে বিশ্ব গনযুদ্বের ভেতর দিয়ে বিপ্লব সাধন করা যায়। তৃতীয় বিশ্বের বিপ্লব সাধন না করে প্রথমবিশ্বে বিপ্লবের কথা চিন্তা করা কল্পনা বিলাস ছাড়া আর কিছুই নয়। প্রথম বিশ্বের বিপ্লবীদের বিপ্লবী কর্মে সহায়তা দান করা তাদের একান্ত কর্তব্য। এর মানে এই নয় যে, প্রথম বিশ্বের কোন একটি অংশে কোন “রেডিক্যাবাম” কোয়ালিষনকে সমর্থন দেয়া বা তাদেরকে নির্বাচনে জয় লাভ করানো । কেবল বিপ্লব হতে পারে লিডিং লাইটকে সামগ্রীক সমর্থনের মাধ্যমে। লিডিং লাইট হলো বিপ্লবের বিজ্ঞান সম্মত পথ ও পন্থা । একে এম শিহাব