(llbangla.org)
পুরাতন নিয়মে (ওল্ড টেস্টাম্যান্ট) বলা হয়েছে যে,
“আমি ছাড়া তোমাদের আর কন প্রভু নেই। তুমি নিজেকে মুরর্তিতে পরিণত কর না। স্বুর্গে, মর্তে বা জলে আমার মত কিছুই নেই। তুমি তাদের কাউকেই পূজা অর্চনা করবে না। কোন প্রকার সেবা দান করবে না। আমিই তোমার প্রভু ! আমি পরশ্রীকাতর ইশ্বর! যারা পিতা ও সন্তানের পার্থক্য করে, তৃতীয় এবং চতুর্থ প্রজন্মের যারা আমাকে ঘৃনা করবে, কিন্তু তুমি ভালোবাসা ও দয়া প্রদর্শন কর, যারা আমাকে ভালোবাসে তাদের প্রতি আমার নির্দেশ পৌছাইয়া দাও”।
পেগান সম্রদায়ের মুর্তি পুজার সমালোচনা করা হয় তখনই যখন মুছা ইয়াহুদি ও খৃস্টান ধর্মের বানী তথা পুরাতন নিয়ম ইশ্বরের নিকট থেকে প্রাপ্ত হন। ইয়হুদি ও খৃষ্টানদের জন্য ইশ্বর প্রদত্ব “ মানুষের জন্য কেতাব”, গুলো মুসলিমের জন্য ও মান্য। তিনি পরশ্রীকাতর ইশ্বর তিনি কোন প্রকার প্রতিযোগীতায় নামতে নারাজ। হোক তা অন্য কোন ইশ্বর নির্মান বা বিজ্ঞান। ইসলামের উনমেষ হয়েছে মধ্য প্রচ্যের পূর্ব প্রান্তের একত্মবাদি ধারনা থেকে। ইসলাম ও তাঁর ধর্মীয় আত্মীয় অন্যান্যের মতই পেগানদের মুর্তি পুজার চরম বিরুধিতা করেছে। ইহা মুলত ইসলামের কেন্দ্রীয় বিষয় বস্তু। তা এর সুচনাতে ছিলো, আজ ও তাই আছে । উদাহরন হিসাবে আজকের ইসলামিক স্টেইট সংস্থাটি ইরাক ও সিরিয়ায় ব্যাপক হারে মুর্তি ভাঙ্গার অজুহাতে কবর স্থান সমূহ ধ্বংস সাধন করছেন। তাদের এই উদ্যোগ তাদের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলে সবিশেষ ভুমিকা পালন করছে। তাতে আবার সাম্রদায়িক বিভক্তি সাধনেও কাজ করছে। বিশেষ করে সুন্নি ও শীয়া সম্প্রদায়ের মানুষের মাঝে। একটি অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে যে, যদি ইসলামিক স্টেইট মক্কা শরীফ জয় করতে পারে তবে তারা সেখানকার ‘পাথর পূজা’ বন্দ করার জন্য খানায়ে কাবাই ভেঙ্গে ফেলবে। একই ভাবে তারা ধর্ম নিরপেক্ষ জাতিয়তাবাদের ও বিরোধী। তারা একে ও জাতি পুজা হিসাবে বিবেচনা করে থেকেন। অ্যামেরিকায় অনেক উগ্র খৃস্টান আছেন যারা ধর্মীয় কারনে তাদের দেশের পতাকাকে সালাম জানায় না । এই ধারনা কিন্তু নতুন নয়।
মক্কা নগরীর এই পবিত্র কাবা শরীফে ইসলামের উত্থানের আগে ঐতিহ্য গত ভাবে পেগান সম্প্রদায়ের লোকেরা নানা ধরনের মর্তি স্থাপন করে রেখেছিলেন। নবী মুহাম্মদ স. তখনই বিপুল শত্রুর সম্মোখিন হন যখন তিনি দাবী তুলেন যে, কাবা শরীফ কেবল হবে আল্লাহর জন্য । এখানে কোন প্রকার মুর্তি বা পুতুল থাকতে পারবে না। কুরাইশ সম্প্রদায়ের মানুষেরা তখনই মুহাম্মদ স. এর বিরুদ্বে লড়াইয়ে লিপ্ত হয়। আর এর ফল শ্রুতিতেই ৬২২ খৃস্টাব্দে নবীকে মক্কা ছেড়ে রাতের আধারে মদিনায় হিজরাত করতে হয়েছিলো। কয়েক বছর পর মক্কার বিরোধী শক্তিকে পরাজিত করে নবী মুহাম্মদ স. ৬৩০ খৃস্টাব্দে বিজয়ী বেসে মুসলিমদেরকে সাথে নিয়ে তিনি মক্কায় ফিরে আসেন। তিনি এসেই কাবা শরীফ থেকে পেগানদের স্থাপিত সকল মুর্তিকে অপসারণ করেন। তবে কালো পাথরটি রেখে দেন। এই সম্পর্কে হাদিসের ভাষ্য হলো-
“ যখন আল্লাহর রাসুল স. মক্কায় আগমন করলেন, তখন কাবা গৃহে প্রচুর মুর্তি ছিলো, তাই তিনি সেখানে সাথে প্রবেশ করলেন না। তিনি সাহাবীগনকে হুকুম দিলেন তারা যেন কাবা ঘর থেকে সকল মুর্তি অপসারণ করেন। তখন কাবায় হযরত ইব্রাহীম অ্যা. ইসমাইল অ্যা. এর ছবি শুভা পাচ্ছিল। তাদের হাতে ছবিতে তারা তীর ধনুক নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। নবী মুহাম্মদ স. বললেন, ‘তারা ধ্বংস হোক ( যারা অবিস্বাসী) তারা অবশ্যই জানতে পারবেন যে, ইব্রাহীম, ইসমাইল আ. এই ধরনের কোন তীর ধনুক নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন না’। তাঁর পর নবী স. কাবায় প্রবেশ করলেন এবং বললেন ‘আল্লাহ মহান’ এবং সকল কে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে বেড়িয়ে আসলেন তখন তিনি সেখানে কোন পার্থনা করলেন না”।
ইসলামের ইতিহাস অনুসারে, অন্যান্য নবীদের মতই হযরত মুহাম্মদ স. পেগানদের মুর্তির বিরুধিতা করে ধর্ম প্রচার ও প্রসার করেছেন। কোরানে একটি মজার ঘটনা বর্ননা করা হয়েছে। ইব্রাহীম অ্যা. পেগানদের মুর্তি গুলোকে উদ্দেশ্য করে বলা কাহিনিটি হলো-
“ তিনি মন্দিরের উচু স্থানে উঠে মুর্তি গুলোকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, ‘ তোমাদের সামনে যে খাবার গুলো দেয়া আছে তা তোমরা খাওনা কেন? তোমাদের কি হলো তোমরা একটা কথাও বলতে পারছ না ? তাঁর পর তিনি তাদেরকে মাটিতে ফেলে দিলেন, পা দিয়ে লাতি মারলেন। এটা দেখে আশ পাশ থেকে লোকেরা চুটে আসলেন। ‘ তোমরা যাদেরকে পূজা কর তাদেরকে আবার তোমরাই বানাও ?…”’
সেই দিন ইব্রাহীম অ্যা. প্রশ্নের জবাব কেউ দিতে পারেন নি। পেগানদের সকলেই নিরবে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তবে এটা ও তো ভাববার বিষয় ছিলো, পেগানদের মুর্তি যেমন খাবার খায় না। তেমনি ইশ্বর ও তো পিযার খাওয়ার হুকুম দেন না। তিনি ও তো বাস্তবে কথা বলেন না । প্রশ্ন উঠতে পারে পেগানদের মুর্তির খাদ্য গ্রহন না করা দিয়ে ইব্রাহীম তাঁর পক্ষে যুক্তি দিলেন, ইশ্বর সম্পর্কে কেন নয়? বস্তুবাদি সমালোচনা এখান থেকেই শুরু হয়। কিন্তু এর পর কি ? ইব্রাহীম এই বক্তব্য তোলে ধরে প্রমান করতে চাইলেন কোন দেবতার অস্থিত্ব বা মুর্তির কার্যকারিতা নেই। কিন্তু তিনি কেন তাঁর নিজের বিশ্বাস নিয়ে কথা বললেন না ? কারণ তিনি কোন বস্তুবাদি সমালোচনার আশ্রয় নেন নি। আমরা এই রূপ ঘটনা হযরত হুদ অ্যা. এর জীবনে ও আমরা দেখতে পাব-
“ হে আমার জনগণ তোমরা কেন নিজেদের বানানো পাথরের তৈরী মুর্তির পূজা করছ ? এই গুলো তোমাদেরকে কোন উপকারই করতে পারবে না বা তোমাদের কাছ থেকে ও কিছু নিতে পারবে না। তোমরা তো বুদ্বিমান জাতি, তবে কেন বোকারমত কাজ করছ? তোমাদের প্রভু একজনই, তিনি একক একমাত্র তাঁর ই এবাদত কর”।
পৃথীবীতে মুর্তি কেবল পাথরের বা মাটির তৈরী নয়। তা আমাদের চিন্তা চেতনায় ও বিরাজ করে। পাথরের তৈরী বা মাটির তৈরী মুর্তিকে যত সহজে নাশ করা সম্ভব চিন্তার জগতের মুর্তিকে বিনাশ করা তত সহজ নয়। একটি ইমারত নির্মানের জন্য দরকার হয় ইট ও সিমেন্টের তেমনি একটি সামাজিক মুর্তি গড়ে উঠে একটি বিশেষ ধরনের পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে। সমাজের ভেতরে মুর্তির বিকাশ সেখান থেকেই। সমাজ তাঁকে সেবা করে।
কার্ল মার্ক্স বলেছেন, একটি পবিত্র পরিবার আর কিছুই নয়, ইহা একটি পার্থিব পরিবার। ইশ্বর একজন স্রষ্টা, একজন ফাদার হিসাবে বিশ্বের পরিচালকের হিসাবে যে ধারনা গড়ে উঠেছে তা একান্তই সামাজিক কাঠামোর প্রতিরূপ। মানুষের সাথে বিশ্ব ব্যবস্থার সম্পর্কের একটি প্রতিবিম্ভ। এমনকি ইশ্বরের ধারনা মানুষ বনির্মান করেছে, অনেকে তা আজো বুঝে উঠতে পারেনি। মানুষ নিজেই খেয়ালে প্রচুর মুর্তি নির্মান করেছে, সামাজিক কারনে ই তাঁর দরকার ও পড়েছে । সত্যিকার অর্থেই প্রার্থনার জন্য, ক্ষমতা ঠিকিয়ে রাখার জন্য তা করা হয়েছে । পাথর আর মাটির তৈরী মুর্তির চেয়ে তা কিন্তু কম নয় । বেশীর ভাগ ধর্ম ই মুর্তি আশ্রিত। কেবল ইসলাম ই বস্তুগত ভাবে এই কাজ করা থেকে বিরত থেকেছে। ইসলাম যদি ও বাস্তুগত মুর্তি থেকে দূরে থেকেছে। পেগানদের বিরুধিতা করেছে। কিন্তু তারা ও নিজস্ব চিন্তা ভাবনাকে যথা যথ ভাবে এগিয়ে আনতে পারেনি। বাস্তব সম্মত বিশ্লেষণে কিছুটা পশ্চাত পদতা তো আছেই । অতিন্দ্রীয়তায় বিশ্বাস, কবর পূজা, পীর পূজা গুরুবাদ থেকে কি তারা ও মুক্তি পেয়েছেন? তাদের কর্মকান্ড দেখলে মার্ক্সের “আত্ম বিচ্ছিন্নতাবোধের কথা সামনে চলে আসে”।
“ ধর্মহীন যে সকল লোকেরা বিচ্ছন্নতায় ভোগেন তারা ও এমন একটি আলাদা রাজ্য গড়ে তুলেন যেখানে প্রচুর স্ববিরুধী আচরনের সাক্ষাৎ মেলে। তারা বুদ্বি বৃত্তিক চর্চা করে ও নিজেদের আচরনিক কোন পরিবর্তন আনতে পারেন না। তারা ই আবার পার্থিব পরিবারের ভেতর পবিত্রতার সন্দ্বান করেন। তাদের আলোচনায় তত্ব থাকলে ও ব্যভারিক জীবনে এর প্রভাব খুব ই কম”।
যদিও ধর্মীয় জগতটাই গড়ে উঠেছে এক ধরনের বিচ্ছিন্নতা বোধ থেকে, বিচ্ছিন্নতা বোধ কাটিয়ে উঠার মাধ্যমে ধর্মীয় আবেশ থেকেও হয়ত মানুষ বেড়িয়ে আসবে। তাতে সামাজিক জ্ঞানের উতকর্ষতা, বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের বিকাশ, ধর্মীয় ও অতিন্দ্রীয় দৃষ্টি ভঙ্গীর সম্প্রসারন ইতিবাচক ভুমিকা রাখতে পারে। মার্ক্সবাদ আমাদেরকে ধর্ম সহ নানা আদর্শের সার বস্তুর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন করে। সকল কিছুর ভিত্তি ভুমি হলো আমাদের সমাজ ব্যবস্থা তা প্রতি সবিশেষ গুরুত্বারোপ করে থাকে। আমাদেরকে শিক্ষা দেয় “ঐতিহাসিক বস্তুবাদ”। সময়ের বিবর্তনে ইসলামের উত্থান ঘটেছে। খৃস্টান ও ইয়াহুদি আদর্শের বিলুপ না হলেও তা অনেকাংশে সংকুচিত হয়ে পড়েছে। যদিও এক কালে খৃস্টান ধর্ম রোমান সয়াম্রাজ্যের অফিসিয়াল আদর্শ ছিল। সাম্রাজ্যের পতনের পর তা আর আগের অবস্থানে ঠিকে থাকতে পারেনি। ৬০০ খৃস্টাব্দে ইসলামের উত্থান ঘটে, তখন ও আরবদের প্রভাব শালী প্রতিবেশী হিসাবে তা ঠিকে ছিলো। রোমান সম্রাটরা তা বিশেষ করে পুর্ব রোমের বাইজেন্টাইন শাসকগন খৃস্টান ধর্মকে রাষ্ট্র ধর্ম হিসাবে ব্যবহার করত। আরবদের প্রতিবেশী হিসাবে আরো একটি ক্ষমতাধর সাম্রাজ্য ছিলো যার নাম পারশ্য সাম্রাজ্য। যাদের ধর্ম ছিলো জুরাস্ট্রিয়ানবাদ। আরবদের সেই প্রতিবেশীরা নিজেদের ধর্মকে সাম্রাজ্যবাদী ঐক্যের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করতেন। তাদের চক্ষুশোল ছিল আরবরা। তাদের দৃষ্টি ছিল ইসলামের ধারক ওমাইয়া খলিফাদের কর্ম কান্ডের প্রতি। ইসলাম তাঁর সুচনা লগ্ন থেকেই মানবিক ও মানুষের রাজনৈতিক জীবনের প্রতি অধিকতর গুরুত্ব আরোপ করেছিলো। ইহা অন্যান্য ধর্মের মত জাতিভেদ প্রথা বা মানুষে মানুষে বৈষম্যকে অস্বীকার করে। তা অবশ্য ইয়াহুদি, খৃস্টান ও বৌদ্ব ধর্মে ও এই রূপ বক্তব্য প্রদান করেছে। সত্যিকার অর্থে প্রতিটি ধর্মই তাদের সামাজিক দ্বান্দ্বিকতার উপর ভিত্তিকরে গড়ে উঠেছে। আর তাদের মূল লড়াইটাই ছিলো ক্ষমতা কাঠামোতে নিজেদের অবস্থানকে শক্তি শালী করা। তবে, আমাদেরকে ধর্ম ও অন্যান্য প্রহেলিকাকে বুঝতে হবে। তবে , ইতি মধ্যেই বিজ্ঞান বস্তুবাদি সামাজিক ব্যাখ্যার নানা কৌশল আবিস্কার করে ফেলেছে। যা দ্বারা আমরা সমাজের নানা অসংগতিকে নিরুপন করতে পারি।
বর্তমান সময়ে জ্ঞান বিজ্ঞান ও নিউরো বিজ্ঞানে আমাদেরকে জ্ঞানজগতের গভীর বিষয় বুঝতে সহায়তা করে থাকে। তা আমাদেরকে বলে মানুষ কিভাবে শেখে, তারা কিভাবে নিজেদেরকে উন্নত করে, তারা কেমন করে নিজেদের ভূল গুলো শুধরে নেয় ইত্যাদি। ইহা কোন ভৌতিক বিষয় নয় । এটা এমন কোন কথা বলে না যা বাস্তব সম্মত নয়। চিযুফ্রেনিক রোগীরা যেমন বলে তারা এমন কিছু শব্দ শোনতে পান যা অন্যরা পায় না। এখন আমরা এর ও ব্যাখ্যা জানি। যেমন বলা হয় যে, নবীজির কাছে যখন অহি আসত তখন নাকি তিনি এমন এক হালতে চলে যেতেন যা দেখলে মনে হবে তাঁকে ম্রীগী রোগ আক্রমণ করেছে। এমন কি ক্যাথলিক চার্চের পাদ্রিদের অনেকের মাঝে এরূপ দেখা যায়। এখন তারা মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের কাছে গিয়ে চিকিৎসা করিয়ে আসেন। রূপান্তর শীল জ্ঞান জগতের অনেকেই এখন মনে করেন জ্ঞান বিজ্ঞান ও নিঊরোলজিক্যাল বিষয় আশয় অনেকটা ই গভীর চিন্তা ও গবেষনার বিষয়। উদাহরম হিসাবে আমরা এখানে ইমানুয়েল কান্টের কথা বলতে পারি। তিনি মনে করতেন যে আমাদের মনোজগত আমাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতার ই ফল। নানা ঘটনার সমাহার আমাদের জীবন। আমাদের মন ও ব্রেইন এক বিশেষ প্রক্রিয়ায় জ্ঞান আহরন করে থাকে। কান্ট এটাকে ইন্টিউশন বা “অনুভুতি” বলেছেন। তাঁর মতে, “ এটা একটি অতিন্দ্রীয় ধরনের বিষয়”। তাঁর গতি ধারা নির্ধারিত হয় কারণ ও এর ফলাফলের উপর। আমরা আরো দেখতে পাই যে একটি পরিস্থিতি এসে আরেকটা পরিস্থিতিকে বদল করে দেয়। একটি বস্তু আরেকটি বস্তুকে পাল্টে ফেলে। এই বাস্তব জগতের পরিক্ষা নিরিক্ষা ই আমাদের জ্ঞান জগতকে এগিয়ে নেয়। বিষয় টি একটি ক্রমধারা মেনে চলে। রাতা রাতি কোন কিছুই জানা বা বুঝা যায় না। তাই কোন পরিবর্তন ও তাৎক্ষণিক ভাবে সংঘটিত হয় না । তাঁর জন্য একটি নির্দিস্ট সময় অপেক্ষা করতেই হয়।
আধুনিক দুনিয়ার মানুষের কাছে এখন মন ও মননের কাজ এবং এর পরিধি পরিস্কার। এমনকি আমরা যতই যুক্তি দেই না কেন মুর্তি পূজা বা ধর্মের অনুশীলন সমাজে থাকবেই । তাঁকে একেবারে বিনাশ করা সহজ কাজ নয়। তাই কার্ল মার্ক্স বলেছেন, “ দার্শনিক গন কেবল নানা ভাবে জগতের ব্যাখ্যাই করে গেছেন, গুরুত্বপূর্ণ হলো তাঁকে পতিবর্তন করা”। সকল প্রকার কু সংস্কার বা প্রহেলিকের অবসান ঘটাতে হলে – প্রথমেই দরকার হলো আমাদের সমাজ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন সাধন করা। তাঁর জন্য দরকার হলো একটি অগ্রসর বিজ্ঞানের। আলোকিত সাম্যবাদের। সমাজ থেকে সকল প্রকার বৈষম্য বিদূরিত না করলে সামাজিক অন্দ্বত্ব ঘুচবেনা। অবসান হবে না কোন প্রহেলিকার। সত্য চর্চা করার মাঝে কোন লজ্জা নেই। নেই কোন অপমান। আলোকিত সাম্যবাদ মানুষকে অন্দ্বকারের জগত থেকে আলোর পথে নিয়ে আসবে। একটি সত্যিকার বিপ্লবের মাধ্যমেই আমরা আলোকিত সাম্যবাদে উপনিত হতে পারি।