সাভার, বাংলাদেশ ট্রাজেডিঃ শত শত শ্রমিকের মৃত্য।

(llbangla.org)

সাভার গার্মেন্টস দুর্গটনায় এপর্যন্ত মৃত্যর সংখ্যা দাড়িয়েছে প্রায় ছয় শতে তা আরো বাড়তে পারে। ওখানে প্রায় ৫০০০হাজার শ্রমিক কাজ করছিল বলে খবরে বলা হয়েছে। ধ্বসে পরা ভবনটিতে বেশ কয়েকটি কারখানা ছিল। এখনো বহু মানুষের লাশ নিখোঁজ রয়েছে।

একজন উদ্বার হওয়া মানুষ প্রথম দিনই বলেছিল, ” ভেতরে অনেক লোক বেঁচে আছেন, তাদের অনেকেই নিরাপদ, চাঁদ ও দেয়াল গুলো কেটে তাদের কে বেড় করুন।”

যাদেরকে সময় মত বেড় করা যায়নি তাদের অনেকেই পানি শূন্যতা, অতি গরম, এবং খাবার না পেয়ে মারা গেছেন।ইতিমধ্যে অনেকেই উদ্বার হয়ছেন, শক্রবার উদ্বর হওয়া একজন মহিলা সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন,

 “ প্রথমেই একটি মেশিন আমার হাতের উপর এসে পড়ে,আমার হাত ভেঙ্গে যায়, তাঁর পরই চাদ ভেঙ্গে পড়ে। সেই মাহিলাটি উদ্বার পেয়েছেন তাঁর হাত কেটে।”

 মানুষের হ্রদয় ভাঙ্গা ঘটনা একের পর এক ঘটেই চলেছে বাংলাদেশে। মানুষ বুঝতে পারছে বাংলার মানুষ বিশ্ব পুঁজিবাদের জন্য কি পরিমান মুল্য দিচ্ছে। প্রতিক্রিয়া ঃ

পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনী উদ্বার কাজে নিয়োজিত আছেন, তারা সেখানে বিড় করা শ্রমিকদের আত্মীয় সজনদেরকে ঘটনা স্থল থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছেন। সৈনিকেরা ঘটনাস্থল ঘিরে রেখছেন। উদ্বার কালে একজন আত্মীয়, নাম সামছুর রহমান যিনি তাঁর মাতাকে হাড়িয়েছেন, তিনি বলেছিলেন,

 ” আমাকে ভেতরে যেতে দিন, আমি আমার মা কে উদ্বারের জন্য মরে যাব।”

 ঘটনাস্থলে জড়ো হওয়া শ্রমিকগন আগুনের মত জ্বলে উঠেছে, তারা শ্লোগান দিচ্ছেন,

 ” আমরা গার্মেন্টস মালিকদের ফাঁসি চাই”।

 হাজার হাজার শ্রমিক বিভিন্ন জেলায় তাদের প্রতি  মালিকদের অমানবিক আচরণ, ও বিপদজনক কর্ম পরিবেশ বন্দ্ব করতে দাবি জানাচ্ছে। সরকার দালান আইন, শিল্প আইন ও নানা প্রকার বিধি বিধান ভংগের দায়ে গার্মেন্টস মালিক ও ভবন মালিককে ইতিমধ্যে আটক করেছে। একজন প্রকৌশলী বলেছেন, রানা প্লাজা আইনত পাঁচ তলা পর্যন্ত নির্মানের অনুমতি পেয়েছিল কিন্তু সেই ভবন বেআইনি ভাবে নবম তলা পর্যন্ত উন্নিত করে ফেলে। তিনি আরো বলেন যে, তাকে বার বার সতর্ক করার পর ও এতে কান দেয়নি। মাত্র গতকাল ভবনে ফাটলের জন্য তা খালি করে দেয়া হয়, কিন্তু মালিক তা পুনরায় খুলে দেয়।

 প্রকৃত সমস্যা হলো পজিবাদঃ

এই ধরনের বিপর্যয় বাংলাদেশে মোটেই নতুন কোন বিষয় নয়। এখানে গার্মেন্টস শিল্পের বিকাশ ঘটেছে মানুষের মূল্যের উপর। বিগত শতক থেকেই বাংলাদেশে দ্রুত গার্মেন্টস শিল্পের বিকাশ ঘটেছে। ইহা ২০১১ সালের হিসাব মতে, পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম গার্মেন্টস রপ্তানি কারক দেশ । বর্তমানে বাংলাদেশে ৪,৫০০ গার্মেন্টস কারখানা রয়েছে। চীনের পরই কাপড় রপ্তানি কারক দেশ। ২০০৫ সালে ও এই রকম ভাবে একটি গার্মেন্টস কারখানা ধ্বসে পড়েছিল, তখন ও মারা গিয়ে ছিলো ৭০ জন শ্রমিক। এবং গত বছর ২৫ শে নভেম্বর মালিক কতৃক সৃষ্ট ফাঁদে পড়ে প্রায় ১২০ জন শ্রমিক নির্মম আগুনে পুড়ে মারা যায়। বাংলাদেশে শ্রমিকরা মারাত্মক ভাবে অবহেলিত। প্রথাম বিশ্বে এই ধরনের ঘটনার কথা চিন্তা ও করা যায় না। যদিও তৃতীয় বিশ্বে প্রতিদিন, প্রতি ঘন্টায় অনিরাপদ পরিবেশে কাজ করার কারনে অগণিত শ্রমিক প্রান দিচ্ছেন। সপ্তাহে সাত দিনই কাজ করতে হয় এই ঘটনা মোটেই অস্বাভাবিক নয়। বাংলাদেশে মাসিক বেতন এখন ও মাত্র ৩০০০/- টাকার ও কম। আন্যদিকে মার্কিন মুল্লুকে একজন শ্রমিক প্রতি ঘন্টায় আয় করেন ৫৭০/-টাকা। অনেক যায়গায় যেমন ওয়াশিংটন রাজ্যে প্রতি ঘন্টায় একজন শ্রমিক কমপক্ষে আয় করেন প্রায় ৮০০/- টাকা। অনেক ক্ষেত্রেই মার্কিন শ্রমিকগন এর চেয়ে বেশি আয় করে থাকেন। বাংলাদেশের একজন শ্রমিক একমাসে যা আয় করেন মার্কিন শ্রমিকরা প্রতিদিন তাঁর চেয়ে ও বেশি রোজগার করে থাকেন। শ্রমিকদের এই আয়ের অসমতা এবং ভবন ধ্বস, আগুনে পুড়ে মড়া আমাদের সামনে এক মহা সংকট এবং সমস্যার ইংগিত দেয়। সরকার গার্মেন্টস মালিক ও ভবন মালিককে গ্রেফতার করেছে। প্রকৌশলীকে গ্রেফতার করেছে। বাস্তব সত্য হল বাংলাদেশের এইসমস্যা গুলো কেবল মাত্র মালিক ও প্রকৌশলী দায়ী নয় বরং সত্যিকার ভাবে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা দরকার তা যেন কোনভাবেই প্রহসনে পরিণত না হয়্য,এবং প্রকৃত সমস্যার সমাধান হওয়া দরকার। তা অন্যান্য তৃতীয় বিশ্বের দেশের মত বাংলাদেশের অবস্থা আলাদা কোন বিষয় নয়। প্রথম বিশ্বের আরাম আয়শের জন্য অন্যান্য তৃতীয় বিশ্বের মত বাংলাদেশ ও কাজ করছে। বাংলাদেশে তৈরি ফ্যাশনের পোশাক পরিধান করে প্রথম বিশের মানুষ। ধসে যাওয়া ভবনে যে সকল পোশাক কার খানা ছিল তা হল, প্যন্টম আপেলস, প্যন্টম টেক, আর্থ টেক, নিউ ওয়েব বটমস। যেখান থেকে তৈরি হয় মিলিয়ন মিলিয়ন সর্টস, সার্টস, পেন্টস ইত্যাদি। ব্রিটেন প্রিমার্ক ও এই রানা প্লাজায়  কাপড় তৈরী করেছে। অয়াল মার্ট হল মাবেরিকার সবচেয়ে বড় ও বিশাল পোশাক আমদানি কারক প্রতিস্টান। এই ওয়াল মার্ট ও এখানে তাদের বিশাল বিনিয়োগ করেছে। তৃতীয় বিশ্বের নানাহ যায়গায় অত্যন্ত অমানবিক পরিবেশে শ্রমিক শ্রেনির মানুষেরা কাজ করে বেঁচে থাকার জন্য, বাংলাদেশের অবস্থা ও এর ব্যতিক্রম নয়। প্রথম বিশ্বের মানুষের ফ্যশন্যাবল জিবন ততদিন পর্যন্ত টিকে থাকবে যতদিন তারা তৃতীয় বিশ্বের মানুষের শ্রমশক্তিকে শোষণ করতে পারবে। আর তত দিন তৃতীয় বিশ্বের মানুষ ও নানা ভাবে কষ্ট করবে ।

অমানবিক কর্ম পরিবেশ তৃতীয় বিশ্বেও বাংলাদেশে সম ভাবে বিরাজ করছে। মিলিয়ন মিলিয়ন শ্রমশক্তিকে একই পরিবেশে কাজ করতে হচ্ছে। এই মহা সমস্যাটির সমাধান কেবল মাত্র মালিকদেরকে শাস্তি দিয়ে সম্ভব নয়, বরং সামগ্রিক উৎপাদন প্রক্রিয়াটিকে পরিবর্তন করা একান্ত প্রয়োজন। যেন এইরূপ ট্র্যাজেডির পুনরাবৃত্তি না ঘটে। এটার সমাধান হল, পুঁজিবাদের ও সাম্রাজ্যবাদের বিনাশ সাধন করে সমাজতন্ত্র কায়েম করা দরকার। সাধারন গ্রফতার আর আটক করে আমরা তাঁর সমাধান করতে পারব না। কেবল নষ্ট পুজিবাদিদেরকে শাস্তি দিলেই তাঁর সমাধান হয়ে যাবেনা। পুঁজিবাদের সংস্কার করে ও তাঁর সমাধান সম্ভব নয়। এরূপ দুর্ঘটনা, অমানবিক কর্ম পরিবেশ, দারিদ্রতা বহাল তবিয়তে থাকবে যত দিন পজিবাদ টিকে থাকবে, এবং বৈশ্বিক ব্যবধান বহাল থাকবে। আমাদের বিপ্লব প্রয়োজন। আমাদের লিডিং লাইট কমিউনিস্ট বিপ্লব দরকার, যা সকল প্রকার নিপিড়নের সৃংখল ভেংগে দিবে। কোন মানুষই মুক্ত হতে পারবে না যত সময় পর্যন্ত সকল মানুষ কে মুক্ত করা না যাবে। আমাদেরকে বিপ্লবী বিজ্ঞান সহ একটি সুশৃংখল বিপ্লবী বাহিনি গড়ে তুলা দরকার। লিডিং লাইট কমিউনিস্ট। নতুন শক্তি গড়ে তুলুন। সকল শক্তি দুনিয়ার সকল গরিব মানুষের জন্য। লিডিং লাইট কমিউনিস্ট সংগঠন গড়ে তুলুন। লিডিং লাইট অনুসরণ করুন। লিডিং লাইট হয়ে উঠুন। একেএম শিহাব।

Leave a Reply