লিডিং লাইট – জনতার প্রতি আমাদের সাধারন বক্তব্য

sunshine-500536_600x400 (2)

(llbangla.org)

লিডিং লাইটের পরিচিতি তুলে ধরবার সময় আমরা যে সকল বিষয় জনতার কাছে উপস্থাপন করি তার কিছু দিক এখানে তুলে ধরছি। আমরা অবশ্যই ভদ্রচিত ভাবে, বন্দ্বুসুলভ মানসিকতা নিয়ে এবং কোন ভাবে কু-তর্কের অবতারনা না করে আমাদের বক্তব্য পেশ করব। তাদেরকে আমাদের কাছে ভিড়াতে হবে। তাদের ও জনগণকে সেবা দেবার ঐতিয্য আছে। আমরা তাদের প্রতি সম্মান জানাব তবে কৌশলে সঠিক সত্য ও যুক্তিগুলো তুলে ধরতে পিছ পা হব না । একজন খাঁটি বন্দ্বু মানেই হলো সত্যনিস্ট বন্দ্বু । শিক্ষা প্রক্রিয়ায় কিছু সময় তো দিতেই হবে। তা রাতা রাতি হয় না। মানুষের সম্পর্ক ও বিশ্বাস কিছু সময় নিবেই। আমরা তার বীজ বপন করছি।

১. আমরা যদি বিজয়ী হতে চাই, তবে অবশ্যই নতুন পন্থায় কাজ করতে হবে।

এখন বিপ্লবের পরিবেশ খুব ভালো নয়। বিগত মহান বিপ্লবটি হয়েছিলো চীনে ১৯৪৯ সালে। পৃথিবী এখন অনেক বদলে গেছে। সেই চীন বিপ্লবের পর প্রায় অর্ধ শতাব্দির ও বেশী সময় কেটে গেছে। বর্তমান দুনিয়ার প্রেক্ষিতে বিপ্লবী আন্দোলন ভিন্নমাত্রায় চলে গেছে। শিতিলতা এসেছে বিপ্লবী কর্মী ও নেতাদের মাঝে। তাই নতুন ভাবে বিপ্লবী বিজ্ঞানের চর্চা করা এখন সময়ের দাবী। এটা অবশ্যই আমরা স্বীকার করব যে আমাদের আগে যে মহান বিপ্লবী যেমন মার্ক্স, লেনিন এবং মাওসেতুং তাদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ । তবে অতিথের সকল উদ্যোগ, চেস্টা অ সফলতা এখন আর কার্যকরী নয়। তা থেমে গেছে। বিফল হয়েছে অনেক সংগ্রামের গৌরব গাঁথা। পুজিবাদি চক্র প্রতিনিয়ত তাদের নিপিড়ক বিজ্ঞানকে উন্নত করেই চলেছে। আমাদেরকে ও তাই করতে হবে। আমারা আলোকিত সাম্যবাদের বিজ্ঞানকে শানিত করব।

২. বদলে গেছে আমাদের দুনিয়া, সমগ্র প্রথম বিশ্ব ও বুর্জোয়া জগত আমাদের শ্ত্রু।

প্রথম বিশ্ব এবং তাদের দালালেরা বুর্জোয়া শ্রেনী। বুর্জোয়া বিশ্ব সামগ্রীক ভাবে আমাদের শ্ত্রু। বুর্জোয়া বিশ্বকে অবশ্যই আমাদের বিরুধিতা করতে হবে। আমরা বুর্জোয়া সমাজের কোন একটি অংশের সাথে ও মৈত্রী স্থাপন করতে পারিনা । প্রথম বিশ্বে কিছু কিছু বঞ্চিত মানুষ আছেন যারা আমাদের বন্দ্বু হতে পারেন। কিন্তু তারা সংখ্যায় খুবই কম, এবং বিচ্ছিন্ন ভাবে অবস্থান করেন। বুর্জোয়া বিশ্বে এখন সত্যিকার অর্থে কোন সর্বহারা শ্রেনী নেই। বুর্জোয়া বিশ্বকে অবশ্যই বিলুপ্ত করতে হবে । এরাই এখন দুনিয়ায় অশান্তির প্রধান কারন।

৩. তৃতীয় বিশ্বই হলো সর্বহারা বিশ্ব, বিপ্লবের কেন্দ্রবন্দ্বু হবে ইহাই।

তৃতীয় বিশ্বের মানুষই হলো শোষিত ও নিপিড়িত, এরাই আমাদের বন্দ্বু, আমাদের সামাজিক ভিত্তি। শোষিত কৃষক, ভূমিহীন মজুর, আদিবাসী সম্প্রদায়, বস্তিবাসি মানুষ ও দরিদ্র শ্রমিক শ্রেনীর মহা সমূদ্রে আমরা সাতার কাটছি। এরা গরীব, এরা শোষিত, এদের কথা কেউ শোনেনা। এরাই আমাদের ভাই বোন, আমাদের মানুষ। সর্বহারা বিশ্ব অবশ্যই জেগে উঠবে এবং বুর্জোয়া ও তাদের বন্দ্বুদেরকে কাপিয়ে দিবে। সকল প্রতিক্রিয়াশীলতা, সকল শোষণ, সকল নিপিড়ন সাম্রাজ্যবাদ, পুঁজিবাদ, আদা সামন্তবাদ এবং পিতৃতান্ত্রিকতা ইত্যাদির বিনাশ ঘটিয়ে ছাড়বে। বিশ্ব গনযুদ্বের মাধ্যমে বুর্জোয়া দুনিয়াকে ধংস করে দিবে।

৪. তৃতীয় বিশ্ব, সর্বহারা বিশ্ব পরিবর্তন হচ্ছে, আমাদেরকে অবশ্যই বাস্তববাদি হতে হবে।

আমাদেরকে ভালো ভাবে বুঝতে হবে যে তৃতীয় বিশ্ব ও সর্বহারা বিশ্ব এবং তার সহযোগীরা পরিবর্তীত হচ্ছে। এখনকার বিশ্ব অবশ্যই মাওসেতুঙ্গের সময়ের মত নয়। তার পদ্বতি হুবহু এখন প্রয়োগ করা যাবে না । এখনই পৃথিবীতে গ্রামের চেয়ে বেশী মানুষ শহরে বসবাস করছেন- আগের এরূপ আর কোন

কালেই ছিলো না । এই শহুরে লোকদের মাঝে একটি নতুন ধরনের সর্বহারা শ্রেনী গড়ে উঠেছে। এরা প্রায় সকল বশ্বি বস্তিতেই আছেন। তৃতীয় বিশ্বের বস্তি সমূহই হলো তাদের প্রধান ঠিকানা। বিশ্ব গনযুদ্ব চালাতে হলে এদেরকে রাখতে হবে প্রধান বিবেচনায়। এরা হলো এখন উদিয়মান বিপ্লবী শ্রেনী। পল্লী এলাকার গনযুদ্বের মত এই শহুরে যুদ্ব হবে না। আমরা অর্থনৈতিক বাস্তবতার আলোকে আজকের দুনিয়ার সাথে সংগতি রেখে আমাদের রনকৌশল তৈরী করতে হবে। আমরা নয়া গণতান্ত্রিক স্তর থেকে সমাজতান্ত্রিক স্তরে উপনিত হবার কৌশল গ্রহন করতে চাই। এর অর্থ হলো নতুন এলাকায় নতুন ক্ষমতা কাঠামো তৈরী করে লাল অঞ্চল গড়ার কাজ করব। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ও পল্লী অঞ্চল বাদ যাবে না তাদের ও একটি গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা থাকবে।

৫. আমরা একটি বিশ্ব গনযুদ্বের কথা বলছি, ইহা দুনিয়া জোড়ে পরিচালিত হবে, এবং অনুসরন করা হবে নতুন ও পুরাতন পদ্বতী। এই যুদ্ব পরিচালিত হবে বুর্জোয়া বিশ্বের বিরুদ্বে।

বিশ্ব গনযুদ্ব হলো একটি সামগ্রীক যুদ্ব। ইহা হলো গনযুদ্ব এতে কোন রাষ্ট্রীয় সীমানা থাকবে না। ইহা পরিচালিত হবে নানা দেশে, নানা ভাষার মানুষের অংশ গ্রহনে, সকলের হাতে থাকবে মাত্র একটি পতাকা। আমরা এই যুদ্ব গতানুগতিক ধারনায় পরিচালনা করব না। কেবল একটি পন্থায় এটা এগোবে না। আমরা আমাদের উদ্বভাবিত সকল যন্ত্র ও পদ্বতী শ্ত্রুদের বিরুদ্বে ব্যবহার করব। আমরা দির্ঘমেয়াদি, রক্ষণাত্মক ও বুর্জোয়া বিশ্বের শক্তি ক্ষয় করার কৌশল গ্রহন করব। আমরা জনসমাবেশ ঘটাব ব্যাপক হারে। আমাদের কাজ হবে মধ্য মেয়াদি, দির্ঘ মেয়াদি ও স্বল্পমেয়াদী এবং অন্তপ্রজন্ম ভিত্তিক । যাতে থাকবে বুর্জোয়া বিশ্বের ও সাম্রাজ্যবাদের বিনাশের মূলমন্ত্র। আমরা আমাদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়ন ঘটাব।

৬. আমরা নতুন বিশ্ববাদের আহবান জানাই; আমরা শ্ত্রুদের শক্তি বাড়ে এমন কিছু করতে সাহায্য করব না ।

সাম্রাজ্যবাদিদের মাঝে যে দ্বন্দ্ব চলছে তা আমাদের গণনায় বা হিসাবে ধরা ঠিক নয়। তাদের সকল কর্মই একটি বিশ্ব সাম্রজ্যবাদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তারা নিজেদের মধ্যে বুঝাপড়া করে এককভাবে বুর্জোয়া প্রাধান্যের জন্য কাজ করছে । কামড়া কামড়ি করছে পরস্পরের সাথে। তাদের লক্ষ্য একটি ই তা হলো বুর্জোয়া প্রধান্য বিস্তার। এখন অবস্থাটা এমন দাঁড়িয়েছে যে, যেমন লিন পিয়াং বলেছিলেন সামাজিক সাম্রাজ্যবাদ ও পুজিবাদি সাম্রাজ্যবাদ যৌথভাবে নিজেদের স্বার্থেই কাজ করছে। তাদের উদ্দেশ্য একটি ই তাহলো বিশ্ব পল্লীর সকল সম্পদ শোষণ করে নিজেদের পকেটে ভরা। আসল কথা হলো বিশ্ব পুঁজিবাদ এখন বিশ্বায়নের রূপ নিয়েছে। তাই তার মৃত্যু ঘণ্টা বাজানোর জন্য আমাদেরকে কাজ করতেই হবে।

৭. গন যুদ্বারা জেগে উঠো, বিশ্ব ভিত্তিক ভাবুন, বিশ্ব ব্যাপী কাজ করুন ।

সকল জাতির, বর্নের, ও ভাষাবাসি গনযুদ্বাদেরকে স্বাগত জানাই আমাদের সাথে মিলিত হয়ে লড়াই সংগ্রামে যুক্তহবার জন্য। আমরা বিশ্বের সকল গন যুদ্বাদের আহবান জানাই তারা যেন তাদের সামর্থ অনুসারে অবদান রাখেন। আমাদের সকলের উচিৎ হলো আমাদের সকল শক্তি সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্বে প্রয়োগ করা। বুর্জোয়া বিশ্বের দুর্বল জায়গায় তাদেরকে আঘাত হানা। যেখানে বিজয় সম্ভব নয় সেখানে শক্তি খরচ করে কোন লাভ নেই। আপনার শক্তি সেখানেই খরচ করুন যেখানে খরচ করলে বিজয়ের সম্ভাবনা আছে।

৮. বার্তা ছড়িয়ে দিন ।

আমাদেরকে আদর্শের প্রশ্নে উদ্ভানী মানসিকতার হতে হবে, তা চর্চার ক্ষেত্রে মনোযোগী হতে হবে। বর্তমানে বিপ্লবের ক্ষেত্রে যে শিতিলতা চলছে তা আমাদেরকে পর্যালোচনা করে দেখতে হবে। বিপ্লবী বিজ্ঞানের বিকাশ ঘটাতে হবে। আমাদেরকে বিজয়ী হতে হবে নইলে বিনাশ হয়ে যাব বিপ্লবী বিজ্ঞানের গোড়ার কথা হলো এটাই যে, ‘হয় কর নয় মর’। আমরা মার্ক্স, লেনিন ও মাওয়ের অনুসরন করব । তবে

লিডিং লাইট এখন আরো অগ্রসর বিজ্ঞানের বার্তা বহন করছে। এই নতুন বিজ্ঞানের দিক্ষায় দিক্ষিত করার জন্য ব্যাপক হারে জনগণের বন্দ্বুদেরকে সম্পৃক্ত করতে কাজ করতে হবে।

৯. আমরা আলোকিত সাম্যবাদের জন্য লড়াই করছি।

আমরা লড়াই করছি সকল নিপিড়ন ও শোষণের অবসান ঘটাতে। আমরা সত্যিকার স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছি। আমরা আগের সমাজতান্ত্রিক নমুনার সমাজতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি না। আমাদেরকে নতুন পথে এগোতে হবে। আমরা বিপ্লব করব, সমাজতন্ত্র আনব, তবে তা হবে সম্পুর্ণ একটি নতুন আঙ্গিকে। নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। ঠেকসই পদ্বতি অনুসরন করা হবে। নতুন বিপ্লবী বিজ্ঞান অনুসারে কাজ করা হবে। আলোকিত সাম্যবাদের পথ ধরে বাস্তবতার আলোকে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হবে। মাওবাদ বা বলশেভিকবাদের মত আমাদেরকে দেখা গেলে ও আসলে আমরা তাদের চেয়ে ও অগ্রসর স্তরে অবস্থান করছি ।

১০. আমাদের সূর্য্য উঠছে। আমাদের দিন আসছে।

ইহা হলো সাম্যবাদি বিপ্লবের নতুন পর্বের সূচনামাত্র। আমাদের মাঝে কোন দ্বিধা নেই। আমরা সাহসের চর্চা করি। সাহসের সাথেই আগামী দিনে লড়াই সংগ্রাম করে যাব। আমরা সামগ্রীক ভাবে মানব মুক্তির জন্য কাজ করছি। আলোকিত সাম্যবাদ আমাদের মঞ্জিলে মকসুদ। কোন প্রকার আপোষ করার সুযোগ নেই। শীতিলতার প্রশ্নই নেই। সাহস, অনুগত্য, শৃংখলা ও ত্যাগ আমাদের পাথেয়। আমাদের মাঝে সুসম্পর্ক স্থাপন করব। হাতে হাত রেখে কাধে কাধ মিলিয়ে কাজ করে যাব। আমরা একে অন্যকে সহযোগীতা করব। আমাদের মন মানসিকতায় বিপ্লবের স্পন্দন। আমরা সকল শোষণের অবসান করতে প্রাণপণ সংগ্রাম করে যাব। আমাদের এই প্রতিজ্ঞা আমারা বুকে ধারন করব । আমরা হলা ইতিহাসের স্রষ্টা। আমরা জনতার সেবা করি। এটাকে আমরা মহান কর্ম মনে করি। আলোকিত সাম্যবাদকে অনুসরন করুন । সাম্যবাদি হয়ে উঠোন ! আমাদের দিন আসছে। সূর্য্য উঠছে!!

Leave a Reply