প্রথম বিশ্বে কি কোন সামাজিক ভিত্তি আছে, যারা সেখানে বিপ্লব করতে পারেন ?

immigrants_mexico

(llbangla.org)

“সুপ্রীয় লিডিং লাইট,

প্রথম বিশ্বে কি কোন সামাজিক ভিত্তি আছে, যারা সেখানে বিপ্লব করতে পারেন ? আমি বুঝতে পারছি যে প্রথম বিশ্বের শ্রমিক শ্রেনী কোন বিপ্লবী চেতনাই ধারন করেন না। কতিপয় তৈরী পোষাক বিক্রেতা দোকানের কর্মচারী, তথাকতি “বেআইনি মেক্সিকোর শ্রমিক, এবং কিছু কারান্দ্বী মানুষেরা কি প্রথম বিশ্বে শোষিত হচ্ছেন? এই সামাজিক অংশ গুলো বা অন্যান্য দল উপদল আছেন কি যারা প্রলেটারিয়েট তৃতীয় বিশ্বের সহযোগী হতে পারেন ? আপনার সময়ে জন্য ধন্যবাদ”।

লিডিং লাইটের জবাবঃ

আপনাকে ধন্যবাদ আমাদেরকে লিখার জন্য।

১৯৬০ থেকে ১৯৭০ সালে আমরা প্রথম বিশ্বে দেখেছি দুনিয়া জুড়ে জাতীয় মুক্তি আন্দোলন ও “প্রলেতারিয়েতদের পক্ষে” দাঁড়াবার ক্ষেত্রে প্রথম বিশ্বের শ্রমিক শ্রেনী অত্যন্ত প্রতিক্রিয়াশীল ভূমিকা পালন করেছেন। তবে কতিপয় বিদ্রোহি তরুন ও কিছু লুম্পেন “প্রলেতারিয়েতের পক্ষে” দাড়িয়েছিলেন। সেটা প্রকাশ্য ও গোপন উভয় সংগঠনের ক্ষেত্রেই আমরা লক্ষ্য করেছি, এমন কি ব্ল্যাক প্যান্থার সংগঠন ও তাই করেছে। পরবর্তীতে প্রথম বিশ্বের নারীরা “প্রলেতারিয়েতের পক্ষে” দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন। সেই “প্রলেতারিয়েতের পক্ষে” দাঁড়ানো তত্ত্ব ও সত্যিকার বস্তুতান্ত্রিক ছিলোনা । বরং তাঁরা অনেক ক্ষেত্রে প্রগতিবাদ ও উচ্চাবিলাশী চিন্তার চর্চা করেছেন।

আসল কথা হলো এখন প্রথম বিশ্বে কোন প্রকার বিপ্লবের সামাজিক ভিত্তি নেই। সেখানে কোন বিপ্লবী শ্রেনী বা আর্থ-সামাজিক সম্প্রদায় নেই যারা বিপ্লবের পক্ষে কাজ করতে পারেন। আন্তর্জাতিক ভাবে সামাজিক বিশ্লেষণ করতে গিয়ে লিডিং লাইটই প্রথম এই বিষয়ে সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করে। আর সেই জন্যই লিডিং লাইটকে বিপ্লবী বিজ্ঞানের চতুর্থ স্তর বা আধুনিক স্তর হিসাবে বিবেচনা করা হয়। তবে প্রথম বিশ্বের কিছু নিপিড়িত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গ্রুপ বিদ্যমান আছেন। সেই গ্রুপ গুলো কোন স্থানে বিপ্লব করার মত শক্তি বা সামর্থ কোন ভাবে অর্জন করতে সক্ষম নন। প্রথম বিশ্বে কতিপয় তৈরী পোষাকের দোকান কর্মচারী, কিছু অভিবাসী মানুষ, এবং কিছু কারাবন্দ্বী মানুষ আছেন। এই জনাংশটি সত্যি মারাত্ম ভাবে নিপীড়িত। তবে, সেই সংখ্যার মানুষ খুবই অল্প। তাঁরা খুবই বিচ্ছিন্ন, খুবই বিক্ষিপ্ত, এবং সর্বোপরি বিপ্লবী চেতনা থেকে অনেক দূরে অবস্থান করেন। তাদেরকে বিপ্লবী করে গড়ে তুলা ও নানা কারনে সম্ভব নয়। তাদের নিকট বরং অধিক ফল্প্রদ বিষয় হলো প্রথম বিশ্বের শ্রমিক বিশেষ করে মার্কিন শ্রমিকদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা । তবে যদি তাঁরা লুম্পেন, বুদ্বিজীবী, কর্মজীবী এবং তরুনদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুললে হয়ত আরো ভালো হত। তাঁর পর বলা যায় না যে জনসংখ্যার দিক দিয়ে তাঁরা কোন শক্তি হিসাবে নিজেদেরকে প্রতিস্টিত করতে পারতেন। বা তাঁরা বিপ্লবের জন্য কোন সামাজিক ভিত্তি তৈরি করতে পারতেন। প্রথম বিশ্বের বিপ্লবীদের জন্য সেখানকার পরিস্থিতি মোটেই অনুকূল নয়। কেননা সেখানে তাঁরা মোটেই সংখ্যা গরিস্ট হতে পারেন না । বরং তাদের বিরোধী শক্তিই সংখ্যা গরিস্ট।

প্রথম বিশ্বের বিপ্লবীরা তৃতীয় বিশ্বের বিপ্লবীদের চেয়ে সম্পূর্ন ভিন্ন পরিবেশে অবস্থান করেন। প্রথম বিশ্বের বিপ্লবীরা কোন ভাবেই আগের মত তাদের সংগঠন, রণনীতি ও রনকৌশল প্রয়োগ করতে পারবেন না । সেই ক্ষেত্রে মাওসেতুং বলেছেন, “ওয়াং মিং” ভূল। সেই কাজ করতে গিয়ে তাঁরা জেকোবিন কর্মকৌশল প্রণয়ন করেছিলেন। যা কোন ভাবেই ফলপ্রদ ছিলো না । পুরাতন নানা সমস্যাই তাদেরকে আক্রান্ত করে। কেবল সৃজনশীল ও জীবন্ত বিপ্লবী বিজ্ঞান ই পারে চলমান পরিস্থিতিকে মোকাবেলা করতে। সেই চিন্তাধারা আমাদের আন্দোলনকে দিক নির্দেশনা দান করবেঃ ১. বিশ্ব শ্রেনী বিশ্লেষণ ২. বিশ্ব জন সংগ্রামের পথ ৩. সাংস্কৃতিক বিপ্লব ৪. তৃতীয় বিশ্বের প্রলেতারিয়েত শ্রেনীর প্রাধান্য কায়েম করা প্রথম বিশ্বের উপর। লিডিং লাইট সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছে।

Leave a Reply