উপদলবাদ কি ?

question-mark-dice

(llbangla.org)

এমন কিছু রাজনৈতিক ব্যাক্তি আছেন যারা উপদলবাদের চরম বিরোধিতা করেন। সেই উদারপন্থী মানুষ গুলো যে কোন কিছুর বিনিময়ে ঐক্য চান। তাঁরা মনে করেন কেউ কেবল লাল পতাকা উড়ালেই বুঝি দরিদ্র নিপিড়িত মানুষের বন্দ্বু হয়ে যান। উদারতাবাদিরা বিপ্লবী শক্তিকে তাদের বিপ্লবের পথ থেকে সরিয়ে এনে সংস্কারবাদি চক্রের সাথে এক টেবিলে বসিয়ে দিতে চান। বুর্জোয়াদের সাথে একতা গড়ে তোলতে উৎসাহিত করেন ।

উদারপন্থীরা যেভাবে উপদলবাদকে দেখেন মার্কসবাদিরা কিন্তু সেভাবে দেখেন না । মার্কস নিজে নানা কিছিমের সমাজতন্ত্রীদের অবিরত ভাবে সমালোচনা করে গেছেন। উদাহরন হিসাবে আমরা দেখি যে তিনি কমিউনিস্ট মেনুফেস্টোতে তাঁর সময়কার ভূয়া সমাজতন্ত্রীদের কথা উল্লেখ করেছেন। মার্কসের মত লেনিন ও বুদ্বিমত্তা দিয়ে পার্টির সংখ্যা গরিস্ট সদস্য যারা সামাজিক সাম্রাজ্যবাদের প্রবনতায় আকৃষ্ট হন তাদেরকে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিকের সময় তিব্র সমালোচনা করেন। জার সরকারের আমলে চূড়ান্ত ভাবে পার্টি বলশেভিক ও মেনশেভিকে বিভক্ত হয়ে পড়ে। সেই সময়ে আস্ত দুনিয়ার সকল মার্ক্সবাদি দলের বিরুদ্বে লেনিনের পার্টি বলশেভিক অবস্থান নেয়। একেই পন্থায় সামাজিক সাম্রাজ্যবাদী ট্রটস্কিকে স্ট্যালিন দল থেকে সাঙ্গ পাংগ সহ বেড় করে দেন। আমরা মাওসেতুংয়ের বেলায় ও একেই নিয়ম দেখতে পাই। তিনি সংখ্যা গরিস্ট কমিউনিস্ট দাবীদারদেরকে ত্যাগ করেন। সোভিয়েত সাম্রাজ্যবাদের সাথে সম্পর্ক ত্যাগ করেন। আজ আমদেরকে যারা উপদলীয় হিসাবে সমালোচনা করেন তাঁরা ও সেই উদার পন্থীদের মতই। যারা এক কালে সত্যিকার সর্বহারা নেতাদের বিরূপ সমালোচনা করেছিলেন। একজন মার্ক্সবাদি যেকোন মূল্যে ঐক্য চাইতে পারেন না । বরং একজন মার্ক্সবাদি তাদের রাজনীতিকে কম্যান্ডে নিয়ে আসেন। এর অর্থ হলো মার্ক্সবাদি ঐক্য হলো রাজনৈতিক ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে, তা কোন ভাবেই ভুয়া আবেগ বা সাম্প্রদায়িক চেতনার উপর নির্ভর করে গড়ে উঠতে পারে না ।

“উপদলবাদ”, শব্দটি মার্ক্সবাদিগন ব্যবহার করেন কেবল যখন কোন পার্টিতে দরকার হয় সর্বহারা ও নিপিড়িত মানুষের পক্ষে দাঁড়াবার। তাদের স্বার্থ রক্ষা করবার । উপদলবাদকে মার্ক্সবাদিরা বিশেষ অর্থে ব্যবহার করে থাকেন। মাওসেতুং বলেছিলেন উপদলবাদ এবং সুবিধাবাদ একটি মুদ্রার এপিট উপিট মাত্র। এর কারন হলো “উপদলবাদ” বা “সুবিধাবাদ” সর্বহারা শ্রেনীর স্বার্থকে উর্ধে তুলে ধরে। আলোকিত সাম্যবাদি পার্টি ও অবশ্যই উপদলবাদি । যদি আমরা সর্বহারাদের স্বার্থে প্রাগ্রসর ভাবে নিজেদেরকে প্রতিস্টিত করতে চাই, তবে অবশ্যই অন্যদের থেকে যারা ভুয়া সাম্যবাদের কথা বলেন তাদেরকে ত্যাগ করে আলাদা অবস্থানে দাড় করাতেই হবে। আমরা আমাদের আন্দোলনকে জনতার স্বার্থে বিজয়ী করতে চাই। আর তা হবে রাজনৈতিক লাইনের বিজয়। প্রকৃত বিচারে আমাদের অবস্থান উপদলীয় নয়। আমরাই বেশীর ভাগ মানুষের পক্ষের শক্তি। আমরা প্রথম বিশ্ববাদি ও সংস্কারপন্থীদের কাছে খুবই অজনপ্রীয়। সত্যিকার অর্থে যদি সর্বহারাদেরকে বিজয়ী করতে হয় তবে তাদেরকে নেতৃত্বের আসনে বসাতে হবে। তাদের সংগঠন ও সংস্কারপন্থীদের সংগঠনের মাঝে পার্থক্য রেখা টানতে হবেই।

প্রথম বিশ্ববাদিরা ও সংস্কারবাদিরা অন্যান্য বিষয়ের মত আদর্শিক ভাবে ও পিছিয়ে আছেন। প্রথম বিশ্ববাদিরা সাদাকে সাদা বলেন না, কালোকে কালো বলেন না । তাঁরা প্রথম বিশ্বের শোষক শ্রেনীকে ও “সর্বহারা” বলে থাকেন। বিপ্লবী বলে বিবেচনা করেন। তাঁরা সাম্রাজ্যবাদের এদেশীয় দালালদের সাথে মিশে গিয়ে বিপ্লব করার স্বপ্ন দেখেন। বিপ্লবের জন্য কোন প্রকার ঝুকি নিতে রাজি নন। অথচ মাও বলেছিলেন, “ বিপ্লব কোন ডিনার পার্টি নয়”। তারাই কিন্তু বিপ্লবীদেরকে উপদলবাদি বলে থাকেন। বিপ্লবীরা যখন সুবিধাপন্থী দল ও ব্যাক্তিদের সমালোচনা করেন তখনই তাঁরা উপদলবাদি বলে গালী দিয়ে নিজেদের নোংরা ভাষাগুলো প্রকাশ করেন। এটা আসলে সংস্কারপন্থী ও উদারপন্থীদের কাজ। ওরা নিজেদেরকে যতই মার্ক্সবাদি বলে দাবী করুন না কেন। উদের সাথে বিপ্লবী আলোকিত সাম্যবাদিদের ঐক্য হতে পারে না ।

Leave a Reply