অ্যামেরিকায় ক্ষুধার্থ মানুষ

propagandaঅ্যামেরিকায় ক্ষুধার্থ মানুষ

(llbangla.org)

আমারিকা ভিত্তিক সংস্থা ফিডিং আমেরিকা দাবী করেছে মার্কিন মুলুকে প্রতি ৮ জনের মধ্যে ১ জন “ খাদ্যাভাবে ভোগছেন”। প্রথম বিশ্ববাদি এই সংস্থাটি এই মর্মে জানিয়েছে, “ আপনি হয়ত জানেন কে কে ক্ষুধার্থ কিন্তু তা আপনি গুরুত্ব দিচ্ছেন না”। এ কথা শুনে হয়ত আপনারা সন্দেহ করবেনঃ প্রথম বিশ্বে কেমন করে মানুষ না খেয়ে থাকেন বা এটা কি করে সম্ভব হচ্ছে ? পক্ষান্তরে, তৃতীয় বিশ্ব ক্ষুধার্থ মানু্ষকে সহজেই চিহ্নিত করা যায়ঃ দেখাতে কংকালসার, পেট ফোলা এবং সঠিক ভাবে দেহের বৃদ্বি ঘটে না ইত্যাদি। তৃতীয় বিশ্বে ক্ষুধা একটি সাধারন ঘটনা।

ক্ষুধা, বিষয়টিকে ও প্রথম বিশ্বের সমর্থকগন ভিন্ন ভাবে সংজ্ঞায়ন করে থাকেন। এক জন আমেরিকান “ক্ষুধার্থ” আছেন, এই কথাটিকে মার্কিন দেশের কৃষি বিভাগ এইভাবে ব্যাখ্যা করে থাকে,  যদি তারা ক্ষুধা অনুভব করেন তবে “তারা খায় না” বা “কম করে খান বা একেবারেই খাবার গ্রহন করেন না”। একটু ভিন্নভাবে বললে, প্রতি আট জনের মধ্যে একজন প্রতি মাসে পেটের সমস্যার কথা বলতে আসেন – বা তাদের পেটেবদ হজমের কথা বলেন, তবে তা কিন্তু না খাবার জন্য নয় বরং অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার জন্যই হয়ে থাকে। এটাই এখন প্রথম বিশ্বের “বিজ্ঞান” হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আমেরিকান লোকেরা এতই ক্ষুধার্থ যে তাদের মধ্যে এখন প্রায় ৬৬% মানুষ  অতি ওজন বা অতি মোটা হয়ে গেছেন । আমেরিকার জনগণের অর্ধেকের চেয়ে ও বেশী মানুষের এখনই চিকিৎসা দরকার “ক্ষুধার জন্য”। আসল কথা হলো তা কিন্তু অপুস্টির জন্য নয়, তা হলো হার্টের সমস্যার জন্য, ডায়াবেটিসের জন্য, স্ট্রোকের জন্য আর এসকলের জন্য দায়ী হলো  তাদের দেহের অতি ওজন। বহু আমেরিকান কোন কাজই করেন না তারা সারা দিন আলুর চিপস ও টেলিভিশন নিয়েই সময় কাটান। তাই আমরা যখন দেখি একজন মার্কিন শিশুর পেট স্বাভাবিকের চেয়ে বড় যা তার বুকের চাতিকে ও ডেকে রেখেছে। তা কি আমরা তৃতীয় বিশ্বের শিশুদের মাঝে দেখতে পাই ? প্রথম বিশ্ববাদিদের মাঝে ক্ষুধা নিয়ে মানসিক সমস্যা রয়েছেঃ “ আমি যা যা চাই তা আজ খেতে পাড়লাম না”! “আমি গত সপ্তাহে একটি লান্স করতে পারিনাই”! “ এই মাত্র খেলাম কিন্তু ক্ষুধা রয়েই  গেল”!  এই রকমেই নাচে, গায় আর ফাজলামি করে প্রথম বিশ্ববাদিরা। পক্ষান্তরে, ক্ষুধা তৃতীয় বিশ্বে একটি এমন বিষয় যা সেখানকার মানুষের জীবন মৃত্যুর সাথে জড়িত।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রতিদিনের জন্য একজন মানুষের জন্য ২৬০০ ক্যালরি দরকার বলে নির্ধারন করে দিয়েছে। অথচ তৃতীয় বিশ্বের মানুষেরা সেই হিসাবে গড়ে ২১০০ ক্যালোরির বেশী পায় না; প্রথম বিশ্বের মানুষেরা প্রতিদিন প্রায় ৩৭০০ ক্যালোরী গ্রহন করে থাকে। এই অবস্থায় দুনিয়ার বড় বড় গবেষণা প্রতিস্টান ঘোষণা করেছে প্রথম বিশ্বে কোন প্রকার ক্ষুধা নেই। পক্ষান্তরে, তৃতীয় বিশ্বের মানুষের মাঝে অভাব, দারিদ্র ও ক্ষুধা অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িয়ে আছে।

সম্পদ বন্ঠন ব্যবস্থার বিচারে এখন ও দুনিয়ার প্রধান দ্বন্দ্ব হলো প্রথম বিশ্ব ও তৃতীয় বিশ্ব। ক্ষুধার ইস্যুটি ও তার সাথে সম্পর্কিত। পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ এখন দুনিয়ার চালিকা শক্তি হিসাবে চলছে। ফলে দেশে দেশে অসাম্য ব্যবধান বেড়েই চলছে। প্রচলিত বিশ্ব ব্যবস্থায় কিছু ধনী দেশের মানুষ অন্য দরিদ্র দেশের মানুষের শ্রম ঘামের শোষণের উপর ভিত্তি করে আরম আয়েসে জীবন যাপন করছে। এখন দুনিয়ার বেশীর ভাগ মানুষের ক্ষুধা নিবারেন জন্য তৃতীয় বিশ্বের উচিৎ উঠে দাঁড়ানো। প্রথম বিশ্বের খাবারে টেবিলে ও হাত দেয়া উচিৎ। সকল কিছুই উলট পালট করে দিতে হবে।  নইলে দরিদ্র দেশের ক্ষুধা দূর হবে না ।

তথ্য সূত্রঃ

http://www.feedingamerica.org/

http://www.ers.usda.gov/briefing/foodsecurity/labels.htm

http://www.cdc.gov/nchs/fastats/overwt.htm

http://www.webmd.com/cholesterol-management/obesity-health-risks

http://wilderdom.com/games/descriptions/WorldMeal.html

http://www.newint.org/issue225/facts.htm

Leave a Reply